/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/19/cats-2025-10-19-18-12-38.jpg)
কালী প্রতিমার পায়ে বেলকাঁটা ফুটিয়ে রক্ত বের করে সাধক কমলাকান্ত বর্ধমানের মহারাজা কে দেখিয়ে ছিলেন তাঁর কালী মা জীবন্ত
প্রতি অমাবস্যায় নিজের হাতে মাটির কালীমূর্তি গড়ে পুজো করতেন সাধক কমলাকান্ত।বর্ধমানের কোটালহাটের কালী মন্দিরই ছিল তাঁর সাধনা ভূমি।সেখানে কালী সাধনা করেই সিদ্ধিলাভ করেন কমলাকান্ত।নিজের আরাধ্য কালীমূর্তির পায়ে বেলকাঁটা ফুটিয়ে রক্ত বারকরে সাধক কমলাকান্ত তৎকালীন বর্ধমানের মহারাজ তেজচন্দ্রকে দেখিয়ে ছিলেন,তাঁর কালী মা জীবন্ত।কোটালহাটের কালী মন্দির এখন কমলাকান্ত কালীবাড়ি নামে পরিচিত।কার্তীকের আমাবস্যায় এই কালীবাড়ির কালী পুজোয় উপচে পড়ে ভক্তদের ভিড় ।
কমলাকান্ত ভট্টাচার্য্য সাধক কমলাকান্ত নামেই বিশেষ ভাবে পরিচিত।তাঁর জন্ম পূর্ব বর্ধমানের অম্বিকা কালনায়।কামলাকান্তের বয়স যখন মাত্র পাঁচ বছর তখন তাঁর বাবা মহেশ্বর ভট্টাচার্য্যের মৃত্যু হয়।বাবার মৃত্যুর পর কমলাকান্ত তাঁর মা মহামায়া দেবীর সঙ্গে গলসির চান্না গ্রামে মামার বাড়িতে চলে এসে সেখানেই থাকতে শুরু করেন।ছোট বয়স থেকেই দেবী কালীর প্রতি তাঁর ভক্তিভাব জাগে।তিনি কালী সাধনায় মগ্ন হন। চান্না গ্রামের বিশালাক্ষী মাতার মন্দির হল সাধক কমলাকান্তের আধ্যাত্মিক জীবনের প্রথম সাধন ভূমি ।
আলোর উৎসবের রঙিন কলকাতা,শহরের সেরা এই মাতৃ প্রতিমার রূপ দেখে গায়ে কাঁটা দেবে
কালী সাধনায় কমলাকান্তর আত্মমগ্ন হয়ে পড়ার কথা বর্ধমানের তৎকালীন মহারাজ তেজচন্দ্র মহতাব কোনভাবে জানতে পারেন।তিনি সাধক কমলাকান্তকে বর্ধমানে নিয়ে চলে আসেন। বর্ধমানের লাকুর্ডিতে একটি বাড়ি এবং কালী সাধনার জন্য কোটালহাটে মন্দির গাড়ার জন্য কমলাকান্তকে জমি দান করেন তেজচন্দ্র। ১৮০৯ সালে সেই জমিতে খড়ের ছাউনি দিয়ে মন্দির নির্মান করেন কমলাকান্ত।এরপর তিনি মন্দিরে কালী মূর্তি প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি মন্দির চত্ত্বরে পঞ্চমুণ্ডি আসন প্রতিষ্ঠা করেন।পশাপাশি মন্দিরের পিছনে বেলগাছও তিনি প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরের সেই পঞ্চমুণ্ডি আসনে বসে কালী সাধনা করেই কমলাকান্ত সিদ্ধিলাভ করেন।
