কলকাতা হাই কোর্ট শর্তসাপেক্ষে উলুবেড়িয়ায় বিজেপিকে সভার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত সেই সভা বাতিল বলে ঘোষণা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আদালতের শর্তজনিত একাধিক অসুবিধার দোহাই দিয়ে উলুবেড়িয়ার সভা বাতিল করা হল বলে জানিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
কী বলেছেন শুভেন্দু?
বিকেলে কলকাতা হাইকোর্ট উলুবেড়িয়ার সভার জন্য যেসব শর্তের কথা বলেছিল তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দু অধিকারী। আদালতের শর্তগুলিকে 'অদ্ভূত' বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বলেছেন, 'আমরা আর্জি করেছিলাম সন্ধ্যা ৬-৭ সভা করার জন্য। কিন্তু কোর্ট বলল রাত ৮টায় সভা হবে। শর্তে আছে হাওড়া জেলা ছাড়া কোনও কর্মী সভায় যেতে পারবেন না। তাহলে তো আমিও ওই জেলার বাইরের লোক। আমি সহ অনেকেই যেতে পারব না। এদিকে আমি মূল বক্তা। তাহলে সভা হবে কীভাবে? কোর্টের নির্দেশ লাউডস্পিকার ২০টা থাকবে কিনা সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলদাস এসডিও দেখবেন। কার্যত হাইকোর্টকে দিয়ে যেসব শর্ত দেওয়ানো হয়েছে সেটা সভার বিপক্ষে। অর্থাৎ, অশ্বথামা হত-ইতি গজ। এসব শর্ত মেনে সভা হতে পারে না। তাই আমরা সেটা করছি না।'
কী শর্ত দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট?
- বিজেপির প্রস্তাবিত জুটমিলের মাঠে নয়, সভা হবে মনসাতলার পার্টি অফিসের পাশের মাঠে।
- রাত আটটা থেকে ১০টা পর্যন্ত সভা হবে।
- বুধবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে স্থানীয় থানাকে জানাতে হবে ওই মাঠ ২ হাজার মানুষ সঙ্কুলানের জন্য উপযুক্ত কিনা।
- পুলিশ না বললে বিজেপিকে নতুনভাবে জানাতে হবে বৃহস্পতিবারের সভায় কত লোকের জমায়েত হবে।
- সভা থেকে কেউ কোনও প্ররোচনামূলক মন্তব্য করতে পারবেন না।
- বিজেপি জানিয়েছে, ২১ জুলাইয়ের সভায় ২০টি লাউড স্পিকার ব্যবহার করা হবে। বাস্তবে তার প্রয়োজন রয়েছে কিনা সেটাও সিডিও খতিয়ে দেখবেন।
- হাওড়া জেলা ছাড়া সভায় দর্শক হিসাবে কেউ উপস্থিত থাকতে পারবেন না। তবে বক্তারা অন্য জায়গা থেকে আসতেই পারেন।
- ৬ নং জাতীয় সড়ক যাতে অবরুদ্ধ না হয় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে উদ্যোক্তাদের।
শুভেন্দু অধিকারীর সভা বাতিল ঘোষণার পর তৃণমবলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, 'পায়ে পা লাগিয়ে ঝামেলা করতে গিয়েছিল। কিন্তু, কোর্ট এমন শর্ত দিল যে পিছু হঠতে হল। আসললে ওদের সভা করার মত সংগঠন নেই। শুভেন্দুকে দলে কেউ মানতে রাজি নন। ফলে এখন কোর্টের নির্দেশকে সমালোচনা করে রনে ভঙ্গ দিচে হচ্ছে।'
তৃণমূলের শহিদ দিবসের দিন ২১ জুলাই উলুবেড়িয়ার বাউরিয়ায় কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি মেলেনি। ফলে অনুমতির দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। মঙ্গলবার সেই মামলারই রায় দিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি মৌসমী ভট্টাচার্য।