রাজ্যে একের পর এক হানায় মিলছে রাশি রাশি টাকা। কোটি কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট। ইদানিংকালের মধ্যে তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়। তারপর মালদার মাছ ব্যবসায়ী, হালিশহর পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান রাজু সাহানির বাড়ি থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছ। এবার ফের কলকাতার গার্ডেনরিচে এক পরিবহণ ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে মিলল সাড়ে ১৭ কোটি টাকা। কিন্তু মূল প্রশ্ন আদতে এই টাকার প্রকৃত মালিক কে?
আমির খানের খাটের নীচে টাকার বান্ডিল মিলতেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কলকাতার মেয়র ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মন্ত্রীর বক্তব্য, ইডির হানার ফলেই এরাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে আছেন, ব্যবসা করতে ভয় পাচ্ছেন। কলকাতার মেয়রের এই বক্তব্যে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। কিন্তু সব থেকে বড় প্রশ্ন আমির খানের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা কার?
যদিও এখনও আমির খানকে নাগালে পায়নি ইডি। অর্পিতার বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধারের সময় ইডিকে অর্পিতা জানিয়েছিলেন, এই টাকা তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এই খবর চাউর হতেই পার্থকে সরকার ও দল থেকে সরিয়ে দিতে দেরি করেনি তৃণমূল কংগ্রেস। একটা সময় সরাসরি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এই ফিরহাদ হাকিমও।
২৯ অগাস্ট মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফিরহাদ হাকিমের গ্রেফতারির আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তা নিয়ে বিরোধীরা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগাম জানেন বলেও বিরোধীরা মন্তব্য করেছিল। শেষমেশ আমির খানের বাড়িতে ইডির তল্লাশিতে ফিরহাদের প্রতিক্রিয়ায় ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন- ‘BJP-র নবান্ন অভিযানের খরচ ১১ কোটি’, ‘জাগো বাংলা’র প্রতিবেদন ভিত্তিহীন, দাবি পদ্ম শিবিরের
এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন ওই টাকা কার? গার্ডেনরিচে উদ্ধার টাকা নিয়ে মোবাইল গেমের কথা উঠছে। অভিজ্ঞ মহলের মতে, ওই টাকা তো ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ার কথা। তাহলে নিশ্চয় তা জানা যাবে। বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, 'ঠাকুর ঘরে কে, হাকিম তো কলা খায়নি।' ইডির হানায় ফিরহাদ হাকিমের বুকে ব্যথা কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পলও। অন্যদিকে অর্পিতার ফ্ল্যাটে কার টাকা সেই প্রশ্নের অফিসিয়াল জবাব পেতে এখনও সময় লাগবে। মাছ ব্যবসায়ীর বাড়িতে মাদক ব্যবসায়ী আত্মীয়ের টাকা মেলে বলে অভিযোগ। রাজু সাহানির কাছে বর্ধমান সানমার্গ চিটফান্ডের টাকা বলে সূত্রের খবর।
যেখানে টাকা মিলছে সেই টাকার মালিককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, টাকার পাহাড়ের এমন কারবারে রাজনীতির যোগ থাকার সম্ভাবনা প্রবল। এখানেই বড় প্রশ্ন, এই কালো টাকার মালিক তাহলে কারা? সেটা প্রমাণ করাই এখন ইডির কাছে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ।