গত বৃহস্পতিবার বসিরহাট কোর্টে শেখ শাহজাহান। ফটো- পার্থ পাল
Shahjahan Sheikh in CBI custody: বহু টালবাহানা শেষে সন্দেশখালির শেখ শাহাজাহনকে হেফাজতে পেল সিবিআই। কোর্টের নির্দেশে শাহজাহানকে হস্তান্তরে বাধ্য হল সিআইডি।
Advertisment
বুধবার সন্ধ্যার মুখে ভবানী ভবনের পিছনের গেট দিয়ে সন্দেশখালিকাণ্ডে ধৃত শেখ শাহজাহানকে সিআইডি এসএসকেএম হাসপাতালে গেলে বিব্রান্তি ছড়ায়। প্রশ্ন ওঠে সিবিআইয়ের হেফাজত নিয়ে। তারপর জানা যায়, শাহজাহানের রুটিন স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা। ওই সময় ভবনী ভবনের নীচে অপেক্ষা করছিলেন সিবিআই তদন্তকারীরা।
সকালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, শেখ শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতেই হবে। বুধবার বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ধৃত বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতাকে সিবিআইয়ের হাতে হস্তান্তর করতেই হবে বিকেল সাড়ে চারটের মধ্যে। এদিকে এদিন ইডি শেখ শাহজাহানকে হস্তান্তরে রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার বিষয়টি তুলে ধরে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছিল। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, বুধবার বিকেল ৪.১৫-র মধ্যে শেখ শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে হবে।
সেই মত এদিন ৪টের মধ্যে ভবানী ভবনে পৌঁছে যান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা। কিন্তু বিকেল গড়ি সন্ধ্যা হলেও সন্দেশখালির ‘বাঘ’কে হাতে পায়নি সিবিআই গোয়েন্দারা। ফলে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের দৃষ্টি আকর্ষণে ফের উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা বলে সিবিআই। এরপরই জানা যায় যে, স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য সিআইডি তাকে এসএসকেএমে নিয়ে যায়। সূত্রের খবর, হস্তান্তর প্রক্রিয়ার আগে নিয়ম মেনে শেখ শাহজাহানের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হয়েছে। তারপরই সন্ধ্যা পৌনে সাতটা নাগাদ শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয় সিআইডি।
সিবিআই শাহজাহানকে হাতে পেতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকারকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। এক্সবার্তায় আমিত মালব্য লেখেন, '
১লা জানুয়ারী ২০২৪-এ একটি জনসভায় ভাষণে, শাহজাহান দাবি করেছিলেন যে সিবিআই এবং ইডি তার 'কেশ' স্পর্শ করতে পারবে না… তিনি সবাইকে প্রার্থনা করতে বলেছিলেন- যাতে তিনি ক্ষুব্ধ না হন, অন্যথায় তিনি বিজেপি নেতা, কর্মীদের দাঁত ভেঙে ফেলবেন। কর্মী ও নেতা,২০২৪-য়ের পর তাদের মৃত্যুদণ্ড দেবেন (যেহেতু বাংলায় টিএমসি সরকার নিয়ন্ত্রণ করে) এবং দেহের চামড়া ছিঁড়ে ফেলবেন…৬ই মার্চ, ২০২৪-এ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় শেখ শাহজাহান, সিবিআই-এর হেফাজতে।
'
In a public speech on 1st Jan 2024, Shahjahan claimed that CBI and ED wouldn’t be able to even touch his ‘hair’… He also asked everyone to pray so that he doesn’t get angry or else he will break teeth of BJP workers and leaders, execute them after 2024 (since TMC controls Govt… https://t.co/repKZG7icr
— Amit Malviya (मोदी का परिवार) (@amitmalviya) March 6, 2024
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালি কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহান। গত বৃহস্পতিবার মিনাখাঁর বামনপুকুর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর থেকে সিআইডির হেফাজতে রাখা হয়েছে বহিষ্কৃত এই তৃণমূল নেতাকে। শাহজাহানের পুলিশি হেফাজের নির্দেশের পরই ইডি তাঁকে হেফাজতে চাইতে আদালতের দ্বারস্থ হয়। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি ছিল, সন্দেশখালিতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের উপর হামলার ঘটনার তদন্ত রাজ্য পুলিশে আস্থা নেই। সিবিআই ও রাজ্য পুলিশকে নিয়ে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দলেও কোনও ভরসা নেই। কারণ, রাজ্য পুলিশ এই মামলায় সহযোগিতার করবে না। তাই এই তদন্তভার শুধু সিবিআইকেই দেওয়া হোক। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সেই আবেদন মঞ্জুর করে। পরে সুপ্রিম কোর্টও ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে সিলমোহর দেয়।
সন্দেশখালিতে ইডি অফিসারদের উপর হামলার ঘটনায় ন্যাজাট থানায় দু’টি এফআইআর (৮ ও ৯ নম্বর) দায়ের হয়েছিল। এছাড়া বনগাঁ থানায় আরও একটি এফআইআর (১৮ নম্বর) দায়ের হয়। ওই মামলার প্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়ে মঙ্গলবারই সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানায় রাজ্য। কিন্তু, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না তাতে সাড়া দেননি। প্রক্রিয়া মেনে মামলা হবে বলে জানানো হয়। বুধবার প্রক্রিয়া মেনে আবেদন হলেও রাজ্যের আবেদনে সাড়া দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখে।
আদালত সূত্রে খবর, সন্দেশখালিতে ইডি অফিসারদের উপর হামলার ঘটনায় ন্যাজাট থানায় দু’টি এফআইআর (৮ ও ৯ নম্বর) দায়ের হয়েছিল। এছাড়া বনগাঁ থানায় আরও একটি এফআইআর (১৮ নম্বর) দায়ের হয়। ওই মামলার প্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ।
হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়ে মঙ্গলবারই সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানায় রাজ্য। কিন্তু, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না তাতে সাড়া দেননি। প্রক্রিয়া মেনে মামলা হবে বলে জানানো হয়। বুধবার প্রক্রিয়া মেনে আবেদন হলেও রাজ্যের আবেদনে সাড়া দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখে।