আগে থেকে ফোন করে নিয়েছিলেন। যাতে দু'জনের মধ্যে দেখা হয়। ভাব বিনিময় হয়। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও কংগ্রেস নেতা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি। শুধু তাই নয়, এক সঙ্গে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সাংবাদিক বৈঠকও করলেন। 'নো ভোট টু মমতা', তৃণমূলকে উৎখাতের ডাক দিয়ে অন্যদের আহ্বান জানালেন বিজেপি ও কংগ্রেসের দুই নেতা।
এবার আর রাখঢাক গুড়গুড় নয়, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়ে দিলেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভের সঙ্গে যাতে সাক্ষাৎ হয় তাই আগে দু'জনের মধ্যে ফোনে কথা হয়েছে। ফোন না হলে যে তাঁদের মধ্যে দেখা হওয়ার সম্ভাবনাও কম ছিল। রাজনৈতিক মহলের মতে, মমতা সরকারকে হঠানোর লক্ষ্যে শুভেন্দু ও কৌস্তুভ দলীয় বাঁধ ভেঙে কাছাকাছি এসেছেন। লক্ষ্যনীয় যে বিজেপি ও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও এই দুই নেতার একযোগে লড়াইয়ে টু শব্টটিও করেনি। শুধু পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছে।
মমতা সরকার বিরোধী আন্দোলনে এখানে সকলকে আহ্বান জানাচ্ছেন শুভেন্দু ও কৌস্তুভ। বিরোধী দলনেতার পাশে দাঁড়িয়ে বিকল্প রাজনীতির কথা বলছেন কৌস্তভ। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, কৌস্তভের বক্তব্যকে সমর্থন করছেন বলেই পাশে থাকছেন শুভেন্দু। কি সেই বিকল্প রাজনীতি? রাজ্যে কি ফের কোনও বিরোধী বৃহত্তর জোটের পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছেন শুভেন্দু-কৌস্তভরা? ভিন রাজ্যে যাই হোক এখানে বিরোধী শক্তিকে এককাট্টা করতে মরিয়া তাঁরা। কংগ্রেস শূন্য ভারতের ডাক দেওয়া বিজেপি এখানে তৃণমূল সরকারকে হঠাতে এক সুরে কথা বলছে।
আরও পড়ুন- দর্শকের বিচারে বাংলার চার পুজোকে ‘দুর্গারত্ন’ পুরস্কার দেবেন রাজ্যপাল, তালিকায় রয়েছে কারা?
২০১১ বিধানসভা নির্বাচনে এসইউসিআই সহ নকশাল রাজনীতি করা একটা বড় অংশ তৃণমূল ও কংগ্রেসের জেটকে সমর্থন করেছিল। উদ্দেশ্য ছিল ৩৫ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে সমূলে উৎপাটন করা। নিজেদের নকশাল বলে বুক ফোলানো গায়ক থেকে 'বিজ্ঞ' অনেকেকেই তৃণমূল শিবিরে দেখা গিয়েছিল। শেষমেশ উৎখাত হয়েছিল বাম সরকার। ২০১১-এ সিপিএমের নক্ষত্র প্রার্থীদের লজ্জার হার হয়েছিল। জয়ের ব্যবধান এতই ছিল যে ভোট-রাজনীতির কথা ভুলে যাওয়ার যোগার! তখনকার তৃণমূল সহযোগীরা এখন বিরোধী শিবিরে।
বিরোধীরা এক হয়েছিল বামফ্রন্টকে হঠাতে। ২০১১ বিধানসভা নির্বাচনের সেই কৌশলে সামিল ছিলেন শুভেন্দুও। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, মমতার কৌশলেই তাঁকে উচ্ছেদ করতে উঠেপড়ে লেগেছে শুভেন্দু-কৌস্তভরা। এখানে বিরোধী শক্তিকে একজোট করতে তৎপর এই দুই বিজেপি ও কংগ্রেস নেতা। অর্থাৎ দুই বিবদমান রাজনৈতিক দল। পৃথক দুই দলে থাকলে এই ধরণের আহ্বান জানানোর গুরুত্ব যে অনেক বেশি তা বিলক্ষণ জানেন দু'জনই। বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে জল্পনা থাকলেও গেরুয়া শিবিরে যোগ দেবেন বলে কোনও ঘোষণা করেননি কৌস্তভ। সেক্ষেত্রে বিকল্প রাজনীতির তত্ব তাৎপর্য হারাবে। শুভেন্দু ও কৌস্তুভের ভূমিকা মনে করাচ্ছে ২০১১-এর আগে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বামবিরোধী ভূমিকাকে।