রাজ্যে কি বিজেপি-র রথযাত্রা আদৌ হবে? বুধবারও এই প্রশ্নের নিস্পত্তি হল না কলকাতা হাইকোর্টে। জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার রথযাত্রা নিয়ে রায় দেবে হাইকোর্ট। আগামিকাল বিজেপি ও রাজ্য সরকারের বক্তব্য শোনার পর এই মামলায় রায় দেবেন বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী। রায় ঘোষণার আগে বিজেপি বলার সময় পাবে ১৫ মিনিট এবং রাজ্যের বক্তব্যের জন্য নির্ধারিত হয়েছে ১০ মিনিট। বুধবার দুপুর ১২ টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত এই মামলার সওয়াল চলেছে বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চে। এদিন লালবাজারে রাজ্য-বিজেপি বৈঠকের সিডিবন্দি ভিডিও আদালতে জমা দিয়েছে সরকার।
বুধবার আদালতে সওয়াল করতে গিয়ে রাজ্যর অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত বলেন, প্রশাসনিক কাজকে চ্যালেঞ্জ করা যায় না। সংবিধানের ২২৬ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রশাসনিক নির্দেশকে জুডিশিয়াল রিভিউ করা যায় না। তিনি জানান, রথের বিষয়ে সব জেলার জেলাশাসকদের কাছ থেকে রিপোর্ট এসেছে। পরিস্থিতি খুবই গুরুতর।
আরও পড়ুন- ছাত্র সংগঠনকে কলেজ-হাজিরায় নাক না গলানোর নির্দেশ তৃণমূলের
এজির বক্তব্য শুনে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, পরিস্থিতি যদি গুরুতরও থাকে, সে ক্ষেত্রে আপনাদের তরফ থেকে কী ভূমিকা নেওয়া হয়েছে। রাজ্যর আইনজীবীর বক্তব্য, অনেকগুলি জেলাতে রথযাত্রা হবে। সাম্প্রদায়িকভাবে স্পর্শকাতর এলাকা দিয়েও যাবে রথ। সেই সমস্ত এলাকায় ইতিমধ্যেই উত্তেজনা তৈরি হয়ে গিয়েছে। ফলে প্রতি ব্লকে বেশি সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা সম্ভব নয়। এজি আরও বলেন, এটাও স্পষ্ট নয় যে এই যাত্রা কোথায় রাজনৈতিক হবে আর কোথায় সাম্প্রদায়িক রূপ ধারণ করবে। এটা যে ধর্মীয় এবং সাম্প্রদায়িক যাত্রা, সে বিষয়ে রাজ্যের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
এদিন রথযাত্রা রুখতে নানা তথ্য তুলে ধরে জোরালো সওয়াল করছেন কিশোর দত্ত। তিনি আদালতকে জানান, রথযাত্রা উপলক্ষে লিফলেট বিলি করা হয়েছে। ওই লিফলেটে রাজ্যে ঘটা বেশ কিছু গোষ্ঠী সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় উস্কানি দেওয়ার প্রমাণ রয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। তিনি জানান, প্রশাসন আশঙ্কা করছে এই মিছিল হলে নতুন করে গন্ডগোল হতে পারে। তবে এদিন বিজেপির আইনজীবী স্পষ্ট জানান, প্রথম দিন থেকেই বিজেপি তাদের কর্মসূচি নিয়ে সরকারকে অবগত করে এসেছে। কিন্তু সরকার তাদের অনুমতি দিচ্ছে না। এরপরই মিছিল বন্ধ করার মূলে গোয়েন্দা রিপোর্টই কারণ কিনা তা রাজ্যের কাছে জানতে চান বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন-‘রাফাল রায় পছন্দ হয়নি, তাই এত কথা’, কংগ্রেসকে কটাক্ষ মোদীর
বিভিন্ন জেলাশাসকের পাঠানো রিপোর্ট বিচারপতির কাছে জমা দেন এজি। ফের বৃহস্পতিবার দুপক্ষকে সওয়াল করার জন্য সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী। দু'পক্ষের বক্তব্য শোনার পর রথযাত্রা মামলায় রায় দেবে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ।