Tarapith West Bengal News: মা তারার পুজো দিতে গুনতে হবে ৫০০ টাকা। ওই টাকা বা তার বেশি ফেললেই অল্প সময়ে মায়ের পুজো দেওয়া যাবে। বিল ছাড়াই এক সময় সেই টাকা নিতেন পাণ্ডা থেকে নিরাপত্তারক্ষীরা। কোন কোন সময় আরও বেশি টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন হুগলির দুই বাসিন্দা।
প্রসঙ্গত, তারাপীঠে বিশেষ লাইনে মন্দিরে ঢোকার জন্য ৫০০ টাকা নেওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। একটা সময় রশিদ ছাড়াই এই টাকা নেওয়া হত। এনিয়ে প্রায় পুন্যার্থীদের সঙ্গে অশান্তির জন্য জেলা শাসক মন্দির কমিটিকে অশান্তি এড়িয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশ মেনে এবার ৫০০ টাকার রশিদ দিতে শুরু করেছে মন্দির কমিটি। কিন্তু সেই টাকা যায় কোথায়? এনিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হুগলীর পৃথ্বীরাজ দত্ত এবং অসিত রায়।
তাঁরা হাইকোর্টকে জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে লাইন দিয়ে বিনামূল্যে দেব দেবীর দর্শন পান। কিন্তু তারাপীঠে পাণ্ডাদের সাহায্য ছাড়া দেবতার দর্শন পাওয়া অসম্ভব। সেই সুযোগে পাণ্ডারা সিণ্ডিকেট গড়ে শুধু ৫০০ নয়, ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন পুন্যার্থীদের কাছ থেকে। যারা মোটা টাকা দেবেন তাঁরা মায়ের বিগ্রহ স্পর্শ করার সুযোগ পাবেন।
রবি পাণ্ডা নামে এক সেবাইত নিজেকে জেলা শাসকের প্রতিনিধি হিসাবে পরিচয় দিয়ে সিণ্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। পাণ্ডারা মা তারাকে সোনা, রুপোর অলঙ্কার দেওয়ার নামে পুন্যার্থীদের কাছ থেকে নিয়ে নিজেরাই আত্মসাৎ করছেন। সেই অলঙ্কারের জন্য কোন রশিদ দেওয়া হচ্ছে না।
তাঁদের অভিযোগ, মন্দির কমিটি ট্রাস্ট বা সোসাইটি সেটা স্পষ্ট নয়। ধর্মীয় ট্রাস্ট হিসাবে চার্টার্ড অ্যাকাউট্যান্টকে দিয়ে অডিট করা প্রয়োজন। কিন্তু তারাপীঠ মন্দিরে শেষবার অডিট কবে হয়েছিল কেউ জানেন না।
তাঁরা আদালকে আরও জানিয়েছেন, মন্দির পরিস্কার রাখা প্রয়োজন। পুন্যার্থীদের জন্য শৌচালয় প্রয়োজন। কিন্তু সেই পরিষেবা নেই। জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চল শাখার নির্দেশ মানা হচ্ছে না মন্দিরে। মন্দির চত্বরেই ফেলে রাখা হচ্ছে ময়লা। তারাপীঠ মন্দিরে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য মন্দির কমিটি কোন উদ্যোগ নিচ্ছেন না।
আদালতে মামলাকারীরা আবেদন করেছেন, প্রাচীন তারাপীঠ মন্দিরকে ঐতিহ্যবাহি মন্দির হিসাবে ঘোষণা করা হোক। সেই সঙ্গে হেরিটেজ কমিটিকে দিয়ে মন্দির সংরক্ষণ করা হোক। নয়তো আগামী প্রজন্মের কাছে এই মন্দির ইতিহাস হয়ে যাবে।
তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। ফলে এখনই আমরা কিছু বলব না। তবে আমাদের আইনজীবীর মাধ্যমে সমস্ত অভিযোগের জবাব দেওয়া হয়েছে”।