Advertisment

Special: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বাগদার উপেনের 'রঞ্জন' কাহিনী ভয়ঙ্কর ওপেন সিক্রেট

রঞ্জন তথা চন্দন মণ্ডলের নাম প্রকাশ্যে আসতেই সে পলাতক। রঞ্জন ইস্যুতে মুখে কুলুপ গ্রামবাসীদেরও।

author-image
Joyprakash Das
New Update
ssc teacher recruitment irregularity bagda chandan mandal ranjan upen biswas cbi

বাঁদিকে, বেপাত্তা চন্দন মণ্ডল ওরফে রঞ্জন। ডানদিকে, বাগদায় তাঁর প্রাসাদপম বাড়ি। ছবি: গৌতম মণ্ডল।

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটা তার থেকে মামা-ভাগ্নে গ্রামের দূরত্ব মেরে-কেটে এক-দেড় কিলোমিটার। বাগদার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাসের 'রঞ্জন' ওরফে চন্দন মণ্ডলের দৌলতে এই গ্রাম রাতারাতি বাড়তি পরিচিতি পেয়ে গিয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানার এই গ্রামের লোকজন চন্দন প্রসঙ্গে রীতিমতো মুখে কুলুপ এঁটেছে। গ্রামের শিক্ষকদের আশঙ্কা তাড়া করে বেড়াচ্ছে পাছে লোকে রঞ্জনের কোটায় চাকরি পেয়েছে না বলে বেড়ায়। তবে এক-দেড় মাস আগে থেকেই রঞ্জন বাড়ি ছেড়ে গা-ঢাকা দিয়েছে।

Advertisment

উপেন বিশ্বাস ফেসবুক পোস্টে বাগদার রঞ্জনের (কল্পিত নাম) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর থেকেই মামা-ভাগ্নে গ্রামও প্রচারে চলে আসে। জানা গিয়েছে, রঞ্জন তথা চন্দন মণ্ডলের নাম প্রকাশ্যে আসতেই সে পলাতক। বুধবার হাইকোর্ট চন্দন মণ্ডল নিয়ে নির্দেশ দিয়েছে। চন্দনবাবুর পরিবারের লোকেদের একটাই বক্তব্য, তিনি বেশ কয়েকদিন ধরেই বাড়িতে নেই। কোথায় আছেন তা-ও জানেন না বলেই দাবি পরিবারের সদস্যদের। এর বাইরে একটি কথা বলছেন না পরিবারের সদস্যরা। শুধু তাঁর পরিবারের সদস্যরা নয়, গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাই এই ইস্যুতে কোনও মন্তব্য করতে চাইছেন না। বিশেষত এই এলাকায় বসবাসকারি সরকারি পোষিত স্কুলের প্রাইমারি বা হাইস্কুলের শিক্ষকরা নিজের নাম বলতেও দ্বিধাবোধ করছেন।

উপেনবাবুর রঞ্জন তথা চন্দন নিয়ে বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক দুলাল বর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'চন্দন আগে সিপিএম করত। পরবর্তীতে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে তৃণমূলের সক্রিয় সদস্য হয়েছে। আজ থেকে ৫ বছর আগে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বা অন্য কারও হাত ধরে সদস্য হয়েছে। সেটা ওর নিজের মুখ থেকে শোনা। আর ঘুষ দেয় যে সে তো গোপনেই দেয়। ইদানিং উপেনবাবু বলার পর বিষয়টা সামনে এসেছে। উপেন বিশ্বাস সব জানেন। উনি সহযোগিতা করলে মামলার ফয়সালা হবে।' কত লোকের চাকরি হয়েছে? প্রাক্তন বিধায়কের বক্তব্য, 'শুনেছি ৫০ থেকে ১০০ জনেরও চাকরি হতে পারে। অযোগ্য লোক চাকরি পেয়েছে। টাকা দিয়ে চাকরি হয়েছে এটা শুনেছি। কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় স্থানীয় শিক্ষক সংগঠনের কালীপুজোতে এসেছিলেন। তবে চন্দনের পুরো বিষয়টা বাগদা থানার ডিআইবি বা ওসি বলতে পারবে।'

আরও পড়ুন- খিচুড়ির পাতে কিলবিল করছে সাপের বাচ্চা, শিশুদের খাইয়ে আত্মারাম খাঁচা ছাড়ার জোগাড়!

জানা গিয়েছে, বছর চুয়ান্নর চন্দন মন্ডল স্থানীয় স্কুলের প্যারাটিচার। তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ে। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। মামা-ভাগ্নে মাহিষ্য পাড়াতে এখন একটাই চর্চা-চন্দন। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দার বক্তব্য, গ্রুপ ডি, গ্রুপ সি, প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি, হাইস্কুলে চাকরিচক্র নিয়ে চন্দনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। একই বাড়ির মা-মেয়েও স্কুলে চাকরি পেয়েছে। ওর বাড়িটা প্রায় অফিস হয়ে গিয়েছিল।

প্রতিদিন গড়ে ২৫-৩০ জন ওর বাড়িতে আসত। কেন আসতো এটাও বড় প্রশ্ন। কয়কেশো লোকের কাছ থেকে বায়না নিয়ে রেখেছে বলেও ওই ব্যক্তি দাবি করেছেন। এসএসসি নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশের পর যদিও কেউ স্বীকার করছে না। তবে রঞ্জন তথা চন্দনের কার্যকলাপ দীর্ঘ দিন ধরে বাগদায় ওপেন সিক্রেট বলেই স্থানীয়দের দাবি। ইতিমধ্যেই এই রঞ্জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে সিবিআই।

আগেই তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল শেঠ জানিয়ে দিয়েছেন, চন্দন মণ্ডল কোনওদিন তৃণমূল কংগ্রেস করত না। বরং ও আগে সিপিএম করত। ওর সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও সম্পর্ক নেই।

West Bengal SSC recruitment WB SSC Scam
Advertisment