Burdwan Municipality: বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার বর্ধমান পুরসভার অ্যাকাউন্ট থেকেও গায়েব হয়ে গেল প্রায় দেড় কোটি টাকা। যা জেনে কার্যত মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে বর্ধমান পুরসভা কর্তৃপক্ষের। এই বিষয়ে পুরসভার পক্ষ থেকে রবিবার বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, থানায় অভিযোগ হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
বর্ধমান পুরসভা কর্তৃপক্ষের করা অভিযোগ অনুযায়ী, পুরসভার পাশেই একটি রাষ্টায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় বর্ধমান পুরসভার অ্যাকাউন্ট রয়েছে। রবিবার পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানতে পারে, তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে শনিবার ১ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে। তারপর আর এক মুহূর্ত দেরি না করে এদিনই পুরসভা বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এ বিষয়ে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার সুদীপ্ত ঘোষ বলেন, “আমাদের শাখাতেই পুরসভার অ্যাকাউন্ট আছে। গোটা বিষয়টি হয়েছে মুম্বাই থেকে। তার তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। মনে করা হচ্ছে ক্লোন করে টাকা তোলা হয়েছে। “
সরকারি প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা টাকা গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম বর্ধমান পুরসভার ক্ষেত্রেই ঘটল এমনটা নয়। এর আগে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েক কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়। সেই ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে। টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের বেশ কয়েকজন গ্রেফতারও হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
কী জানিয়েছে বর্ধমান পুরসভা?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, “যে দুটি চেক ব্যবহার করে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে সেই চেক দুটি পুরসভাতেই আছে। অথচ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উঠে গেছে"। বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার বলেন, “আমরা থানায় অভিযোগ করেছি। পুলিশ তদন্ত করছে। আমাদের একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা গায়েব হয়ে গেছে। এই ঘটনায় আমাদের কোনও দোষ নেই। যা হয়েছে সেটা ব্যাঙ্কের শাখা থেকে।"
আরও পড়ুন 'স্বাধীন' বাংলাদেশে সুনীলের ভিটেও জবরদখল, লাইব্রেরি ভেঙে চালের গুদাম বানালেন BNP নেতা
নিয়ম অনুযায়ী পুরসভার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার সময় চেকে ফিনান্স অফিসার ও এক্সিকিউটিভ অফিসারের সই থাকে। এখানে চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যানের সই থাকে না। জানা গিয়েছে, এই দুটি চেকে চেয়ারম্যান এক্সিকিউটিভ অফিসারের সই ছিল। পুরসভার চেয়ারম্য়ানের স্বাক্ষর থাকার কথা নয়। তিনি এই চেকের অথরাইজড সিগনেটরি নন। তাছাড়া চেক বই যদি ব্যাঙ্কে পড়া থাকে তাহলে এক্সিকিউটিভ অফিসারের স্বাক্ষর নিয়েও প্রশ্ন আছে। পুরসভার একাংশের বক্তব্য়, যেখানে যে কোনও ব্যাঙ্ক ৫০০ টাকা দিতেও স্বাক্ষর মিলিয়ে দেখে সেখানে চেক-এ কাদের স্বাক্ষর আছে, সেই স্বাক্ষর ব্যাঙ্কে আছে তা মিলিয়ে দেখল না কেন? তাঁরা এই ঘটনারর দায় ব্যাঙ্কেরই উপরই চাপিয়েছে।
সূত্রের খবর, কনক জুয়েলার্স ও এশিয়া অ্যাগ্রো এই দুই সংস্থার নামে এই চেকের টাকা অন্য কোনও ব্যাঙ্কে ট্রান্সফার করা হয়েছে। দুটি চেকের মধ্যে একটি আবার ক্যানসেল চেক। পুরসভাতেই চেক বই রয়েছে। তড়িঘড়ি এবিষয়ে সতকর্তা অবলম্বন করতে সোমবার জরুরি বৈঠক করেছে বর্ধমান পুরসভা।