flight crash:এমনই এক ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়েছিল দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইকেও। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছিলেন তিনি। শোনা যায়, সেই দুর্ঘটনায় নাকি তাঁর বুকের পাঁজরের কয়েকটি হাড়ও নাকি ভেঙে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার গুজরাটের আহমেদাবাদের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার দিন সেই ঘটনাও ফের চর্চায় ফিরেছে। বৃহস্পতিবারের দুর্ঘটনায় কপালজোরে প্রাণে বেঁচেছেন বিশ্বাসকুমার রমেশ নামে এক যাত্রী। অভিশপ্ত বিমানের তিনিই একমাত্র জীবিত যাত্রী। ঘটনা পুরোপুরি এক না হলেও বিশ্বাসকুমারের এই বরাতজোরে প্রাণে রক্ষার ঘটনার সঙ্গে খানিকটা মিল পাওয়া যাচ্ছে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইয়ের।
১৯৭৭ সালের ৪ নভেম্বর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই একটি ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন। তবে অলৌকিকভাবে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। এই দুর্ঘটনা ভারতের ইতিহাসে অন্যতম উল্লেখযোগ্য বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী দেশাই একটি সরকারি সফরে দিল্লি থেকে আসামের জোরহাটে যাচ্ছিলেন। তিনি এবং তাঁর সঙ্গীরা ভারতীয় বিমান বাহিনীর টুপোলেভ Tu-124K বিমান 'পুষ্পক'-এ যাচ্ছিলেন। বিমানটি সন্ধ্যা ৫:১৫ টায় দিল্লি থেকে উড়েছিল এবং সন্ধ্যা ৭:৩০ টার দিকে জোরহাট বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টা করে। তবে খারাপ আবহাওয়া ও দুর্বল দৃশ্যমানতার কারণে প্রথম অবতরণ ব্যর্থ হয়। দ্বিতীয়বার অবতরণের সময় বিমানটি একটি গাছের সঙ্গে সংঘর্ষে পড়ে এবং একটি ধানক্ষেতে ভেঙে পড়ে।
আরও পড়ুন- Ahmedabad Plane Crash live news:আহমেদাবাদে ভয়াবহ বিপর্যয়! বিমানের ২৪২ জন যাত্রীই নিহত, জানাল পুলিশ
দুর্ঘটনায় পাইলট উইং কমান্ডার ক্ল্যারেন্স জোসেফ ডি'লিমা, সহ-পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার ম্যাথিউ সাইরিয়াক এবং আরও তিনজন ক্রু সদস্য নিহত হন। প্রধানমন্ত্রী দেশাই, তাঁর ছেলে কান্তিলাল দেশাই, এবং অন্যান্য যাত্রীরা গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান । উদ্ধারকাজে স্থানীয় গ্রামবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তারা আহতদের উদ্ধার করে নিকটবর্তী গ্রামে নিয়ে যান এবং প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন।
আরও পড়ুন- plane crash Ahmedabad: আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুমিছিল! শোকে পাথর গোটা দেশ, শোকবার্তা বিদেশ থেকেও
দুর্ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই সম্পূর্ণ শান্ত ছিলেন এবং আহতদের খোঁজখবর নেন। তিনি বলেন, "আমি ঠিক আছি। আহতদের যত্ন নিন।" এই ঘটনা তাঁর ঈশ্বরে বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করে তোলে।
আরও পড়ুন- Ahmedabad Plane crash:আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনা, উড়ানে ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী
তদন্তে জানা যায় যে, খারাপ আবহাওয়া, দুর্বল দৃশ্যমানতা, এবং বিমানবন্দরের অপর্যাপ্ত অবতরণ সহায়ক ব্যবস্থা এই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ ছিল। বিমানটি অবতরণের সময় উচ্চতা সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে না পারায় গাছের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে এবং বিমানটি ভেঙে পড়ে। এই দুর্ঘটনার স্মৃতিচারণে প্রধানমন্ত্রী দেশাই একটি চিঠি লিখেছিলেন, যা বর্তমানে আসামের জোরহাট জেলায় একটি জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।