আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত গত চার মাসে তিনবার এরাজ্যে এসেছেন। সংঘপ্রধানের বঙ্গে আগমনে যথারীতি রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চাও শুরু হয়েছে। বিশেষ করে সামনেই গ্রামপঞ্চায়েত নির্বাচন থাকায় জল্পনা আরও বেড়েছে। তবে মোহন ভাগবতের এই সফর স্বাভাবিক বলেই জানিয়েছে আরএসএস। এদিকে গত কয়েক বছরে এখানে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের সংগঠন।
বিগত কয়েক বছরে আরএসএসের সংগঠন বৃদ্ধি পেয়েছে এরাজ্যে। দক্ষিণবঙ্গের প্রচারক বিপ্লব রায় বলেন, '২০১৪-তে দক্ষিণবঙ্গে শাখা ছিল ৭২২টি, ২০১৮-তে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯১০-এ। তারপর ২০২০-এর মার্চে দক্ষিণবঙ্গ পুনর্গঠন করা হয়। এটা ভেঙে একটা দক্ষিণবঙ্গ আরেকটা মধ্যবঙ্গ হয়। তা সত্বেও ৬৮৪টি শাখা থেকে যায় দক্ষিণবঙ্গে। এমনই শাখা রয়েছে নয়া মধ্যবঙ্গে। বাংলায় বছরে তিনটে ক্যাম্প হয়। সেখান থেকে প্রায় সাড়ে চার-শো কার্যকর্তা প্রশিক্ষণ নেন।' তবে মোহন ভাগবতের বঙ্গে আসা প্রসঙ্গে বিপ্লব রায়ের বক্তব্য, 'এর মধ্যে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।'
সেপ্টেম্বর ২০২২-এর শেষ থেকে এখনও পর্যন্ত তিনবার এরাজ্যে এসেছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। সম্প্রতি ইসকন মন্দিরে গিয়েছিলেন তিনি। তবে হিন্দুত্ববাদী এই সংগঠনের সর্বময় কর্তার বঙ্গে চার মাসে তিনবার আসাকে কেন্দ্র করেই জল্পনা শুরু হয়েছে। বিগত বিধানসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল হয়নি পদ্মশিবিরের। সামনেই রাজ্যে গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন। তারপরের বছর লোকসভা নির্বাচন। সংগঠনের ধারও তেমন নেই। রাজনৈতিক মহল দু'য়ে দু'য়ে চার করছে। বিপ্লব বায় বলেন, 'এক-আধবার ট্রানজিট বা ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে মোহন ভাগবত আসেন। কলকাতা ট্রানজিট পয়েন্ট বলে বেশি আসতে হয়। সাংগঠনিক ভাবে বছরে দুবার আসেন। একবার সংঘশিক্ষাবর্ষ হিসাবে আরেকবার সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে। সারা দেশে এই রুটিন থাকে। একবছর আগে ঠিক হয়ে যায়। তবে রাজনীতির বিষয় থাকে না।'
সম্প্রতি বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মিঠুন চক্রবর্তীরা বিভিন্ন বক্তব্যে সংখ্যালঘুদের অভয় দিচ্ছেন। তাঁদের পাশে থাকার বার্তাও দিচ্ছেন। আরএসএসের কি অভিমত? প্রশ্নের জবাবে সংঘের দক্ষিণবঙ্গের প্রচারক বলেন, 'এগুলি রাজনীতির বিষয়। তাঁরা যেটা উপযুক্ত মনে করছে বলছেন। পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতির কারণে সকলের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। সনাতনী, মতুয়া, সংখ্যালঘুদের মধ্যেও অসন্তোষ আছে। চোখে আঙুল দিয়ে দেখা যাচ্ছে। মানুষ বুঝবে ঠিকই। আমি বলছি বলে তো নয়, এটা অন্যায়। সরকার ব্যর্থ।'