Advertisment

আবেগই হাতিয়ার, কৌশল বামেদের পথ, দিল্লি কাঁপাতে মরিয়া অভিষেক

গ্রামাঞ্চলের মানুষের বঞ্চনাকে দিল্লির দরবারে পৌঁছে দিতে চান তৃণমূল নেতৃত্ব।

IE Bangla Web Desk এবং Joyprakash Das
New Update
Abhishek_Banerjee 3

দিল্লিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

এর আগে সারদা-সহ চিটফান্ড কেলেঙ্কারি, নারদায় রাশি রাশি টাকা নেওয়া, তারপর কাটমানি ইস্যু, শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি শুধু নয়, মন্ত্রী-সহ আমলারা জেলবন্দি, গরুপাচার, কয়লাপাচার নানা ইস্যু সত্ত্বেও বিধানসভা থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের রথের চাকা অব্যাহত। বর্তমানে আবার কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা ইস্যুকে হাতিয়ার করে দিল্লি অভিযানে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ ও বিধায়করা ছাড়াও 'ডেডিকেটেড' নেতা-কর্মীরা দিল্লিতে রয়েছেন। বামেরা ৩২ বছরের রাজত্বে সর্বক্ষণ কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা ও সীমিত আর্থিক ক্ষমতায় রাজ্য চালাচ্ছে বলে প্রচার করত। তৃণমূল কংগ্রেস কেন্দ্রীয় বঞ্চনার ইস্যুতে একেবারে সোজা দিল্লিতে পৌঁছে গিয়েছে।

Advertisment

এই প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন, 'অতীতে কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে রাজ্যের নির্বাচকমণ্ডলীকে নিজেদের পক্ষে দীর্ঘ দিন ধরে রাখতে পেরেছিল বামেরা। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে নিজের অবস্থানকে জোরদার করেছেন, যা বিভিন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছে।' সীমিত আর্থিক ক্ষমতা ও কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে বারেবারেই সরব হন মুখ্যমন্ত্রী।

তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে নানা ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যেতেই বন দফতরে সহায়ক পদে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বও সেই অভিযোগ তুলেছিল। বাম আমলেও নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও ফায়দা তুলতে পারেনি কংগ্রেস। বরং, রাজ্যে টানা ক্ষমতায় থেকে গিয়েছে বামফ্রন্ট। ড. বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন, 'বামেদের বিরুদ্ধে বেঙ্গল ল্যাম্পের মত ইস্যু উঠে আসার পরেও বামেদের সমর্থনের ভিত্তি একচুলও নাড়াতে পারেনি তৎকালীন বিরোধী দল কংগ্রেস। তৃণমূলের আমলে সারদা-নারদা সমেত শিক্ষক দুর্নীতির ইস্যু উঠে আসার পরও নির্বাচনে তৃণমূলের বিজয়রথ অব্যাহত রয়েছে। নির্বাচনে দুর্নীতি ইস্যুতে মানুষ ভোট দিচ্ছে না, তা প্রমাণিত সত্য।'

আরও পড়ুন- গান্ধীজয়ন্তীর সন্ধ্যায় কাঁপল বাংলা, একের পর এক জেলায় অনুভূত কম্পন

রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যজুড়ে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ আনার পর দিল্লি যাওয়ার কর্মসূচি নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। কয়েক মাস আগে থেকে এই ইস্যুতে কর্মসূচির কথা রাজ্যের নানা জনসভায় বলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা নির্বাচনের আগে নির্বাচকদের মনে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার ইস্যু জাগিয়ে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বনাথ চক্রবর্তীর মতে, 'বাস্তবে গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে না-পাওয়ার সেন্টিমেন্ট অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তৃণমূল কংগ্রেস এই সেন্টিমেন্টকে তুলে ধরতেই দিল্লি চলো কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে তৃণমূল এই বার্তা দিতে পারল যে তাদের জন্য তৃণমূল সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। এমনকী, দিল্লিতে গিয়ে মোদি-অমিত শাহের বিরুদ্ধেও লড়াই করছে।' তৃণমূল নিজের দুর্বল রাজনৈতিক জায়গাগুলোকে শক্তিশালী পলিটিক্যাল ন্যারেটিভ তৈরি করে পরিস্থিতির মোকাবিলা করে ফেলছে বলেই মনে করছেন তিনি। তাঁর মতে, 'রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি বা বাম-কংগ্রেসের থেকে কয়েক যোজন এগিয়ে যে থাকল, তা বলাই যায়।'

left front abhishek banerjee delhi West Bengal
Advertisment