Advertisment

Saraswati Temple: চার হাতের অভিনব দেবী মূর্তি, পুজোর দিনে সরস্বতী মন্দিরের এলাহি আয়োজন তাক লাগাবে

singur saraswati temple : সাধারণত আমাদের এখানে বিনাপানি দেবীর দুই হাত হয় কিন্তু বাংলার বাইরে চারহাতের দেবীও দেখা যায়। চার হাতের প্রসঙ্গে অনেকে বলেন, দেবীর চার হাত নাকি মানুষের মন, বুদ্ধিবৃত্তি, সচেতনতা ও অহমের প্রতীক।

author-image
Uttam Dutta
New Update
singur saraswati temple

চার হাতের অভিনব দেবী মূর্তি, পুজোর দিনে সরস্বতী মন্দিরের এলাহি আয়োজন তাক লাগাবে। ছবি: উত্তম দত্ত।

রাজ্যে খুব একটা নেই বললেই চলে, কিন্তু হুগলি জেলার সিঙ্গুরে আছে। সিঙ্গুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাগপাড়া গ্রামে আছে দেবী সরস্বতীর একটি সুন্দর মন্দির। সদ্য গড়ে উঠেছে। এবার গ্রামের কচিকাঁচারা সেখানেই বাগদেবীর আরাধনায় মেতে উঠেছিল। আসলে ওই গ্রামে বছর দুয়েক আগে একটি অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্রের উদ্বোধন হয়েছিল। সেই অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্রে একটি সুদৃশ্য পাকা মন্দির ও সেই সময় তৈরি হয়। আর এবছর সোমবার সেই মন্দিরে ই নিষ্ঠা সহকারে পুজোর সামিল হল কচিকাঁচারা। 

Advertisment

সকালে পুষ্পাঞ্জলি , দুপুরে খিচুড়ি, আলুভাজা, বোঁদে সহযোগে   মধ্যাহ্নভোজ। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে তাদের অভিভাবকরাও ছিলেন। এখানকার সরস্বতী দেবীর মূর্তি একটু বিশেষ ধরনের। এখানে দেবীর হাত চারটি। মূর্তি সাদা পাথরের। 

সাধারণত আমাদের এখানে বিনাপানি দেবীর দুই হাত হয় কিন্তু বাংলার বাইরে চারহাতের দেবীও দেখা যায়। চার হাতের প্রসঙ্গে অনেকে বলেন, দেবীর চার হাত নাকি মানুষের মন, বুদ্ধিবৃত্তি, সচেতনতা ও অহমের প্রতীক। কারও কারও মতে, সরস্বতীর চার হাত ঋক, সাম, যজুঃ ও অথর্ব— এই চার বেদেরও প্রতীক। 

তবে সাধারণত উত্তর ভারতেই দেবীর এই ছবি বা মূর্তি পূজিত হয়। এ প্রসঙ্গে এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য শ্রীকান্ত বাগের অবদানের কথা বলতেই হয়। একটা সময় এই অঙ্গন ওয়ারী কেন্দ্রের কোন স্থায়ী ঠিকানা ছিল না। ২০১৬ সালে মূলত তাঁরই উদ্যোগে একটি আড়াই কাঠা জমি কয়েকজনের নামে রেজিস্ট্রি হয়। এর পরের ধাপে স্থানীয় বিধায়ক বেচারাম মান্নার বিধায়ক ফান্ড থেকে সাড়ে দশ লক্ষ টাকা মঞ্জুর হয় ওই জমিতে স্কুলঘর তৈরি করার জন্য। কয়েক বছর সময় লাগে সম্পুর্ন হতে। 
 
এরপর স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত ১ লাখ টাকা দেয় ওই  অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের চারিদিকে পাঁচিল এবং সোলার প্যানেলের জন্য। এরপর গ্রামবাসীদের আর্থিক সহযোগিতায় সেখানে এই সরস্বতী মন্দির ও গড়ে ওঠে। আর এইসব কর্মকান্ডের মধ্যে সক্রিয় ভূমিকা নেন শ্রীকান্ত। তিনি জানান, আমরা এই দেবীর মূর্তি আনিয়েছি সূদুর রাজস্থানের জয়পুর থেকে। ভিয়েতনাম পাথরের এই মায়ের মূর্তি।   দুই ফুটের সাদা ধপধপে মূর্তি। ওনারা ওনাদের মতো দেবীর চারহাত করে ফেলেছেন আমরা আর বারণ করিনি। 

Advertisment

এছাড়া আমাদের এই মন্দিরের কোন চূড়া নেই তথাকথিত মন্দিরের মতো। আছে ঘট, আমের ছড়া এবং ডাব। যা দেবীর পূজার অন্যতম অংশ। সব কিছুই কংক্রিটের তৈরি। সঙ্গে পুস্তক দেওয়ারও ইচ্ছা ছিল মন্দিরের মাথায় তবে হয়নি। পরিবর্তে দেবীর হাতে আছে পুস্তক। ৬ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা এখানে এসে জীবনের প্রথম পাঠ শেখে এখানে। প্রায় গোটা ত্রিশেক শিশুদের নিয়ে একজন দিদিমণি শিক্ষাদান করেন তাঁকে সহযোগিতা করেন আরও একজন। 

ছবির মতো সাজানো এই কেন্দ্রে রয়েছে একটি হলঘর,এটাচ বাথরুম, কিচেন এবং ওয়াশরুম।আর প্রবেশের দ্বারে দেবী সরস্বতীর মন্দির। শ্রীকান্ত জানান, গ্রামে অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্র হলো শিশু শিক্ষার আঁতুরঘর। শুরু থেকেই বাচ্চাদের মনে চেতনাবোধ আনতে হবে। তাই এখানে নিয়ম হলো প্রবেশ করেই দেবী সরস্বতীকে করজোড়ে প্রণাম করে প্রার্থনা করতে হবে। পড়াশোনার শুরুটা হবে বিদ্যাদেবী কে প্রণাম করেই। আগামী দিনে এই গ্রামের শিশুরা যাতে সমাজে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে তার জন্যেই আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। জানান শ্রীকান্ত।

Saraswati Puja
Advertisment