যিনি চড় খেলেন সেই বিজেপি নেতার নামেই থানায় মারধরের মামলা রুজু। কিন্তু যিনি চড় মারলেন ঘটনার ২ দিন পরেও সেই তৃণমূলকর্মীর নাগাল পেল না পুলিশ। উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের এই ঘটনা নিয়ে পদ্ম-জোড়াফুলে চাপানউতোর তুঙ্গে উঠেছে। 'গোটা রাজ্যে তৃণমূল দখলদারি কায়েম করেছে', দত্তপুকুরের চড়-কাণ্ডে সোচ্চার বিজেপি। 'গন্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করছিলেন বিজেপি নেতা, তৃণমূলকর্মীর থানায় অভিযোগ করাটা তো স্বাভাবিক।' চড়-কাণ্ডে পাল্টা সংবাদমাধ্যমে বললেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্যজুড়ে জনসংযোগ কর্মসূচিতে ব্যস্ত তৃণমূল। গ্রামে-গ্রামে ঘুরছেন দিদির দূতেরা। 'দিদির সুরক্ষাকবচ' কর্মসূচিতে বেরিয়ে প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। ‘দিদির দূত’ হয়ে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ গিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে।
ইছাপুর-নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের সাউবনায় জনসংযোগ কর্মসূচিতে এলাকার তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে নিয়েছিলেন মন্ত্রীমশাই। তবে মন্ত্রী গ্রামে পৌঁছতেই এলাকার নানা সমস্যা নিয়ে সোচ্চার হন বাসিন্দারা। বেহাল রাস্তা নিয়ে মন্ত্রীর সামনেই ক্ষোভে ফেটে পড়তে দেখা যায় বাসিন্দাদের কয়েকজনকে। এরই মধ্যে এক তৃণমূল কর্মী এগিয়ে এসে সপাটে চড় কষান অভিযোগকারীকে। আক্রান্ত ব্যক্তি স্থানীয় বিজেপি মণ্ডল সভাপতি।
আরও পড়ুন- ফিরল শীতের শিরশিরানি, ফের ঠান্ডার চার-ছক্কা কবে থেকে দেখবে বাংলা?
ঘটনার পর তুমুল হুলস্থূল তৈরি হয়। চড় মারায় অভিযুক্ত তৃণমূলকর্মী শিবম রায়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। জামিনযোগ্য ধারাতেই মামালা রুজু করে দত্তপুকুর থানার পুলিশ। যদিও ঘটনার পর ২ দিন কেটে গেলেও এখনও খোঁজ নেই অভিযুক্ত তৃণমূলকর্মী শিবম রায়ের। এরই মধ্যে সেদিন যাঁকে চড় মারা হয়েছিল সেই বিজেপি নেতা সাগর বিশ্বাসের নামেই এবার থানায় মারধরের অভিযোগা দায়ের করেছেন এক তৃণমূলকর্মী। যা নিয়ে তৃণমূল-বিজেপিতে চাপানউতোর তুঙ্গে উঠেছে।
দত্তপুকুরের চড়-কাণ্ডে আক্রান্তের বিরুদ্ধেই থানায় অভিযোগা দায়ের হওয়ায় ফুঁসছে বিজেপি। গেরুয়া দলের রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য সংবাদমাধ্যমে বলেন, 'গোটা রাজ্যে তৃণমূল দখলদারি কায়েম করেছে। এই চিত্র প্রকট হচ্ছে গোটা পশ্চিমবঙ্গে। এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছেন। দেরিতে হলেও মানুষ মুখ খুলেছেন। এই রক্ষাকবচ তৃণমূলের উত্তরণ ঘটাতে পারবে না। কালের নিয়মে তৃণমূল স্বাভাবিক মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবে।'
আরও পড়ুন- FD-তে ৮.৩০% পর্যন্ত সুদ, ৪ সরকারি ব্যাঙ্কের তাক লাগানো স্কিম সম্পর্কে জানুন
অন্যদিকে, দত্তপুকুরের এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সংবাদমাধ্যমে বলেন, 'বিজেপির ওই নেতা সেখানে কেন গিয়েছিলেন? যে তৃণমূলকর্মী চড় মেরেছেন তিনি অন্যায় কাজ করেছেন। দল সেটা সমর্থন করে না। কিন্তু গন্ডগোল করার জন্য অন্য দলের নেতা যদি অসভ্যতা করেন তবে তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের নেতা অভিযোগ করেবেন এটা তো স্বাভাবিক ব্যাপার। এই কর্মসূচিতে মানুষের অভাব-অভিযোগ আমরা শুনছি। মন্ত্রীরাও শুনছেন। সেখানে উস্কানিমূলক কাজ করে গন্ডগোলের চেষ্টা করলে তৃণমূলকর্মীর অধিকার নেই বিজেপির সেই নেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করার? বিজেপি নেতা ওখানে কী করছিলেন?'