রামনবমীর মিছিল ঘিরে বৃহস্পতিবার অশান্ত হয়েছিল হাওড়ার শিবপুর। সেই রেশ শুক্রবারও। চলে বিক্ষোভ। শুরু হয় ইটবৃষ্টি। ইটের আঘাতে জখম হন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পাল্টা লাঠিচার্জ করে পুলিশ। র্যাফ নামিয়ে কোনও মতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। উত্তাল এই অবস্থার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ী করলেন বিরোদী দলনেতা। শুভেন্দু অধিকারীর সাফ কথা, 'বগটুই, সাগরদিঘির ভোট কমছে। সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক তৃণমূলের থেকে মুখ ফেরাচ্ছে। তাই এসবকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন মমতা ব্যানার্জী।'
বৃস্পতিবারের হিংসার ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৩৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, সরকারি কর্মীদের বাধা দেওয়া-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, 'সকলকে বলব শান্ত থাকুন। এনআইএ, সিবিআই তদন্ত চেয়ে আমি জনস্বার্থ মামলা করেছি। সম্ভবত সোমবার প্রথমদিকেই ওই মামলার শুনানি হবে। অবিলম্বে হাওড়ায় ৫ কোম্পানি সিআরপিএফ লাগু করতে হবে। ওখানে পেট্রোল বোমা ফেটেছে। দেশ বিরোধী কাজ চলছে। পুলিশ সামলাতে পারছে না। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেই পরিস্থিতি শান্ত রাখতে হবে।'
আরও পড়ুন- মুসলিমদের মমতার বড় বার্তা, ‘শান্ত থাকুন, আমার উপর ছাড়ুন’
বিরোধী দলনেতা এদিন বলেছেন, 'সব সংখ্যালঘুরা খারাপ নয়। যাঁরা এসব করছেন তাঁরা দেশদ্রোহী। একটা জায়গায় অশান্তি হচ্ছে, ফলে সরকলকে জড়াবেন না। ধৃত ৩৫ জনের মধ্যে ২৭ জন হিন্দু, বাকিরা সংখ্যালঘু। ধৃত সংখ্য়ালঘুরা হকার, দাঙ্গায় জড়িত নন। যাঁরা দাঙ্গা করছেন তারা তৃণমূলের লোক। সেম সেম মমতা।'
আরও পড়ুন- বন্দুক হাতে রাম নবমীর মিছিল! শিবপুরে অশান্তির পর ভিডিও টুইট অভিষেকের, বিজেপিকে তোপ
এর মধ্যেই একটি ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মীয় মিছিলে রিভলভার নিয়ে যোগ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। দু'টি ভিডিও টুইটে প্রকাশ্যে এনেছেন দলের দুই সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, মহুয়া মৈত্র এবং দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। টুইট করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বিজেপি অবশ্য, অভিযোগ অস্বীকার করে এটা তৃণমূলের ‘সাজানো’ বলে দাবি করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার বলেছেন, 'ত ৪৮ ঘণ্টা ধরে আমি হাতজোড় করে অনুরোধ করেছিলাম। শান্তিপূর্ণভাবে রামনবমী পালন করুন। বিজেপির এটা একটা প্ল্যান ছিল। যেমন করেই হোক দাঙ্গা লাগাতেই হবে। হাওড়ার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। হাওড়ার ওই জায়গায় কেন মিছিল নিয়ে গেছে? পুলিশি ব্যর্থতা একটা ছিলই। সংখ্যালঘুদের এলাকায় ইচ্ছা করেই ওরা ঢুকেছিল। রামজান মাসে ইচ্ছা করে হামলা করেছে। বন্দুক-অস্ত্র নিয়ে গিয়ে সরাসরি হামলা।'