শক্তিগড়ে ল্যাংচার দোকানে অনুব্রত মন্ডলের বৈঠকের খবর সামনে আসায় হইচই হয়েছে। যেহেতু গ্রেফতার তৃণমূল নেতার বৈঠক, মিডিয়ার ছবি তাই তোলপাড়। সূত্রের খবর, এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা নেতা-মন্ত্রীদের অনেকেরই বিশেষ ঠেক এই ল্যাংচার দোকানগুলি। যাত্রাপথেই এখানেই আলোচনা সেরে নেন অনেকেই। স্থানীয় নেতৃত্ব ও কর্মীরা অপেক্ষা করেন সেখানে।
আসানসোল সংশোধনাগার থেকে বেরনোর পথে শক্তিগড়ের 'ল্যাংচা কুঠি'-তে জলযোগ সারেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডল। শক্তিগড়ের ধাবায় পুলিশের উপস্থিতিতেই অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে একই টেবিলে বসে জনা তিনেক ব্যক্তি খাওয়া-দাওয়া সেরেছেন। ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘুসুরফুসুর করে তিনি গোপন বৈঠক করেছেন বলেই বিরোধীদের দাবি। ওই ঘটনা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়েছে। পর্যবেক্ষকমহলের মতে, মিডিয়ার হাজিরা ছিল বলে ঘটনা সামনে এসেছে, কিন্তু শক্তিগড়ের দোকানগুলি নেতা-মন্ত্রীদের একাংশের বৈঠকের বিশেষ ঠেক বলেই সূত্রের খবর।
দীর্ঘ বছর আগেই জাতীয় সড়ক হতেই শক্তিগড়ের ল্যাংচার দোকানগুলি উঠে এসেছে আমড়ায়। বর্ধমান শহর প্রবেশের মুখেই এই ল্যাংচা হাবে দূরপাল্লার বাস থেকে ছোটগাড়ি এখানে হল্ট করে। সূত্রের খবর, এই আমরার কিছু দোকানে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা- মন্ত্রীদের একটা বড় অংশ যাত্রাপথে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকও সেরে নেনে। প্রথমত, ব্রেকফাস্ট বা টিফিনের সময় ঘুসুরফুসুর বৈঠক সেরে নিলে সময়ও সাশ্রয় হয়। পাশাপাশি প্রকাশ্যে 'গোপন' বৈঠকের কাজও সারা হয়ে যায়। ওই সূত্রের দাবি, অনুব্রত মন্ডল প্রভাবশালী অভিযুক্ত হওয়ায় ঘটনাস্থলে মিডিয়া ছিল, তাই প্রকাশ্যে এসেছে। রাজ্য পুলিশের উপস্থিতিতে এই ঘটনা ঘটেছে। অন্য ক্ষেত্রে নেতারা যাঁদের সঙ্গেই দেখা করুক পুলিশ কি নজর রাখার সাহস দেখাতে পারে? এই প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।
আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতাও এই শক্তিগড়ের ল্যাংচার দোকানে মাঝে-মধ্যে বৈঠক করেন বলে সূত্রের খবর। এই দোকানগুলিই যেন দ্বিতীয় গোপন বৈঠকের আস্তানা। প্রকাশ্য অথচ সাধারণের সন্দেহও থাকবে না কাদের সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে। এ যেন হালচা চালে খেতে খেতে সকলের সামনেই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সেরে নেওয়া। একেবারে নিনজা টেকনিক। পুলিশের একটা সূত্রের খবর, একটা সময় দুর্গাপুর-আসানসোলে একাধিক কয়লা মাফিয়ারাও কলকাতার যাত্রাপথে শক্তিগড়ের এই ল্যাংচার দোকানগুলিতে মিটিং সেরে নিত। সময় এগিয়ে চললেও রেওয়াজ কিন্তু বন্ধ হয়নি। অনুব্রত মন্ডলই বিষয়টা সামনে নিয়ে এলেন।