Advertisment

বামেদের 'অলিখিত' ছাড় পুলিশের, কৌশলে লাভের গুড় জোড়া-ফুলের

রাস্তা বন্ধ করে সভা করতে কোনও বাধা দেয়নি কলকাতা পুলিশ। ডোরিনা ক্রশিং, টিপু সুলতান মসজিদের মোড় সর্বত্র ট্রাফিকে লাল সিগন্যাল করা ছিল। ধর্মতলা চত্বরে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল।

author-image
Joyprakash Das
New Update
sfi dyfi insaf sabha kolata police tmc bjp

লাল ঝান্ডা হাতে বাম কর্মী, থমকে পথ, কার্যত দর্শকের ভূমিকায় পুলিশ। ছবি- শশী ঘোষ

পুজোর বাজারের মধ্যে পাক্কা দু'ঘন্টার ওপর কলকাতার প্রাণকেন্দ্র সিপিএমের ছাত্র-যুবদের মিছিলে অচল রইল। ধর্মতলা চত্বরে ম্যাটাডোর ভ্যানকে মঞ্চ বানিয়ে সভা করলেন বামেরা। সভায় ঝোড়ো বক্তব্য রাখেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, সৃজন ভট্টাচার্যরা। ছিলেন রাজ্য সিপিএমের সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। রাস্তা বন্ধ করে সভা করতে কোনও বাধা দেয়নি কলকাতা পুলিশ। ডোরিনা ক্রশিং, টিপু সুলতান মসজিদের মোড় সর্বত্র ট্রাফিকে লাল সিগন্যাল করা ছিল। ধর্মতলা চত্বরে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল।

Advertisment
publive-image
ব্যস্ত রাস্তা আটকে বাম কর্মীরা।

দীর্ঘ দিন ধরেই বিরোধীরা অভিযোগ করে আসছিল তাঁদের সভা-সমাবেশ করতে দিচ্ছে না তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার। এর আগে আনিস খান হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে বাম ছাত্র-যুবদের মিছিলে তুলকালাম হয়েছিল হাওড়ার আমতায়। মুর্শিদাবাদ, বর্ধমানে সিপিএমের আইন অমান্য আন্দোলনে রীতিমতো পুলিশের সঙ্গে খন্ডযুদ্ধ বাধে। এবার ধর্মতলায় একেবারে বিনা বাধায় সভা করতে দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। পুজোর মুখে মহানগরের অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা বন্ধ করে সভা করল এসএফআই-ডিওয়াইএফআই। রাস্তর মধ্যে বসে পড়েন সভার লোকজন।

আরও পড়ুন- SFI-DYFI-এর ইনসাফ সভা: ধর্মতলায় থিকথিকে ভিড়, সভা ২১ জুলাইয়ের জায়গায়

publive-image
লাল ঝান্ডার দখলে রাজপথ, দাঁড়িয়ে দেখছে পুলিশ

রাজনৈতিক মহলের মতে, মঙ্গলবার ধর্মতলায় বাম ছাত্র-যুবদের সভা করতে 'স্পেস' দিয়েছে রাজ্য সরকার। হাওড়া, শিয়ালদা, পার্কস্ট্রিটের দিক থেকে মিছিল আসে ধর্মতলার দিকে। বাস, ম্যাটাডোর করেও এসেছেন আন্দোলনকারীরা। পুলিশ মোতায়েন করলেও তাঁরা ছিল নেহাতই নির্বাক দর্শক। যে যাঁর মতো ভিক্টোরিয়া হাউজ থেকে ডোরিনা ক্রশিংয়ের আশের পাশের রাস্তায় বসে পড়ে আন্দলনকারীরা। এদিন ছাত্রযুবদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। লেলিন সরণির দিকে ম্যাটাডোরে মঞ্চের মুখ রেখে সভা চলতে থাকে। দুপুর ১টার পরই তিন দিক থেকে মিছিল এসে জড় হয়ে যায় ধর্মতলায়। পুরো সাড়ে তিনটে পর্যন্ত কোনও গাড়ি নড়চড় করেনি এই এলাকা থেকে। স্তব্ধ হয়ে পড়ে ধর্মতলা। অভিজ্ঞ মহলের মতে, এই সভাতে কোনও বাধা না দিয়ে রাজ্য সরকার জানিয়ে দিল, বিরোধীদের সভা করতে বাধা দেয় না তাঁরা। বরং রাস্তা বন্ধ করে সভা করা সত্বেও কোনও কড়া পদক্ষেপ করেনি পুলিশ। ওপরতলার নির্দেশ মতো তাঁরা ঘুরে বেরিয়েছে।

publive-image
ধর্মতলায় বাম-সুনামি

অনুমতি না দিলেও ছাত্রযুবদের ইনসাফ সভা ধর্মতলাতেই করবে বলে আগাম হুঁশিয়ারি দিয়েছিল নেতৃত্ব। সম্প্রতি বিজেপির নবান্ন অভিযানের দিন অবৈধ সমাবেশ বলে পুলিশ বারে বারে ঘোষণা করতে থাকে। সেদিন পুলিশের গাড়ি পুড়েছিল, পুলিশের ওপর ইঁট-পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে, চলেছিল কাঁদানে গ্যাস। পুলিশের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছি বিজেপি। মঙ্গলবার ধর্মতলা অবরুদ্ধ হলেও স্বাভাবিক ভাবেই সমাবেশ হয়েছে। এরাজ্যে এখন প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের মতে, এইমুহূর্তে বামেদের শক্তি বাড়লে আদপে তৃণমূলেরই ফায়দা। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। বিরোধী শক্তি যত ভাগাভাগি হবে ততই শাসকদলের পক্ষে মঙ্গল। একইসঙ্গে বিরোধীদের সভাসমাবেশে না বাধা দেওয়ার বার্তাও দেওয়া গেল।

kolkata police tmc bjp CPIM SFI DYFI SFI-DYFI Mamata Government
Advertisment