SSC: SSC মামলায় ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। ২০১৬ সালের গ্রপ-সি, গ্রুপ-ডি, নবম-দ্বাদশে নিয়োগের গোটা প্রক্রিয়াটিই বাতিল বলে ঘোষণা করেছে উচ্চ আদালত। আদালতের এই রায় শোনার পর কী বলছেন বছরের পর বছর ধরে কলকাতার রাজপথ আঁকড়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওায়া চাকরিপ্রার্থীরা? চাকরির দাবিতে আন্দোলনের অন্যতম মুখ শহীদুল্লাহ। মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি থেকে কলকাতায় এসে দিনের পর দিন ধরে তিনি আন্দোলন করে চলেছেন। আজ এই রায় শুনে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নে বিভোর এই যুবক।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে গলাটা বেশ ধরে আসছিল শহীদুল্লাহর। SSC মামলার প্রায় সাড়ে ৩ মাসের শুনানি শেষে আজ চূড়ান্ত রায় শুনে তিনি বললেন, "আমাদের অভিযোগগুলি যে সত্য ছিল, তা আজ প্রমাণিত হল। এটা আমাদের আন্দোলনের জয়, ন্যায়ের জয়, গোটা বিচার-ব্যবস্থার জয়। আদালতের নির্দেশ দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। অযোগ্যদের চাকরি বাতিল হল, এবার যাতে যোগ্যদের নিয়োগ করা হয় সেটাই চাই।"
২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে কলকাতার রাস্তায় চাকরির দাবিতে আন্দোলন করে চলেছেন শহীদুল্লাহ (Sahudullah)। শুরুর দিকে মাসে প্রায় ২৪-২৫ দিন শহরের রাজপথেই দিন কাটতো তাঁর। চোয়াল শক্ত রেখে চালিয়ে গিয়েছেন নাছোড় আন্দোলন।
আরও পড়ুন- SSC মামলার ঐতিহাসিক রায়দান হাইকোর্টের, ভোটের আবহে চূড়ান্ত ধাক্কা রাজ্যের!
তবে ২০২৪ সালে পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি বেশ সঙ্গীন হয়ে পড়ে। বাড়িতে মা-বাবা দু'জনেই অসুস্থ। নিজে যে কোচিং সেন্টারটিতে পড়াতেন, টানা আন্দোলনের জন্য কলকাতায় পড়ে থাকতে গিয়ে সেই চাকরিও খোয়াতে হয় শহীদুল্লাহকে। যদিও বর্তমানে আরও একটি কোচিং সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন তিনি।
তাঁর কথায়, "এখন কলকাতায় চারদিন করে থাকি, বাড়িতে থাকি দু-তিনদিন। কোচিং সেন্টারে পড়াতাম। সেখান থেকেও চাকরি চলে যায়। যদিও এখন আর একটা কোচিং সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। বাবা প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। ২০০৮ সালে অবসর নিয়েছেন। বাবা পেনশন পান। ওই টাকাতেই আমাদের সংসার চলে। স্ত্রী, ছেলেমেয়ে, বাবা-মা ও দুই ভাই নিয়ে আমাদের সংসার।"
SSC মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের এদিনের রায়ে শহীদুল্লাহের মতো আন্দোলনকারী অনেক চাকরিপ্রার্থীই নতুন আশা নিয়ে বুক বেঁধেছেন। অযোগ্যদের চাকরি যেমন বাতিল হল, তেমনই যাঁরা যোগ্য এবার তাঁদের নিয়োগের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত সদর্থক কোনও পদক্ষেপ করে, সেটাই চাইছেন তাঁরা।