Malda News: রতুয়ায় গঙ্গার ভাঙন ও বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু । শুধু বিক্ষোভ নয়, ক্ষিপ্ত জনতার রোষের মুখে পড়ে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন না করেই মাঝপথে ফিরে আসতে হয় বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুকে।
রবিবার বিকালে ঘটনাটি ঘটেছে রতুয়া থানার মহানন্দাটোলা এলাকায়। যদিও একইভাবে এখান থেকেই বিলাইমারি এলাকায় গঙ্গার ভাঙ্গন ও বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে আবারও গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন বিজেপি সাংসদ। অবশেষে বাধ্য হয়েই দুটি এলাকা থেকেই সাংসদকে ফিরে আসতে হয়। যদিও এই ঘটনায় শাসকদলের একাংশের ষড়যন্ত্রে অভিযোগ তুলেছেন সাংসদ খগেন মুর্মু ।
পাল্টা তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী বলেছেন, যারা সাংসদকে জিতিয়েছেন , তারাই আজকে ভাঙ্গন ও বন্যায় কবলে মুখে পড়েছে।যার কারণেই ক্ষোভ হয়েছে এবং বিক্ষোভ দেখিয়েছে।
উল্লেখ্য, রতুয়ার ১ ব্লকের বিলাইমারি এবং মহানন্দাটোলা এলাকার গঙ্গার ভাঙ্গন সমস্যা দীর্ঘদিনের। গত কয়েক দশক ধরে গঙ্গার ভাঙ্গনের জেরে নদী গর্ভে তলিয়ে যেতে বসেছে বিলাইমারি এবং মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা।
ইতিমধ্যে এই দুই গ্রামে লাগাতার একদিকে যেমন ভাঙ্গন হচ্ছে, ঠিক অপরদিকে গঙ্গার নদীর জল অসংরক্ষিত জায়গা প্লাবিত হয়েছে। বহু মানুষ ভাঙ্গন ও বন্যার আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন।
মহানন্দাটোলা গ্রামের বাসিন্দা রিয়াজুল সেখ, রহিম শেখদের অভিযোগ, প্রতিবছরই এই এলাকায় গঙ্গার ভাঙ্গন এবং বন্যা হচ্ছে। যার কারণে কয়েক হাজার পরিবারের অসহায় অবস্থা। ভোটের সময় নেতাদের দেখা যায়, সাংসদকে দেখা যায়। আর তারপর কেউ আসেন না।
দীর্ঘদিন পর সাংসদ এলাকায় এসেছেন । তাকে জিজ্ঞেস করেছি কেন্দ্র সরকার কেন ভাঙ্গন প্রতিরোধের কাজ করছে না। কিন্তু বিজেপি সাংসদ কোনো সদুত্তর দিতে পারে নি। তাই আমরা উনাকে ভাঙ্গন ও বন্যার পরিস্থিতি দেখতে দেই নি। গ্রামের মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছে, তাতেই সাংসদ ফিরে গিয়েছেন।
যদিও এপ্রসঙ্গে উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, 'এলাকার মানুষদের ক্ষোভ দেখানোটা স্বাভাবিক। গঙ্গার ভাঙ্গনের জেরে আজকে দুটো গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তূর্ণ এলাকা ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। আসলে কেন্দ্র সরকার রাজ্যের কাছে গঙ্গার ভাঙ্গন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বিস্তারিত রিপোর্ট সহ নানান তথ্য চেয়েছিল। শুধু তাই নয়, কোন কোন এলাকার ভাঙ্গনের ক্ষেত্রে কত টাকার প্রয়োজন রয়েছে, কি ধরনের পরিকল্পনা নিচ্ছে রাজ্য সরকার সে ব্যাপারেও জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনরকম সদিচ্ছা দেখান নি। তাই একটা জটিলতা তৈরি হয়ে আছে'।
এদিকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, 'রতুয়ার গঙ্গার ভাঙ্গন ও বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আজ পর্যন্ত কোনরকম সহযোগিতা করে নি। যবে থেকে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তবে থেকেই বঞ্চিত হয়ে রয়েছে ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষেরা। যারা আজকে বিজেপিকে ভোট দিয়ে সাংসদ গঠন করেছেন, তারাই আজকে বঞ্চিত। তাই এদিন নিজেদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে। ওই এলাকায় সাংসদকে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন'।