ভোররাতে ঘটে গিয়েছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। তবুও তাল কাটেনি কচুয়ার। সকাল থেকেই কাতারে কাতারে পুণ্যার্থী ভিড় জমিয়েছেন কচুয়াধামে। লক্ষ্য একটাই, জন্মাষ্টমীর পূণ্যলগ্নে লোকনাথবাবার দর্শনলাভ। এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে গেলেও প্রতিবছরের মতো এবারও সেই চেনা থিকথিকে ভিড়ের ছবিই ধরা পড়ল কচুয়ার লোকনাথধাম মন্দিরে। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় ‘মন খারাপ’ হয়েছে পুণ্যার্থীদের। কিন্তু তাবলে তাঁরা পিছু হঠেননি। দুর্ঘটনার পরও মন্দিরমুখো হয়েছেন হাজার হাজার পুণ্যার্থী। কেউ টিভিতে খবর পেয়ে জেনেছেন, কেউবা আবার কচুয়াধামে এসেই দুর্ঘটনার খবর নিয়েছেন। কেউ তো আবার মন্দির দর্শনের পাশাপাশি দুর্ঘটনাস্থলও সরেজমিনে চাক্ষুষ করছেন। এসবের মধ্যেই মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে মাইকে ঘোষণাও চলছে। সব দেখে বুঝে ওঠবার জো নেই যে, এ এলাকাতেই ভোররাতে পদপিষ্ট হয়েছেন প্রায় ৩০ পুণ্যার্থী, এরমধ্যে ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ জন।
স্বরূপনগরের বাসিন্দা পারমিতা হালদার ছোটোবেলা থেকেই এই দিনে কচুয়াধামে আসেন। এবারও সেই রীতির অন্যথা হয়নি। তিনি বললেন, ‘‘খারাপ লাগছে খবরটা শুনে। তবে এসেছি। সবাই বলছেন, সাবধানে যেতে। পুজো দিয়েছি’’। দুর্ঘটনার খবর জানতেন না হাসনাবাদের নাড়ুগোপাল রায়। তিনি বললেন, ‘‘এখানে এসে শুনলাম ঘটনাটা। খারাপ লাগছে ’’। নাড়ুগোপালের মতো মন্দিরে পা রেখেই দুর্ঘটনার খবর পেয়েছেন প্রবীর দাস নামে আরেক পুণ্যার্থী। কেউ কেউ আবার বলছেন, ‘‘খারাপ তো লাগছেই। কিন্তু পুজো তো দিতেই হবে। এখানে আসতে তো হবেই’’।
দুর্ঘটনাস্থল, ভেঙে পড়েছে দোকান। এক্সপ্রেস ফটো: জয়প্রকাশ দাস।
অনেক পুণ্যার্থীকেই এদিন দেখা গিয়েছে লোকনাথ দর্শনের পর দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখতে। ভাঙা পাঁচিল, ভেঙে পড়া অস্থায়ী দোকানের চিহ্নও খতিয়ে দেখতেও মানুষের ভিড় চখে পড়ার মতো। অনেকেই এদিন দুর্ঘটনাস্থলের সামনে গিয়ে কয়েক সেকেন্ড দাঁড়িয়ে থেকেছেন।
তবে সকাল থেকে বেলা গড়াতে ভিড় যেন আরও বেড়েছে। মন্দিরে প্রবেশের লাইনও ক্রমশ দীর্ঘ হয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষই এসেছেন এদিন। পুজো দেওয়ার পর মন্দির চত্বরে বিভিন্ন পসরা সাজানো দোকানগুলিতে বিকিকিনিও চলছে দেদার। হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে এ দুর্ঘটনা যে কচুয়াধামে জন্মাষ্টমীর আনন্দ ম্লান করতে দেয়নি, তারই ছবি উঠে এসেছে দুপুর পর্যন্ত।