কমলাকান্তকে নিয়ে নানা লোকগাথা আজও মানুষের মুখেমুখে ঘোরে। জনশ্রুতি রয়েছে মাহারাজ তেজচন্দ্র মহতাব গুরু হিসাবে মানতেন সাধক কমলাকান্তকে। নিজের উশৃঙ্খল পুত্র প্রতাপচাঁদ কে শিক্ষাদীক্ষা এবং সংস্কারে উপযুক্ত করে গড়ে তোলার জন্য কমলাকান্তের দ্বারস্থ হয়ে ছিলেন তেজচন্দ্র। এও কথিত আছে ,কমলাকান্ত তাঁর সাধনার কালী মূর্তির পায়ে বেলকাঁটা ফুটিয়ে রক্ত বেরকরে মহারাজ তেজচন্দ্রকে দেখিয়ে ছিলেন তাঁর কালী মা জীবন্ত। আরো কথিও আছে,
কমলাকান্ত ঘোর আমাবস্যার দিনে মাহারাজ তেজচন্দ্র মহতাবকে পূর্ণিমার চাঁদ দেখিয়ে ছিলেন।
দীপাবলিতে এই তিন রাশির জাতক-জাতিকারা মালামাল হবেন, দেবী লক্ষ্মীর কৃপা থাকবে আপনার উপর
এও শোনাযায়,কমলাকান্তের মৃত্যুর সময় এক অদ্ভুত ঘটনা দেখা গিয়েছিল। মৃত্যুর আগে অনেকেই গঙ্গা স্পর্শ করতে চান।কিন্তু সাধক কমলাকান্ত গঙ্গায় যেতে চাননি। তখন নাকি এই কালীবাড়ির মাটি ফুঁড়ে আচমকা উঠে এসেছিল জল, যা গঙ্গার জল বলেই বিশ্বাস ভক্তদের। সেই জল মন্দিরের যে স্থান থেকে উঠে এসেছিল,সেই স্থনটি কুয়োর মত করে বাঁধিয়ে রাখা হয়েছে।মৃত্যুর পর কমলাকান্তের ইচ্ছা অনুসারে কালী মায়ের চরণতলে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয় । সমাধির উপর তৈরি হয় মায়ের মূর্তি ও পাকা মন্দির।
খড়ের চালার যে মন্দিরে কমলাকান্ত কালী সাধনা করতেন সেই মন্দিরই এখন পাকা মন্দিরের রুপ পেয়েছে।যা কমলাকান্ত কালী বাড়ি নামেই বিশেষ পরিচিত ।সেই কালী বাড়ির পরিচালন বোর্ডের সদস্যরা জানান,“আগে পুজোর পর কালীর মৃণ্নয়ী মূর্তি এক বছরের জন্য মন্দিরেই রেখে দেওয়া হত। তবে ভক্তদের ইচ্ছানুসারে এখন সাড়ে ছয় ফুট উচ্চতার কষ্ঠিপাথরের কালী মূর্তির পুজো হয়। কার্তিক মাসের আমাবস্যা বাদে বছরের বাকি আমাবস্যায় বৈদিক মতে কমলাকান্ত কালীবাড়িতে
পুজো হয়।কিন্তু কার্তিকের অমাবস্যায় পুজো হয় তন্ত্র মতে। সাধক কমলাকান্ত যেহেতু প্রতিদিন কালীকে ভোগে মাগুর মাছ খাওয়াতেন তাই সেই রীতি মেনে এখনও মাগুর মাছের পদ রেঁধে মা কালীকে ভোগ নিবেদন করা হয়। কালীপুজোর দিন রাতভর দেবীর আরাধনা হয়।পরদিন হয় অন্নকূট। তৃতীয় দিনে মন্দির প্রাঙ্গনে সাধক কমলাকান্ত দিবস উদযাপন করা হয়ে থাকে।পূর্বে কমলাকান্ত কালী বাড়িতে পুজোয় ছাগ বলির প্রথা থাকলেও এখন আর তা হয় না।
অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে চুরমার, আকাশছোঁয়া দামেও ধনতেরাসে সোনা বিক্রিতে নজির দেশে
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us