Sandeshkhali Rajeev Kumar and BP Gopalika: সংসদীয়-শুনানিতে আপাতত স্থগিতাদেশ জারি করল শীর্ষ আদালত। বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগের ভিত্তিতে লোকসভার স্বাধিকার রক্ষা কমিটি মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি-সহ পাঁচ আধিকারিককে তলব করে। সেই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া মামলায় সোমবার স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। চার সপ্তাহ বাদে ফের মামলার শুনানি হবে। আপাতত রাজ্যের মুখ্যসচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিকা এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার সহ তিন প্রশাসনিক কর্তাকে দিল্লি যেতে হচ্ছে না।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে প্রথমার্ধেই সংশ্লিষ্ট মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে। আইনজীবী কপিল সিব্বল প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালা এবং মনোজ মিশ্রের বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
আবেদনকারীদের পক্ষে উপস্থিত হয়ে, সিনিয়র অ্যাডভোকেট কপিল সিব্বাল দাবি করেছিলেন যে, সংসদের স্বাধিকাররক্ষা কমিটি 'রাজনৈতিক হাতিয়ার' হিসাবে কাজ করছে। সিব্বল বলেন, '১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। তাই এই অভিযোগ মিথ্যার উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। এই সংঘর্ষে, ৩৮ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন, এর মধ্যে আট মহিলা কর্মী। আর ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট দলের মহিলা সদস্যরাই সাংসদকে ধাক্কা দিচ্ছেন এবং তাতেই তিনি আহত হয়েছেন। আমরা ভিডিওটি এখানে দেখাতেও পারি।' সুকান্ত মজুমদার ওই এলাকার সাংসদ নয় বলেও আদালতে জানান কপিল সিব্বল।
রাজ্যের তরফে আইনজীবী সিব্বল বলেন, 'একজন সংসদ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। একজন সাংসদের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রিত।' অন্য আবেদনকারীর পক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ এম সিংভি বলেন, আদালতের কিছু অতীত রায়ের উল্লেখ করে সাংসদরে এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।' আবেদনকারীরা আরও বলেছিলেন যে, মুখ্যসচিব বা ডিজিপি বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না।
আরও পড়ুন- Sandeshkhali Unrest: সন্দেশখালির কোথায় যাবেন? ঠাঁই-ঠিকানা জানান শুভেন্দু, বলল হাইকোর্ট
লোকসভা সচিবালয়ের পক্ষে উপস্থিত হয়ে অ্যাডভোকেট দেবাশীষ ভারুখা জানান যে, অভিযোগটি স্পিকার ওম বিড়লা পেয়েছেন। বলেন, 'নিয়মের অধীনে, এটি স্বাধিকাররক্ষা কমিটির কাছে রেফার করা হয়েছিল। এটি ছিল স্বাধিকাররক্ষা কমিটির প্রথম বৈঠক। নোটিসে শুধুমাত্র বিষয়বস্তুর উপর প্রমাণের জন্য বলা হয়েছে। এটা এমন নয় যে, তাঁদের কোন কিছুর জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। এটি একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া, একবার স্বাধিকার কমিটি বিষয়টি নথিভুক্ত করা হলে, এটি কেবলমাত্র মৌখিক প্রমাণের উদ্দেশ্যে প্রাসঙ্গিক হতে পারে এমন লোকদেরই ডাকে। এটা প্রথম পর্যায়। কারুর দোষত্রুটিও ধরছে না। কিন্তু, ঘটনাটি হল যখন একজন সংসদ সদস্য একটি নোটিস পাঠান, তখন স্পিকার বিশ্বাস করেন যে সম্ভবত সেই নোটিসের সারবক্তা রয়েছে। ফলে সেটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। ফলে প্রক্রিয়া চলুক, এটা কাউকে আঘাত করবে না।'
আরও পড়ুন- Sandeshkhali Unrest: অশান্ত সন্দেশখালি, জনস্বার্থ মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ হাইকোর্টের
এরপরই শীর্ষ আদালত সংসদীয় নোটিসের উপর স্থগিতাদেশের দেয়। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নোটিস দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সন্দেশখালি যাওয়ার পথে গত বুধবার পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বালুরঘাট লোকসভার সাংসদ লোকসভার প্রিভিলেজ কমিটি তথা স্বাধিকার রক্ষা কমিটির কাছে অভিযোগ করেছিলেন যে, তাঁকে নৃশংস ভাবে মারধর করা হয়েছে। সাংসদ হিসাবে তাঁর যে মর্যাদা পাওয়ার কথা, সেই সুলভ আচরণ তাঁর সঙ্গে স্থানীয় পুলিশ বা প্রশাসন করেনি। সুকান্তর অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্যের ছয় প্রশাসনিক কর্তাকে ডেকে পাঠিয়েছিল দিল্লি।
আরও পড়ুন- Suvendu Adhikari: লালবাজারের তলব পেয়েই হাইকোর্টে শুভেন্দুর আইনজীবী, তুললেন বিস্ফোরক অভিযোগ
আগেই উত্তর ২৪ পরগনার জেলা শাসক শরদ দ্বিবেদী, জেলার পুলিশ সুপার হোসেম মেহেদি রহমান এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ ঘোষ দিল্লি না যাওয়ার বিষয়ে আগেই তাঁদের অপারগতার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। এরপর সোমবার দিল্লি যাচ্ছেন না বলে জানান মুখ্য সচিব ও ডিজি। নবান্নর তরফে সংসদীয় প্রিভিলেজ কমিটিকে তাঁদের সাক্ষ্য দেওয়ার দিনক্ষণ পিছিয়ে দেওয়ার কথা জানানো হয়।
নবান্ন জানায় যে মুখ্য সচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজি ব্যস্ত রয়েছেন। ৪ মার্চ জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ কলকাতায় আসছে। লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশাসনের প্রচুর কাজ রয়েছে। সঙ্গে সংসদীয় কমিটির নোটিসকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেন মুখ্য সচিব।