ঐতিহাসিক নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। নিয়োগ দুর্নীতির কোনও মামলা আর শুনতে পারবেন না বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এমনই নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির। অবিলম্বে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে এব্যাপারে তৎপরতার নির্দেশ সর্বোচ্চ আদালতের। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসের নিয়োগ দুর্নীতির সব মামলা অন্য বিচারপতিকে দেওয়ার নির্দেশ শীর্ষ আদালতের।
বেসরকারি টিভি চ্যানেলে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সাক্ষাৎকারের তর্জমা বিচার করেই শুক্রবার ঐতিহাসিক নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। পশ্চিমবঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত সব মামলা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরিয়ে নিতে হবে। কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকেই এই মর্মে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির। অর্থাৎ, রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত কোনও মামলাই আর শুনতে পারবেন না বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর বদলে অন্য কোনও বিচারপতিকে সেই মামলাগুলি শুনতে হবে।
এরপর নিয়োগ দুর্নীতির মামলাগুলি কোন বিচারপতি শুনবেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনামা হাতে পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। অন্যদিকে, জানা গিয়েছে যে মামলা যে পর্যায়ে রয়েছে তারপর থেকেই শুনানি শুরু হবে। যে মামলায় স্থগিতাদেশ নেই, সেই মামলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতেই পারবে ইডি বা সিবিআই।
আরও পড়ুন- চাইলে সকালে গিয়ে সন্ধেতেও ফিরতে পারেন! হাওড়া-পুরী রুটে ছুটবে বন্দে ভারত
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এদিন বলেন, 'মহামান্য আদালতের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। আশা করি মানুষ ন্যায্য বিচার পাবেন। বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা আছে। আগামী দিনেও সঠিক বিচার হবে বলে মনে করি। দুর্নীতিতে কেউ যুক্ত থাকলে শাস্তি হবে। এই মামলায় আমি পিটিশনার ছিলাম। নিয়োগের বিষয়ে তৃণমূলের কোনো নেতা-মন্ত্রী বা কর্মীর যোগ থাকলে তদন্ত হোক। দলের কোনও আপত্তি নেই। দুর্নীতিপরায়য়ণদের নজিরবিহীন শাস্তি হোক।'
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের এদিনের নির্দেশ প্রসঙ্গে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সংবাদমাধ্যমে বলেন, 'বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যে মামলায় কুন্তলের ব্যাপারে ইডি দরখাস্ত করেছিল। সেই মামলা সরানোর কথা বলা হয়েছে। সব মামলা তো সরা উচিত নয়। অর্ডার না দেখা পর্যন্ত আমার এটাই মনে হচ্ছে।'
অন্যদিকে, নিয়োগ দুর্নীতির মামলা থেকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে সরানোর সুপ্রিম নির্দেশ দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর কথায়, 'পশ্চিমবঙ্গের নানুষ আশাহত হয়েছেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইকে অত্যন্ত ভালো চোখে দেখেছেন বাংলার মানুষ। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বলার এক্তিয়ার নেই। বাংলার মানুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের লড়াই সারা জীবন মনে রাখবেন।'