২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পর লাইন দিয়ে দলে দলে বিজেপি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে এসেছেন। বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বারংবার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন রাজনৈতিক মহলে। এর আগেও তিনি বিজেপিতে বিদ্রোহী হয়েছিলেন। তবে কি ফের দলবদল করতে চলেছেন একদা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি? এবিষয়ে সুজাতা মণ্ডল খাঁয়ের বক্তব্য, 'চেষ্টা করলেও হয়তো পাত্তা পাচ্ছেন না। উনি কখন ক'দিন কোন দলে থাকবেন সেটাই সব থেকে বড় কথা।' উনি, ওনার ও তিনি বলেই কাটিয়ে দিলেন সুজাতা, একবারও সৌমিত্রের নাম নেননি। সুজাতার মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া মেলেনি সৌমিত্রের থেকে।
সৌমিত্র খাঁ কি ফের দলবদল করতে পারেন?
সুজাতা: দেখুন, ওঁর সম্পর্কে আমি কথা বলতে আগ্রহী নই। ওঁর মাঝে-মধ্যেই মস্তিস্ক বিকৃত হয়। উনি কখন কত দিন কোন দলে থাকবেন সেটাই সব থেকে বড় কথা। উনি ঘনঘন দলত্যাগ করেন। ওঁর ব্যাপারটা উনিই বলতে পারবেন। ওঁকে কোনও দলে নেওয়া হবে কিনা, জায়গা দেওয়া হবে কিনা, সেটাও একটা ব্যাপার। মানুষ তো অনেক কিছু চেষ্টা করে। সেই চেষ্টা সফল হবে কিনা সেটাই বিষয়।
কেন দলে বিদ্রোহ সৌমিত্রর?
সুজাতা: আমার মনে হয় উনি ওনার দলে জায়গা পাচ্ছেন না। হয়তো ওঁর দল ওঁকে নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছে। ও তো কংগ্রেস, তৃণমূল অনেককেই বিড়ম্বনায় ফেলেছে। এটা হয়তো তারই একটা নমুনা।
সৌমিত্রকে আপনি মস্তিস্ক বিকৃত বলছেন….
সুজাতা: ওঁর সম্পর্কে বেশি কথা বলা মানে গুরুত্বহীনকে গুরুত্ব দেওয়া। আমি এই গুরুত্ব দিতে চাই না। এগুলো হাসির উদ্রেক করে। এগুলো একপ্রকার পাগলামো। এগুলো সাইকোর একটা রূপ।
বিদ্রোহের অন্য কোনও কারণ আছে?
সুজাতা: ওঁর পেট কোনও দল ভরাতে পারবে না। ওঁর খিদে কেউ ভরাতে পারবে না। কারণ, আমার মনে হয় যোগ্যতার অতিরিক্ত পেয়ে যাওয়ার ফলে ওঁর এই বহিঃপ্রকাশ। তাছাড়া ওঁর দলে শান্তি-শৃঙ্খলা ঠিক মতো নেই। দলীয় অনুশাসনও নেই।
এর আগে তো কংগ্রেস, তৃণমূলেও ছিলেন সৌমিত্র….
সুজাতা: উনি এর আগেও যখন তৃণমূলে ছিলেন তখনও এরকমই কাণ্ডকারখানা ঘটিয়েছেন। আবার এখন বিজেপিতে একই প্রকার কাণ্ডকারখানা করছেন। এর আগ কংগ্রেসেও করেছেন। তাই ওঁর সম্পর্কে বলা মানে সময় নষ্ট করা, ওঁকে গুরুত্ব দেওয়া। যেহেতু উনি গুরুত্ব পাচ্ছেন না তাই উনি ভাবছেন মিডিয়াতে কিভাবে ভেসে থাকা যায়। আমি বেঁচে আছি এটার একটা প্রমাণ দেওয়া।
২০২১-এর নির্বাচনের পর তৃণমূলে ফিরে এসেছেন অনেকে…এটা কি কেউ ভেবেছিল…
সুজাতা: উনি জানেন আর দল জানে। এবিষয়ে আমার মন্তব্য না করাই সমীচিন। কারণ, যে বিষয়টা নিয়ে আমার আগ্রহ নেই সেই বিষয় নিয়ে মতামত প্রকাশ করাটা আমি প্রয়োজন বোধ করছি না। উনি কখন কোন দলে যাবেন, কোন দলে ঘাড় ধাক্কা খাবেন, কোন দলে ঢুকবেন এটা সম্পূর্ণ ওঁর ব্যাপার।
সম্পর্ক…
সুজাতা: ওঁর সম্পর্কে কি বলব। ডিভোর্স না হয়েও ডিভোর্স লিখে রাখেন। উনি দলে থেকেও দলের বিরুদ্ধে কথা বলেন। জায়গা পেলেও পেট ভরে না। ওঁর সম্পর্কে কি কথা বলব। ওঁর সম্পর্কে কথা বলা মানে নিজের রুচিহীনতা প্রকাশ পায়। কোথাও যে গুরুত্ব পায় না তাঁর সম্পর্কে বলে গুরুত্ব দিতে চাই না।
গত লোকসভা নির্বাচনে সৌমিত্র একমাত্র খন্ডঘোষে ঢুকতে পেরেছিলেন…
সুজাতা: ২০১৯-এ সেই সময় উনি একটা জায়গাতে ঢুকতে পেরেছিলেন, খন্ডঘোষ বিধানসভা। ওই বিধানসভায় উনি ব্যাপক ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। বাকি ৬টাতে ঢুকতেই পারেননি। তখন আমি ও দলের তৎকালীন নেতৃত্ব লড়াই করেছি। জনগণ তাঁকে বিশ্বাস করেছিল। কিন্তু জনগণের হয়ে কোনও কাজ করেনি। জনগণ এর জবাব দেবে।
তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কি কোনও চেষ্টা করছেন?
সুজাতা: উনি চেষ্টা করলেও নেওয়া হবে কিনা সেটাও তো একটা ব্যাপার। অনেকে অনেক কিছু চেষ্টা করে। উনি কোন দলে কখন ঢোকার চেষ্টা করছেন। সেই দলে ওনাকে নেওয়া হবে কিনা সেটাও তো একটা ব্যাপার। যদিও সেটা দলের সিদ্ধান্ত। বিজেপিতে কোনও গুরুত্ব পাচ্ছে না। এ দলেও হয়তো চেষ্টা করেছে পাত্তা পায়নি।