ED team attacked Sandeshkhali: গতকাল বেনজির এক ঘটনার সাক্ষী থেকেছে বাংলা। রেশন দুর্নীতির (Ration Scam) তদন্তে তৃণমূল নেতার (TMC Leader) বাড়িতে তল্লাশিতে গেলে মারতে মারতে বের করে দেওয়া হয় ইডির অফিসারদের। ইট-পাথর বাঁশের ঘায়ে মাথা ফেটে ঝরঝর করে রক্ত বেরোতে থাকে ইডির (ED) আধিকারিকদের। কারও বা ঘাড়ে মারাত্মক চোট লাগে। বেপরোয়া ভাঙচুর চলে তাঁদের গাড়িতেও। শুক্রবার সন্দেশখালিতে গিয়ে আক্রান্ত ইডির বেশ কয়েকজন অফিসার ভর্তি রয়েছেন সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। শনিবার তাঁদের সঙ্গে দেখা করে এলেন বিজেপির (BJP MLA) তিন বিধায়ক।
শুক্রবার রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় কলকাতা (Kolkata) ছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনার বেশ কয়েকটি এলাকায় তল্লাশিতে গিয়েছিলন ইডির আধিকারিকরা। সন্দেশখালিতে (Sandeshkali) তৃণমূল ব্লক সভাপতি শেখ শাহাজাহানের (Sheikh Shahjahan) বাড়িতে ঢুকলে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয় ইডির অফিসারদের। কয়েকশো শাহাজাহান অনুগামী বেধড়ক মারধর শুরু করে ইডির অফিসারদের। মহিলারও তেড়ে যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর (Central Force) জওয়ানদের দিকে। শাহাজাহানের বাড়ি থেকে কোনও মতে প্রাণ বাঁচিয়ে পালান ইডির আধিকারিকরা। তবে যারপরনাই মারধরে বেশ কয়েকজন ইডির অফিসার আহন হয়েছেন।
তাঁদেরই কয়েকজন ভর্তি রয়েছেন সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে। শনিবার তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির (BJP) তিন বিধায়ক। ছিলেন কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায় (Ambika Roy), খানাকুলের বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ (Sushanta Ghosh) এবং পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান ঘোষ (Biman Ghosh) । গতকাল সন্দেশখালিতে ইডির অফিসারদের উপর হামলার ঘটনায় তিনটি এফআইআর (FIR) দায়ের করা হয়েছে।
সন্দেশখালিতে শুক্রবারের ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন মহলে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। সরকারি অফিসারদের উপর এমন হামলায় ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও। গতকালই কড়া বার্তা দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘সরকারের উচিত গণতন্ত্রে এই ধরনের বর্বরতাকে রোখা। পেশি শক্তি ও কাগুজে বাঘদের নামিয়ে বাংলার মানুষকে ভয় দেখানো যাবে না। জঙ্গলরাজ ও গুন্ডাগিরি চলতে পারে কেবলমাত্র মুর্খের স্বর্গেই। বাংলায় দুর্বল গণতন্ত্র নেই। রাজ্য সরকারের নিজের কর্তব্য পালন করা উচিত। রাজ্যপাল হিসেবে, সংবিধান অনুযায়ী সব বিকল্প খতিয়ে দেখে যথা সময়ে যথাযথ পদক্ষেপ করব।’
গতকাল সন্দেশখালির পাশাপাশি ইডির অন্য একটি দল গিয়েছিল বনগাঁতেও (Bongaon) । রেশন দুর্নীতি মামলাতেই টানা তল্লাশি চলে বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যর (Shankar Adhya) বাড়ি, শ্বশুরবাড়ি-সহ মোট পাঁচটি ঠিকানায়। উদ্ধার হয় বান্জিল বান্ডিল নোট। গতকাল দিনভর ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ চলে বনগাঁর দাপুটে তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যকে। শেষমেশ বক্তব্যে একাধিক অসঙ্গতি থাকার কারণে শনিবার মধ্যরাতে গ্রেফতার করা হয় শঙ্কর আঢ্যকে।
আরও পড়ুন- Digha: দিঘা যাচ্ছেন? মন্ত্রমুগ্ধকর এপ্রান্তে যেতে ভুলবেন না, অসাধারণ এতল্লাট দিঘার নয়া আবিষ্কার
ধৃতের সঙ্গে রেশন দুর্নীতিতে আগেই গ্রেফতার হওয়া রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (Jyotipriya Mallick) ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে দাবি সূত্রের। ওই একই মামলাতেই সন্দেশখালিতেও তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শেখ শাহাজাহানের বাড়িতেও হানা দিয়েছিল ইডি। তবে সেখানে গিয়ে মারাত্মক অভিজ্ঞতার সামনে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকরদের।