North Bengal: একটি আসন খোয়ালেও বিধানসভা নির্বাচনের পর এবার লোকসভা ভোটেও উত্তরবঙ্গই (North Bengal) শক্তি জুগিয়েছে BJP-কে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদা। এই ৭ জেলায় BJP-র সাংগঠনিক শক্তি দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় অনেকটা বেশি। দক্ষিণবঙ্গে ব্যতিক্রম শুধু পূর্ব মেদিনীপুর। উত্তরবঙ্গে একচেটিয়া শক্তি কায়েম রাখতে মরিয়া বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এবার সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) কথায় সুর মেলালেন বিজেপির অন্য সাংসদরা।
বঙ্গ বিজেপি সভাপতি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার উত্তর পূর্ব উন্নয়ন উন্নয়ন মন্ত্রকের সঙ্গে উত্তরবঙ্গকে জুড়ে দিতে আবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Narendra Modi)। "অনুন্নত উত্তরবঙ্গে উন্নয়ন বৃদ্ধি ভাবে পাবে। এই অঞ্চলের অর্থ বরাদ্দ বাড়বে। রাজ্য সরকারও বাধা না দিয়ে সহযোগিতা করবে।" এমনই মনে করেন বালুরঘাটের সাংসদ। এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষন করেছেন বিজেপির রাজ্যসভার অনন্ত মহারাজ, দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা।
এর আগে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের দাবি করেছিলেন। বঞ্চিত, পিছিয়ে পড়া উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন চাই, এটাই বিজেপির দাবি। কোচবিহারকে আলাদা রাজ্যের দাবিতে অটল অনন্ত মহারাজ। তাঁর বক্তব্য, গ্রেটার কোচবিহার হবে বলে কমিটমেন্ট করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
আরও পড়ুন- Kultali News: সুড়ঙ্গের হদিশ মিলেছিল আগেই, এবার সাদ্দামের বাড়িতে ঢুকতেই সাংঘাতিক অভিজ্ঞতা পুলিশের!
উত্তরবঙ্গ যে রাজ্যের থেকে পৃথক অবস্থানে আছে একথা বরাবর দাবি করে আসছে বিজেপি। যদিও বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, "বাংলা একটাই। তাঁরা বাংলা ভাগের পক্ষে নয়।" একসময় রাঢ় বাংলা নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি তুলেছিলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য, উত্তরবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দিবাস্বপ্ন দেখছেন সুকান্ত মজুমদার। যা কোনওভাবেই সম্ভব হয়। এমন করতে চাইলে বিজেপি এখানে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। অবিভক্ত বাংলা একইরকম থাকবে। উত্তরবঙ্গ বা দক্ষিণবঙ্গ নয়, পুরোটাই পশ্চিমবঙ্গ। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এই ভাগের স্বপ্ন দেখছে। অর্থাৎ কোনও মূল্যেই বাংলা ভাগ হতে দেবে না তৃণমূল কংগ্রেস।
উন্নয়নের জন্য উত্তরবঙ্গ উত্তরপূর্বের সঙ্গে জুড়ে যাওয়ার দাবিতে সোচ্চার বিজেপি। আবার উত্তরবঙ্গের বিজেপি নেতাদের কেউ কেউ পৃথক রাজ্য নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। উত্তরবঙ্গবাসীদের একটা বড় অংশ মনে করেন, তাঁদের বছরের পর বছর অবহেলা করা হচ্ছে। একটা এইমস পর্যন্ত ছিনিয়ে নিয়েছে দক্ষিণবঙ্গ। কলকাতা বা দক্ষিণবঙ্গ কেন্দ্রীক রাজ্যের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়েছে বলে উত্তরবঙ্গবাসীর বড় অংশের ক্ষোভ রয়েছে।
আরও পড়ুন- Cultivation: নামমাত্র খরচে অল্প দিনেই মোটা টাকা আয়! ক্রমেই বিপুল জনপ্রিয় এই চাষ
রাজনৈতিক মহলের মতে, উত্তরবঙ্গের মানুষের "সেন্টিমেন্ট"-এ নাড়া দিতে চাইছে বিজেপি। উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি রয়েছে সুকান্ত মজুদারের গলায়। উত্তরপূর্ব উন্নয়ন মন্ত্রকের অন্তর্ভুক্তি হলে রাজ্যের সাহায্য ছাড়া উত্তরবঙ্গে অর্থ বরাদ্দ হবে। সেক্ষেত্রে রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার থাকলেও পৃথক ভাবে সেখানকার উন্নয়নমূলক কাজ করবে উত্তর পূর্ব উন্নয়ন মন্ত্রক। স্বভাতই সেই উন্নয়নের ক্রেডিট যাবে মোদী সরকারের কাছে। ঘুরেফিরে উত্তরবঙ্গ ফের আলোচনার শিরোনামে।