মাত্রাছাড়া গরম দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। জেলায়-জেলায় তাপপ্রবাহ (Heat Wave)। শহর কলকাতায় বইছে লু (Loo)। প্রচণ্ড গরমে নাজেহাল আট থেকে আশি। অস্বস্তিকর এই পরিবেশ থেকে পরিত্রাণ পেতে অনেকেই নিজেদের মতো করে সুস্থ থাকার চেষ্টা করে চলেছেন। তাতে কিছুটা রিলিফ মিলছে ঠিকই, তবে এব্যাপারে একজন বিশিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া একান্তভাবে জরুরি। তা না হলে বাড়ির বাচ্চা কিংবা বয়স্ক মানুষদের এই জ্বালাপোড়া গরম থেকে মুক্তি দিতে যে পন্থা আপনি নিচ্ছেন তাতে কিন্তু হিতে বিপরীত হতে পারে।
এক কথায় এযেন আগুন ঢালছে সূর্য। দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই চরম তাপপ্রবাহের (Severe Heat Wave) সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। বিশেষ প্রয়োজন না থাকলে এই পরিস্থিতিতে সকাল ১১টা থেকে ৪টে পর্যন্ত ঘরে থাকতেই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে কাজের প্রয়োজনে কিংবা স্কুল-কলেজ যেতে গেলেও অনেককেই বাড়ির বাইরে পা রাখতেই হচ্ছে। সাম্প্রতিক এই দাবদাহের পরিস্থিতি থেকে কীভাবে নিজেকে এবং নিজের আপনজনদের সুস্থ রাখবেন? সেব্যাপারেই মূল্যবান কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক শ্বাশ্বত আচার্য।
জামাকাপড় ও পানীয়:
চিকিৎসকের মতে, বাচ্চা-বয়স্ক-সহ প্রত্যেকেরই এই গরমে সুতির জামাকাপড় ব্যবহার করা উচিত। বাড়ির বাইরে বেরোতে হলে জল সঙ্গে রাখা জরুরি। এক্ষেত্রে বাড়ির জল কিংবা বাড়িতে তৈরি নুন-চিনির জল, গ্লুকোজের জল চলবে। রাস্তার ধারের দোকানের সরবত, ফলের রস না পান করাই ভালো। বাড়িতে তৈরি সরবত পান করুন। বাজারজাত জুস, কোল্ড ড্রিংক এড়িয়ে চলাই উচিত।
রোদ থেকে এসেই স্নান কিংবা বারবার স্নান এড়িয়ে চলুন:
গরমের অস্বস্তি থেকে বাঁচতে অনেকেই বাড়ি ঢুকে আগে স্নানে যান। চিকিৎসকের মতে, এই প্রবণতা এড়িয়ে চলাই ভালো। রোদ থেকে এসেই স্নান করবেন না। একটু সময় নিয়ে তারপর স্নানে ঢুকুন। গরম থেকে স্বস্তি পেতে অনেকেই আজকাল দিনে ৫-৬ বার কিংবা তারও বেশি বার স্নান করছেন। এব্যাপারে চিকিৎসকের মত হল, খুব গরম লাগলে গোটা শরীর ভেজা গামছা কিংবা অন্য কাপড় দিয়ে মোছা যেতে পারে। বারবার স্নান করলেই গরম কম অনুভূত হবে ব্যাপারটা এমন নয়। বাড়ির মূল যে জায়গাটিতে একটু ঠান্ডা সেখানেই থাকুন।
AC-র তাপমাত্রা কত রাখা উচিত?
গরম থেকে মুক্তি পেতে গত কয়েক বছরে AC-র চাহিদা বিপুলভাবে বেড়ে গিয়েছে। এসি এখন আর 'বাহুল্যতা' নেই, দিন যত এগোচ্ছে ততই যেন এটি অপরিহার্য্য হয়ে উঠছে। তবে বাড়িতে AC চালালে তার তাপমাত্রাও ঠিকঠাক রাখতে হবে, তা না হলেই শরীর বিগড়োতে পারে। এই সময়ে AC ঘরে খুব দ্রুত ঢোকা-বেরনো যাবে না। AC-র তাপমাত্রা ২৭-২৮-এর মধ্যে রাখতে হবে।
কোন কোন খাবার খাবেন?
বাচ্চা-বয়স্ক-সহ প্রত্যেককেই সহজপাচ্য খাবার খেতে হবে। মরশুমী ফল যেমন তরমুজ শসা, জামরুল খাওয়া যেতে পারে। টক দই, হালকা ডাল খেতে পারেন। পটল, ঝিঙে, আমের টক খাওয়া যাতে পারে।
আরও পড়ুন- Digha Summer Special Train: আরও সহজে দিঘা! স্পেশাল ট্রেনের ছড়াছড়ি, কবে-কখন-কোথা থেকে ছাড়ছে ট্রেন?
প্রেশারের রোগীদের প্রতি বিশেষ সতর্কবার্তা:
বিশেষ করে বয়স্ক প্রেশারের রোগীদের এই গরমে ব্লাড প্রেশার আরও বেড়ে যেতে পারে। প্রচণ্ড ঘাম হলেই এই আশঙ্কা থাকে। এক্ষেত্রে নিয়মিত প্রেশার পরিমাপ করা প্রয়োজন। দরকারে প্রেশারের ওষুধের ডোজ কমানো যেতে পারে। তবে সবটাই চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই করুন।