বিরোধী দলনেতার মানসিক অবস্থা ঠিক নেই। গত রবিবার এই দাবি করেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। ৪৮ ঘন্টা পর সেই একই দাবি করলেন জোড়-ফুলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের যুক্তি পোক্ত করতে সঙ্গে উদাহরণও তুলে ধরেছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বা সাংসদ অভিষেককে উদ্দেশ্য করে 'বেগম' বা 'কয়লা ভাইপো' বলেননি বলে সোমবার রাজভবনের সামনে দাবি করেছিলেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু অধিকারী সেই দাবি আদপে যে 'ভুয়ো' সেকথা এ দিন নিজের সংসদীয় কেন্দ্রের দাঁড়িয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন অভিষেক।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, 'এই লোকটির (শুভেন্দু অধিকারী) মানসিক অবস্থা ঠিক নয়। কেন এমন বলছি, তার জন্য একটি জিনিস দেখাই আপনাদের। প্রিন্ট আউট এনেছি আমি। গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টেয় রাজভবনের বাইরে সাংবাদিক বৈঠক করেন উনি। বলেন, মমতার নাম ধরে বেগম বলেননি তিনি। তাহলে কেন গায়ে মাখছেন মমতা! ঠাকুর ঘরে কে, আমি তো কলা খাইনি। বিকেল সাড়ে ৪টেয় এই কথা বলার পর সন্ধে ৬টা বেজে ৪৭ মিনিটে একজনের সঙ্গে কথা হয় ওঁর। ওই ব্যক্তি লেখেন আপনার সুস্থতা কামনা করি। তাঁকে উত্তর দিয়েছেন এই বলে যে, তোদের বেগম মমতা কেমন আছে? অর্থাৎ যে লোক বিকেলে বললেন মমতাকে বেগম বলেননি, দু'ঘণ্টা পর তিনিই বেগম মমতা লিখছেন।'
আরও পড়ুন- দিলীপ কেন জেলের বাইরে? প্রশ্ন তুলে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ অভিষেকের
এই ধরণের একটি নয়। অভিষেক হাতে ছিল একাধিক প্রিন্ট আউট। যা দেখিয়ে তৃণমূল সাংসদ বলেন, 'এমন একাধিক আছে। এক মহিলা ওঁকে লেখেন আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। পাল্টা তাঁকে জবাব দিয়েছেন, তোর বর কয়লা ভাইপোর চোখ ঠিক হল?'
শুভেন্দু অধিকারীর নারীদের প্রতি সম্মানবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেক। তাঁর কথায়, 'ইনি নারীর সম্মান, নারীর সুরক্ষা নিয়ে কথা বলেন। এক মহিলা, যিনি ওঁর ছোট বোনের মতো, সুস্থতা কামনার প্রত্যুত্তরে তাঁকে, তোর বর কয়লা ভাইপো লিখেছেন। রাত ৯টা ৪৬ মিনিটে সুস্থতা কামনা করা আর এক জনকে লেখেন, তোর মা মমতা বেগম কেমন আছে? তোর বর কয়লা ভাইপো।
অভিষেকের দাবি, এক সময় এক এক রকম বলেছেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, 'এর পরও যদি কেউ বলেন, গায়ে মাখছেন কেন, তাহলে কী বলবেন? ওঁর মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দরকার। সকালে, দুপুরে, বিকেলে, সন্ধেয় এবং রাতে, এক এক সময়, এক এক কথা বলছেন। আতঙ্কে ভুগছেন উনি। অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় বাড়ি থেকে বেরোলেই আতঙ্ক। চায় আমি চুপ করে ঘরে বসে থাকি। ও কী ভাবে? যা ইচ্ছে তাই, যাকে ইচ্ছা তাকে, এ সব বলতে পারে ও?'
আরও পড়ুন- আর রাখঢাক নয়, নতুন তৃণমূল ঠিক কী? এতদিনে স্পষ্ট করলেন অভিষেক
তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড এরপরই বীরবাহা হাঁসদাকে শুভেন্দু অধিকারীর 'পায়ের তলায় থাকে'
মন্তব্যটি টেনে আনেন। তাঁর চ্যালেঞ্জ, মুখ্যমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে অখিল গিরির কুমন্তব্যের প্রেক্ষিতে ক্ষমা চেয়েছেন। শুভেন্দু অধিকারীর অশালীন মন্তব্যের জন্য কী বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ক্ষমা
চাইবেন?
২১শে বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অভিষেক তরজা তুঙ্গে উঠেছিল, সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। একই রাজনৈতিক তরজায় গরম হচ্ছে বঙ্গ রাজনীতি।