সরকারি কর্মীদের বদলিতেও এবার বিরাট দুর্নীতি প্রকাশ্যে। শুধু চাকরি পাইয়ে দেওয়াই নয়, কর্মরত সরকারি কর্মীদের পছন্দের জায়গায় ট্রান্সফারের ক্ষেত্রেও বড়সড় কারবার ফেঁদে বসেছিলেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। ইডি সূত্রের দাবি, জেরায় একথা স্বীকার করে নিয়েছেন শান্তনু নিজেই। টাকার বিনিময়ে বহু অযোগ্য প্রার্থীকে তিনি চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন বলেও নাকি জেরায় মেনে নিয়েছেন যুব তৃণমূলের এই নেতা। তবে শুধু সাধারণ চাকরিপ্রার্থীরাই নন, বহু তৃণমূল কর্মীও চাকরির জন্য তাঁকে টাকা দিয়েছিলেন বলেও নাকি স্বীকার করে নিয়েছেন হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে হেফাজতে নিয়ে জেরায় একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য হাতে পাচ্ছে ইডি। কর্মরত সরকারি কর্মীদের বদলির জন্যও লক্ষ-লক্ষ টাকা লুঠের আরও এক কীর্তি সামনে এসেছে। ট্রান্সফার পোস্টিংয়ে মোটা অঙ্কের লেনদেন হয়েছে বলে ইডি সূত্রের দাবি। আরও দাবি, বদলির স্থান অনুযায়ী টাকার অঙ্ক নির্ভর করত। অর্থাৎ, কতটা সুবিধামতো জায়গায় বদলি মিলবে, সেই অনুযায়ী টাকা নিতেন শান্তনুরা। দফায়-দফায় জেরায় একথা স্বীকার করেছেন শান্তনু নিজেই, এমনই দাবি ইডি সূত্রের।
আরও পড়ুন- কাটবে জট? আজ রাজভবনে DA আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা
শুধু সাধারণ চাকরিপ্রার্থীরাই নন, টাকার বিনিময়ে চাকরি পেতে বহু তৃণমূলকর্মীও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে দাবি শান্তনুর। অর্থাৎ, শান্তনু যে টাকার বিনিময়ে চাকরির বন্দোবস্ত করেন একথা শাসকদলের অনেক নেতারই জানা ছিল বলে ইডির দাবি। সেই কারণেই তাঁকে দফায়-দফায় জেরা চলছে। ইডি সূত্রের দাবি, মাত্র আট বছরের মধ্যেই হুগলি জেলার বেতাজ বাদশা হয়ে উঠেছিলেন এই তৃণমূল নেতা। নামে-বেনামে বহু সম্পত্তির মালিক তিনি। এখনও পর্যন্ত তাঁর কুড়িটি সম্পত্তির হদিশ মিললেও ইডির দাবি, এই সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি হতে পারে।
আরও পড়ুন- ফের বন্দে ভারত এক্সপ্রেস লক্ষ্য করে পাথরবৃষ্টি, ভাঙল জানলার কাচ
বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা এপ্রসঙ্গে শাসকদলকে বিঁধে সংবাদমাধ্যমে বলেন, 'উপর থেকে নীচ পর্যন্ত জালিয়াতি চক্র তৈরি করেছিল তৃণমূল। সরকারি ক্ষেত্রে যত কাজ আছে সব কাজ থেকে পয়সা তোলো, দলকে কিছু দাও বাকি নিজেরা খাও। বিশাল জালিয়াতি চক্র তৈরি হয়েছিল। উপর থেকে নামতে নামতে নীচে যাচ্ছে। শান্তনুর বক্তব্য থেকে পরিস্কার যে তৃণমূল দলগতভাবে সংঘটিত জালিয়াতি চক্র তৈরি করেছিল।'