Advertisment

আজ সুপ্রিম কোর্টে কী হবে রাজীব কুমারের?

সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন মামলায় শুক্রবার রায় দেবে বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের অবসরকালীন বেঞ্চ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
rajeev kumar ips, রাজীব কুমার

কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার

বুধবার রাতে নির্দেশ জারি হয়, সিআইডি-র অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেলের পদ থেকে সরতে হবে তাঁকে। শুধু তাই নয়,  বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দপ্তরে হাজিরাও দিতে হবে। সেই নির্দেশ মতোই  দিল্লিতে উপস্থিত হয়েছিলেন কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার এবং বর্তমানে সিআইডি-র উচ্চপদস্থ আধিকারিক রাজীব কুমার। দশটায় নয়, দুপুর বারোটা নাগাদ। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। সদ্যপ্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন মামলায় শুক্রবার রায় দেবে বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের অবসরকালীন বেঞ্চ।

Advertisment


এর আগে এই মামলায় রায়দান স্থগিত রাখে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। তখন জানা গিয়েছিল, গ্রীষ্মের ছুটির পর আদালত খুললে জুলাই মাসের শুরুতে রায় দেবে বেঞ্চ। মামলার কেন্দ্রে রয়েছে বাংলায় সারদা-সহ বিভিন্ন ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার দুর্নীতির তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাজীব কুমারকে সিবিআই হেফাজতে নেওয়ার আবেদন।

সারদা এবং অন্যান্য সংস্থার দুর্নীতির তদন্তের উদ্দেশ্যে ২০১৩ সালে সিট গঠন করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, এবং পরিচালনার দায়িত্বে রাখা হয় রাজীব কুমারকে। ২০১৪-য় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই তদন্ত অধিগ্রহণ করে সিবিআই। ২০১৮ সালে সিবিআই অভিযোগ করে, তদন্ত সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ লোপাট অথবা নষ্ট করেছেন রাজীব কুমার, যার জেরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে তাঁকে চিঠি দেয় সিবিআই। গোয়েন্দা সংস্থার তরফে অভিযোগ, বারবার চিঠি পেয়েও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজিরা দেন নি রাজীব কুমার। যার ফলে এবছরের ৩ ফেব্রুয়ারি তাঁর সরকারি বাসভবনে পৌঁছয় সিবিআই-এর ৪০-সদস্যের একটি দল। কিন্তু ওই দলের কাছে পর্যাপ্ত অনুমতি না থাকায় কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে রাজীব কুমারের বাসভবনে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়।

Advertisment

rajeev kumar ips latest news মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্না মঞ্চে রাজীব কুমার। ফাইল ছবি: পার্থ পাল, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

তখনকার মতো তাঁর গ্রেফতারির ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট, কিন্তু এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি, এবং কেন্দ্রীয় সরকারের "অসাংবিধানিক পদক্ষেপের" বিরুদ্ধে কলকাতার মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ফেব্রুয়ারি মাসেই মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে ৪০ ঘন্টা ধরে সিবিআই-এর প্রশ্নের উত্তর দেন রাজীব কুমার।

এর পরেও তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা। উত্তরে আদালত প্রশ্ন তোলে, হেফাজতে নিয়ে কেন জেরা করতে চায় সিবিআই? এ ব্যাপারে আদালতে যথোপযুক্ত প্রমাণ দিতে হবে সিবিআইকে। সেই প্রমাণে আদালত সন্তুষ্ট হলে তবেই রাজীব কুমারের গ্রেফতারের নির্দেশ নিয়ে ভাববে আদালত।

এ মাসের গোড়ার দিকে মামলার শেষ শুনানির দিন রাজীব কুমারের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং দাবি করেন, সিবিআই এই তদন্তে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার দুর্নীতির প্রেক্ষিতে গঠিত দলের প্রতিদিনের তদন্তের দায়িত্বে রাজীব ছিলেন না। তিনি কেবল তার সামগ্রিক কার্যকলাপ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। ইন্দিরা বলেন, "দীর্ঘ চাকরিজীবনে রাজীব কুমার অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন। কর্মক্ষেত্রে কৃতিত্বের জন্য ২০১৫ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি পদক পেয়েছিলেন। অথচ ২০১৩ সালের একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে সিবিআই তাঁকে হেফাজতে নিতে চাইছে।"

বুধবারই তাঁকে অপসারণ করে আজ শুনানির দিন ধার্য করার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের গন্ধ পাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল। বুধবার রাতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, "রাজীব হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পাচার ধরত বলেই কি সরানো হল?" বৃহস্পতিবার ঘোষণার কোনও প্রতিক্রিয়া দেন নি মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisment