ফের একবার সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের মুখে শোনা গেল শুভেন্দু অধিকারীর নাম। যা তুলে ধরে বিরোধী দলনেতাকে গ্রেফতারের দাবি জানাল তৃণমূল। নিশানা করা হল রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কেও। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের তোপ, 'এরপরও শুভেন্দুকে গ্রেফতার করা না হলে বুঝব রাজ্যপাল তাঁকে সুরক্ষা দিচ্ছেন।'
শুক্রবার বিধানগরের এমপি-এমএলএ আদালতে একটি মামলার শুনানিতে হাজিরা দিতে এসেছিলেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন। আদালত থেকে বের হওয়ার সময়ে সুদীপ্ত সেন বলেন, সিবিআইয়ের ডিরেক্টরকে একটি চিঠি দিয়েছিলাম আমি সেখানেই সব বিস্তারিত লেখা রয়েছে। আমি তাতে শুভেন্দু অধিকারীর নাম লিখেছিলাম।'
এরপর একের পর এক প্রশ্নের জবাবে সুদীপ্ত সেন বলতে থাকেন, 'শুভেন্দু অধিকারী অনেকবার টাকা নিয়েছিল। টাকার জন্য উনি আমায় ব্ল্যাকমেল করতেন। একটা জমির স্যাংশন প্ল্যানের ব্যাপার ছিল।'
সুদীপ্ত সেনের এই বক্তব্যই লুফে নেয় জোড়া-ফুল শিবির। মেট্রোপোলিটানের দলীয় দফতরে এ ইস্যুতে সাংবাদিক বৈঠক করেন কুণাল ঘোষ ও তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। তৃণমূলের তরফে প্রশ্ন, কী কারণে সারদা কর্ণধারের থেকে টাকা নিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী? সুদীপ্ত সেনের বয়ানের ভিত্তিতে তদন্তের স্বার্থে কেন বিরোধী দলনেতাকে গ্রেফতার করা হবে না? রাজ্যপাল কেন সুদীপ্ত সেনের দাবি নিয়ে নীরব?
প্রেসিডেন্সি জেল থেকে সিবিআই ডিরেক্টারকে লেখা প্রিজিনারস পিটিশনের কপি যা আদালতকে পাঠানো হয়েছিল তার সার্টিফায়েড কপি হাতে নিয়েই এ দিন কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'সারদা কর্তা স্পষ্ট বলেছেন কতবার, কীভাবে, কে, কত টাকার জন্য তাঁকে ব্ল্যাকমেল করেছেন। সারদায় বহু মানুষ প্রতারিত। এটা বড় দুর্নীতি। কিন্তু অভিযুক্ত বলা সত্ত্বেও কেন শুভেন্দু অধিকারী গ্রেফতার হবেন না? সে আজ বিজেপির দরজায় বাঁধা কুকুরের মত ঘেউ ঘেউ করছে। শুভেন্দু জানেন এই অভিযোগগুলো ঠিক। সুদীপ্ত সেন লিখিছিলেন যে রহস্যজনকভাবে তিনি উধাও হয়ে যাওয়ার আগে শুভেন্দু তাঁর কাছে গিয়েছিল। শুভেন্দু দেখা করেছিল। তাই শুভেন্দু ইডি, সিবিআই থেকে বাঁচতে বিজেপিতে গেছে। শুভেন্দুর নাম এফআইআরে রয়েছে। তাহলে বিজেপি সিবিআইকে ভোরে এ রাজ্যের মন্ত্রীদের বাড়ি পাঠায়, কেন শুভেন্দু বাড়ি নয়। নারদায় স্ক্রিন দেখিয়ে বলার পর যদি সিবিআই তদন্তে নামে, তাহলে এক্ষেত্রে হবে না কেন? শুভেন্দু প্রভাবশালী, তাঁকে হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করতে হবে। দেখা হোক কাঁথি পুরসভায় সারদার অ্যাকাউন্ট থেকে কোনও ব্যাংক ড্রাফ্ট কাটা হয়েছে কিনা। যদি হয় তবে নগদের অভিযোগও ঠিক।'
তাপস রায়ের দাবি, 'শুভেন্দু অধিকারীকে গ্রেফতার করে, হেফাজতে নিয়ে, সুদীপ্ত সেনের সামনে বসিয়ে ওকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।'
এরপরই তৃণমূল নেতৃত্ব নিশানা করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে। কুণাল ঘোষ বলেন, 'যে প্রতারণার কথা সামনে আসছে তার সত্যাসত্য কেন সিবিআই, ইডি খতিয়ে দেখবে না? চোর, ব্ল্যাকমেলার শুভেন্দুকে কেন রাজনৈতিক সুরক্ষা দিচ্ছেন রাজ্যপাল ধনকড়? কিসের বিনিময়ে এই সুরক্ষা তারও তদন্ত হওয়া উচিত। রাজ্যপালকে সুদীপ্ত সেনের চিঠির সার্টিফায়েড কপি ওনাকে পাঠাবো। আশা করব সেগুলি সিবিআই, ইডি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে পাঠাবেন। আর যদি না পাঠান তাহলে ধরে নেব এর সঙ্গে আপনিও যুক্ত।'
যদিও এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি বিরোধী দলনেতা।
আরও পড়ুন- ভাগ্য খুলে গেল ববিতার! পরেশ-কন্যার চাকরি ও ফেরানো বেতন পুরোটাই পাবেন মামলাকারী তরুণী