দুই বিধায়ক তাপসে জোড়া অস্বস্তি তৃণমূলে। তারওপর শিক্ষা দফতরের নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় মন্ত্রী-সভাপতি-আধিকারিকরা জেলবন্দি। গরুপাচার কাণ্ডে জেলাসভাপতি জেলে। ২০০-ওপর আসন নিয়ে টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরও কিছুতেই মসৃণ হচ্ছে না চলার পথ। এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচন কড়া নাড়ছে। তারইমধ্যে আজ বিকেলে উত্তীর্ণ সভাঘরে দলের বিজয়া সম্মেলনী। সেখানে দলের নেতা-কর্মীদের কি বার্তা দেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল।
গত কয়েক দিন ধরেই তোপ দেগে চলেছেন বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি থেকে তাঁকে সরিয়ে ওই পদে দল ফের বসিয়েছে সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কয়েকমাসের জন্য তাঁকে মন্ত্রীত্ব দিয়েছিল তা-ও খোয়া গিয়েছে। সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগণায় দলের জেলা সভাপতি হিসাবে তাঁর নাম বিবেচনায় ছিল। কিন্তু ওই পদ নিতে তিনি নারাজ বলেই জানা গিয়েছে। কিন্তু গোঁসা যায়নি তাপস রায়ের। তিনি এবার বিজেপি যোগের অভিযোগ এনেছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। এমনকী দলের বহু নেতার শরীর-বুদ্ধিবত্তা কাজ না করা সত্বেও দলের পদে থেকে যাচ্ছেন বলেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি।
রাজনৈতিক মহলের মতে, পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে বুধবার তাপস রায়ের বাড়িতে ছুটেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারাণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এরই মধ্যে রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্য়ায়ের মন্তব্যে ফের অস্বস্তি বেড়েছে ঘাসফুল শিবিরে। এক্ষেত্রে আবার বিজেপি ফেরত নেতার দিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন সিপিএম থেকে আসা এই তৃণমূল বিধায়ক।
নিউটাউনে রাজ্য সরকারের আয়োজনে বিজয়া সম্মেলনীতে আমন্ত্রণ পাননি রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্য়ায়। তিনি বলেছেন, 'দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু এবার মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছি। আমি তো কোনও পদ পেতে চাইনি। আমি সম্মান পেতে চাই। আমি অপমানিত-মর্মাহত।' তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, যাঁরা ২০২১-এ ভোটের আগে বেগম বলেছিলেন, বলেছিলেন আর কটা দিন। পরে তাঁরা দলে এসেছেন। মুসলিমদের সঙ্গে বেইমানি করা হয়েছে, এমন নানা প্রশ্ন উঠেছে।' দলে কথা বলার কোনও সুযোগ নেই বলেও শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাপস চট্টোপাধ্যায়।
আজ, বৃহস্পতিবার বিকেলে উত্তীর্ণ সভাঘরে তৃণমূলের বিজয়া সম্মেলনী। তার আগে দুই তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় ও তাপস চট্টোপাধ্যায় দলের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি প্রশ্ন তুলে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন। তারওপর রাজ্য সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে টানা আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মোমিনপুর ইস্যুতে রাস্তায় নেমেছে বিজেপি। দলের মন্ত্রী, নেতা, প্রাক্তন সরকারি আধিকারিকদের গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তারপর আগামী বছর পঞ্চায়েত ভোট। এই পরিস্থিতিতে বিজয়া সম্মেলনীতে দলনেত্রী কী বার্তা দেন সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে দলের নেতা-কর্মীরা।