Suvendu Adhikari: বন্যা কবলিত মানিকচক ব্লকের ভূতনিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পৌঁছাতেই দেখানো হল কালো পতাকা। বন্যা দুর্গত অধিকাংশ বানভাসি মানুষেরা মূলত এদিন মানিকচকের ভূতনি সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ের সামনেই কালো পতাকা দেখিয়ে বিক্ষোভ দেখান। এমনকি বন্যা মিটতেই কেন বিজেপি বিধায়ক এখন এলাকায় আসছেন সে ব্যাপারেও অধিকাংশ বানভাসি মানুষেরা কৈফিয়ত তলব করেন। এমনকি বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অসন্তোষমূলক পোস্টার ঘিরেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আর এই ঘটনাকে ঘিরেই শনিবার বিকাল থেকেই ব্যাপক রাজনৈতিক শোরগোল পড়ে গিয়েছে মালদার মানিকচক ব্লকে। যদিও ভূতনি থানার গোবর্ধনটোলা এলাকায় সেবাদান মূলক একটি কর্মসূচিতেই মূলত এদিন যোগ দিতে আসেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার আগেই এদিন সকাল থেকেই বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে পোস্টারে ছয়লাপ হয়ে যায় মানিকচকের ভূতনি এলাকা। সেখানে নিচে লেখা থাকে সৌজন্যে ভূতনির বানভাসি মানুষেরা। সেই পোস্টারে লেখা ছিল, 'এতদিন আপনি কোথায় ছিলেন? কেন বানভাসি মানুষদের বন্যার সময় পাশে এসে দাঁড়াননি?' এরকম অসন্তোষজনক পোস্টারকে ঘিরেও চরম অস্তিতে পড়তে হয় জেলা বিজেপি নেতৃত্বকে।
এদিকে এদিন মানিকচক ব্লকের ভূতনিতে বিজেপির পক্ষ থেকে সেবাদান নামক একটি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। সেখানেই বানভাসি মানুষদের সেবামূলক কার্যক্রম নিয়েই বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর এদিনের এই কর্মসূচি বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
শুভেন্দু অধিকারীকে কালো পতাকা
এদিকে, এদিন বিকেলে ভূতনিতে যাওয়ার সময় শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ের সামনে কালো পতাকা দেখিয়ে বিক্ষোভে সোচ্চার হন বিভিন্ন এলাকার বানভাসি মানুষেরা। তাঁদের অভিযোগ,' বন্যা মিটে গেল। গঙ্গার জল কমে গেল। তারপর এখন মুখ দেখাতে আসছেন বিজেপির ওই বিধায়ক। অথচ আজকে কেন্দ্র সরকারের অসহযোগিতার জন্যই ভূতনি এলাকার কয়েক হাজার পরিবারকে বন্যার মুখে পড়তে হয়েছে। আমরা চাই শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্র সরকারের কাছে ভূতনির গঙ্গার ভাঙন প্রতিরোধের বিষয়ে কথা বলুক। অথচ উনি তা না করে শুধুমাত্র এখানে রাজনীতি করতেই এসেছেন।'
আরও পড়ুন তৃণমূলের সব পদ থেকে ইস্তফা, শুভেন্দুর হাত ধরেই এবার বিজেপিতে প্রাক্তন মন্ত্রীর স্ত্রী?
এদিন ভূতনি ব্রিজে দাঁড়িয়ে কালো পতাকা দেখানোর পাশাপাশি বানভাসি অভিষেক মণ্ডল, অজয় মণ্ডলেরা বলেন, 'এত বড় দুর্যোগ ভূতনিতে হল, তখন বিজেপির কোনও নেতা-নেত্রীরা এলাকায় আসেননি। আজকে বানভাসিদের জন্য সেবাদান মূলক একটি কর্মসূচি এখানে করা হচ্ছে। তাতে মনে হয় ওদের দলেরই কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত থাকতে পারে। আমাদের বানভাসিরা সেখানে যাবে না। এখন বন্যা মিটে গেছে, তাই উনি এখানে মুখ দেখাতে এসেছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁকে কালো পতাকা দেখিয়েছি।'
কী অভিযোগ তৃণমূল এবং বিজেপির?
মানিকচকের তৃণমূল দলের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র বলেন, 'এদিন বানভাসি মানুষেরাই রাজ্যের বিরোধী দলনেতার ভূতনি সফরকে ঘিরে কালো পতাকা দেখিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এত বড় বন্যার মতো দুর্যোগ গেল, একবারও বিজেপির নেতা-নেত্রীদের দেখা মেলেনি। এখন সবকিছু মিটে গিয়েছে, ওরা মুখ দেখাতে এলাকায় আসছে। আসলে বিজেপি বুঝে গিয়েছে এখানে আর ওঁদের নাক গলবে না। অসময়ে বানভাসিদের পাশে না থেকে এখন রাজনীতি করছে বিজেপি।'
বিজেপির জেলার সাধারণ সম্পাদক গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, 'যাঁরা এদিন কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন এবং পোস্টার দিয়েছেন, তাঁরা সকলেই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। প্রকৃত বানভাসিরা এরকম কাজ করতে পারে না। এদিন বানভাসি মানুষদের জন্য সেবাদান মূলক একটি কর্মসূচি রাখা হয়েছিল। সেখানেই বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী উপস্থিত হয়েছিলেন।'