বঙ্গ বিজেপির নয়া সভাপতি নিয়ে চর্চা তুঙ্গে উঠেছে। রবিবার দলের সর্বভারতীয় সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্যে ফলে ফের সামনে এসেছে নয়া সভাপতি প্রসঙ্গ। তবে এক্ষেত্রে রাজনৈতিক মহলে নানা বিষয় উঠে আসছে, আসছে নানা প্রশ্ন। আদৌ কী বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে এই পদ থেকে সরানো হচ্ছে? তাহলে সভাপতির লড়াইতে কারা রয়েছেন?
গেরুয়া শিবিরে এখন বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে হবেন তা নিয়ে আলোচনা চলছে। সুকান্ত মজুমদার সভাপতি হওয়ার পর দলের নানা স্তরে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বিজেপির পুরনো কমিটির নেতৃত্ব স্থানীয় অনেকেই তৃণমূলে যোগ না দিলেও সরাসরি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন না। একপ্রকার তাঁরা বসে গিয়েছেন। নবান্ন অভিযানেও তাঁদের দেখা যায়নি। সম্প্রতি এক একজন পদাধিকারীকে দলে একাধিক দায়িত্ব দিয়েছে। তা নিয়েও দলের অভ্যন্তরে প্রশ্ন উঠেছে, এক ব্যক্তিকে একাধিক পদ কেন দেওয়া হচ্ছে? অথচ অনেকেই কোনও দায়িত্ব পাননি। তারই মধ্যে রাজ্য সভাপতি নিয়ে বিতর্ক উসকে দিলেন দিলীপ ঘোষ।
ক্রমশ রাজ্যে বিজেপির প্রধান মুখ হয়ে উঠছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কোনও বিরোধ নেই। দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত অধিকারী ছাড়া বাকি কোনও নেতৃত্বের নাম সেভাবে সামনের সারিতে উঠে আসছে না। কিন্তু সভাপতি হিসাবে শুভেন্দু অধিকারীর নাম উড়িয়ে দেননি দিলীপ ঘোষ। তিনি স্বাগত জানাবেন বলেও ঘোষণা করেছেন। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিরোধী দলনেতার পদ ক্যাবিনেট মিনিষ্টারের পদমর্যাদার। সভাপতি হলে এক ব্যক্তি এক পদ নীতিতে তাঁকে বিরোধী দলনেতার পদ ছাড়তে হতে পারে। সেক্ষেত্রেও প্রশ্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন- ‘মুড়ির টিনে কালীঘাট-শান্তিনিকেতনে টাকা নিয়ে যেত সায়গল’, বিস্ফোরক শুভেন্দু
রাজনৈতিক মহলের মতে, এখনও পর্যন্ত বঙ্গ বিজেপি যাঁদের সভাপতি করেছে তাঁরা একেবারেই সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত। তৃণমূল কংগ্রেস বা অন্য দল থেকে আসা কোনও নেতা-নেত্রীকে এই সাংগঠনিক পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। দায়িত্ব পেলে এক্ষেত্রে শুভেন্দুই হবেন প্রথম রাজনৈতিক ব্যক্তি। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
শুভেন্দু অধিকারী বিজেপির রাজ্য সভাপতি হবেন কিনা এই গুঞ্জনের পাশাপাশি আরও কয়েকজনের নাম নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। দলের একাংশ মনে করছে, বিজেপিতে নাম লিখিয়েই বিধানসভার টিকিট পেয়েছেন। পরাজিত হয়েও রাজ্য কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন। রাজ্য কমিটিতে স্থান পাওয়া বীরভূমের ওই নেতা সভাপতি হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। তাছাড়া প্রাক্তন এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নামও সভাপতি হিসাবে ভাসছে। এঁরা ছাড়া আরও অনেকেই তাকিয়ে রয়েছেন সভাপতি পদের দিকে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে গেরুয়া শিবিরে ভাবী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে জল্পনা ছড়িয়েছিল জনা ছয়েক নেতার নাম। যদিও ফলপ্রকাশের পর দেখা গিয়েছে, দল তো ক্ষমতায় আসেইনি বরং ওই নেতাদের অনেকে ওই নির্বাচনে গোহারা হেরেছেন। এখন দেখার বিষয় ডিসেম্বরে দিলীপ ঘোষ শুভেন্দু অধিকারীকে সভাপতি হিসাবে স্বাগত জানাতে পারেন কিনা।