Raksha bandhan 2018: দুর্গাপুজো হতে এখনও প্রায় দেড় মাস বাকি। সে প্রতীক্ষার অবসান হলেই হরেকরকম থিমে সেজে উঠবে তিলোত্তমা। কিন্তু সে অপেক্ষার আগেই এবারের রাখীপূর্ণিমায় যেন এ শহরে থিমের বোধন হয়ে গেল। হ্যাঁ, থিমই বটে। পেনসিলের ছিলকা, প্লাস্টিকের বোতল কিংবা ক্যালেন্ডারের রঙিন অংশ আবার চিপসের রঙিন প্যাকেট, এমন ‘বর্জ্য’ জিনিস দিয়ে কারুকাজে বানানো রংবেরঙের রাখীই এবার আপনার হাতে শোভা পাবে। ‘নাথিং ইজ ওয়েস্টজ’, একথাকেই বেদবাক্য মেনে এবার রাখীপূর্ণিমায় নজির গড়েছেন নূর হোসেন মণ্ডল। আর এই গোটা কাণ্ড ঘটিয়েছে ‘অর্গোভব হিউম্যানিটি ডেভেলপমেন্ট’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
অচল জিনিসকে শুধু কাজে লাগানোই নয়, এহেন শিল্পকলার মাধ্যমে সচেতনতার বার্তাও নূরের রাখীর মাধ্যমে তুলে ধরতে চাইছে মধ্য কলকাতার ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। যত্রতত্র প্লাস্টিকের দাপাদাপি, রাস্তাঘাটে অব্যবহৃত জিনিসের স্তূপে রোজ শহরে দূষণের মাত্রা যে কী হারে বাড়ছে তার কোনও টেরই পাচ্ছি না আমরা। রাখী পরিয়ে স্নেহের উৎসব উদযাপনের মাধ্যমে তাই শহরে পরিবেশ দূষণ নিয়ে সচেতনতামূলক বার্তা দিতেই নূরের শিল্পকলায় জোর দিয়েছে ওই সংস্থা। এ প্রসঙ্গে সংস্থার সেক্রেটারি ভারতী সেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন,‘‘যে জিনিসগুলো আমরা ফেলে দিই, যেগুলো কাজে লাগে না। ফলে এটা একটা নতুন ব্যাপার। তাছাড়া এর মাধ্যমে আমরা পরিবেশ দূষণ নিয়েও সকলকে সচেতন করতে পারব।’’ কত রাখীর আয়োজন করা হচ্ছে? ভারতী দেবী জানালেন প্রায় ২০০ মতো রাখী রাখা থাকবে।

হঠাৎ এমন ভাবনা কেন? জবাবে শিল্পী নূর হোসেন মণ্ডল বললেন, ‘‘অনেক দিন থেকেই এসব নিয়ে কাজ করছি। সবাইকে একটা কথাই বলি যে, নাথিং ইজ ওয়েস্টেজ। আমরা সারাবছর ধরেই বিভিন্ন এলাকা থেকে ফেলে দেওয়া সামগ্রী সংগ্রহ করে সেটাকে সুন্দর করে পরিবেশন করি। পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে সচেতন করতেই আমাদের এই প্রয়াস।’’
কলকাতায় থিমের রাখী! ফেলে দেওয়া সামগ্রী দিয়ে রাখী বানাচ্ছে খুদেরা। #RakshaBandhan2018 #ieBangla pic.twitter.com/KItUyaSp3p
— IE Bangla (@ieBangla) August 24, 2018
তবে শুধু নূর একা নন, শিল্পীর পাশে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছে একদল খুদে। ঘরের মেঝেয় গোল হয়ে বসে তাদের স্যারের কাছে হাতে ধরে শিখছে রাখী বানানোর কাজ। ভুল-ত্রুটি হলে সঙ্গে সঙ্গে শুধরেও দিচ্ছেন শিক্ষক। আর এভাবেই সাজছে রাখীপূর্ণিমার এই অনন্য রাখী। এ প্রসঙ্গে নূর বললেন,‘‘বাচ্চারাও এসব ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে রাখী বানাচ্ছে। ওদের দেখিয়ে দিচ্ছি কেমন করে বানাতে হয়।’’
আরও পড়ুন, প্রাণের জন্য রাখী: কেরালার পাশে কলকাতার অপর খুদেরা
ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে বানানো রাখীর কি বাণিজ্যিকীকরণ হবে? উত্তরে নূর জানালেন,‘‘যদি কখনও সেরকম সুযোগ পাই, বা কেউ এগিয়ে আসেন, তবে আগামী দিনে এমন রাখী বাজারে বিক্রি করা সম্ভব হবে।’’
থিমের রাখী কি আপনার হাতেও বাঁধতে চান? তাহলে রবিবার সক্কাল সক্কাল সেজেগুজে চলে আসুন ক্রিক রো-তে লেবুতলা এলাকায়। সেখানেই এবার প্রথমবার রাখীবন্ধন উৎসবের আয়োজন করেছে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।