Bengal SSC scam: মঙ্গলবারের পর বুধবারেও এসএসসি দফতরে গেলেন প্রাক্তন বিচারপতি তথা বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এসএসসি দফতরে গিয়ে তিনি এদিন দেখা করেন চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে। যোগ্য- অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশে দিলেন দু'দিনের ডেডলাইন। পাশাপাশি এদিন তিনি এসএসসি দফতর থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কসবা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের উপর পুলিশের লাঠি চার্জের বিরুদ্ধে গর্জে উঠে মমতা সরকারকে সরাসরি নিশানা করেছেন।
গতকালের পর আজ বুধবার এসএসসি দফতরে গিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের দেখা করেন বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এসএসএসি দফতর থেকে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রাক্তন বিচারপতি বলেন, "স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছি ৩০ মিনিটের উপরে। আমরা তাকে আবেদন করেছি যে মিরর ইমেজ আছে, সিবিআইয়ের থেকে আপনারা পেয়েছেন তার ভিত্তিতে যোগ্য ও অযোগ্যদের ওএমআর শিট সামনে আনুন। তালিকা প্রকাশ করুন। সেই লিস্ট নিয়ে আপনারা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করুন। বহু যোগ্য প্রার্থী যারা ভয়ঙ্কর বিপদে পড়েছেন তাদের স্বার্থ কীভাবে সুরক্ষিত করা যায় সেটা এসএসসি চেয়ারম্যান সহানুভূতির সঙ্গে গোটা বিষয়টা শুনেছেন। আমরা আশা করি তিনি যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করে দেবেন"।
চাকরি চেয়ে জুটল পুলিশের লাঠিপেটা! 'অফিসে তালা লাগাতে গিয়েছিলেন কেন?' চাকরিহারাদের প্রশ্ন ব্রাত্যর
পাশাপাশি বিজেপি সাংসদ কসবা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের উপর পুলিশি বল প্রয়োগের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, "শিক্ষকদের উপর যেভাবে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় লাঠিপেটা করা হয়েছে তাতে মনে হয়েছে রাজনীতির উর্ধ্বে ওঠে বিষয়টির সমাধান করার বলেছিলাম আর তার কোন মানে হয় না। আমাদের বুঝে নিতে হবে প্রশাসনের বিষয়টি সমাধানের সদিচ্ছা নেই। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে চিঠি জমা দেওয়ার কোন মানে হয় না। মমতা জমিদারের মত আচরণ করছেন। সর্বক্ষমতাশালীর মত আচরণ করছেন। যারা দুর্নীতি করেছেন উনি তাদের আড়াল করে চলেছেন। আজ শিক্ষকদের উপর পুলিশের লাঠি চার্জের যে ঘৃণ্য ঘটনা ঘটেছে আমি তার তীব্র নিন্দা করছি। আমরা সব সময় যোগ্য প্রার্থীদের পাশে আছি। আমরা আর ২ দিন অপেক্ষা করব"।
এর ঠিক একদিন আগে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে দেখা করার কথা বলেছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি তথা বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রয়োজনে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে যোগ্য অযোগ্য আলাদা করতে রাজ্য সরকারকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে দেখা করে নিজের প্রস্তাব চিঠির আকারে জমা দেওয়ার কথাও বলেছিলেন তিনি। কিন্তু এক দিনের মধ্যে এসএসসি দফতরথেকে বেরিয়ে সিদ্ধান্ত বাতিল করে সেই চিঠি ছিঁড়ে ফেলেন প্রাক্তন বিচারপতি।
এসএসসি দফতরের বাইরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে চাকরিহারা শিক্ষকরা বলেন, " অযোগ্যদের বিদ্যালয় থেকে তাড়াতে হবে। বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাঁচাতে হবে। আমাদের দাবি খুবই ছোট। যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা আলাদা করে ওয়েব সাইটে আপলোড করতে হবে। সুপ্রিম রায় রিভিউ করে আমাদের চাকরিটা ফিরিয়ে দেওয়া প্রতিশ্রুতি যতক্ষণ না মুখ্যমন্ত্রী দিচ্ছেন ততক্ষণ আমাদের আন্দোলন চলবে। পুলিশের প্রতি আমাদের অনুরোধ আমাদের মারবেন না, আমারা তো একেবারে মরে গেছি"।
আজ শিক্ষকদের উপর পুলিশি হামলার বিরুদ্ধে গর্জে উঠে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, " যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক শিক্ষিকাদের মারলে কেন, পুলিশ তুমি জবাব দাও। জবাব তোমায় দিতেই হবে...গর্জে উঠলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে এক পোস্টে বলেন, "যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক শিক্ষিকাদের উপর মমতা পুলিশের নির্মমভাবে লাঠিচার্জের প্রতিবাদে আজ বিজেপির বিধায়করা লালবাজারের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে গেলে মমতা পুলিশ প্রায় টেনে হিঁচড়ে গায়ের জোরে বিধায়কদের গ্রেফতার করল। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে চাই এভাবে আপনি প্রতিবাদের কন্ঠ রূদ্ধ করতে পারবেন না। আগামী দিনে আপনার সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষকে সাথে নিয়ে বিজেপির প্রতিবাদ তীব্র থেকে তীব্রতর হবে"।