Advertisment

'জানুয়ারিতেই রাজ্য সরকারের চেহারা নগ্ন হবে,' বোমা ফাটালেন তরুণজ্যোতি

তৃণমূলের হাত থেকে বিজেপিই রাজ্যবাসীকে উদ্ধার করবে, দাবি তরুণজ্যোতির।

author-image
Joyprakash Das
New Update
Tarunjyoti_Tiwari

বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। ছবি- শশী ঘোষ

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর 'ডিসেম্বর ডেডলাইন' নিয়ে ঝড় উঠেছিল বঙ্গ রাজনীতিতে। যদিও সময়ের সঙ্গে তলিয়ে গিয়েছে ঝড়ের পূর্বাভাস। তবে নতুন বছরের জানুয়ারি মাস ঘটনাবহুল হতে চলেছে, তা জানিয়ে দিলেন যুব মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। পাশাপাশি, যুব বিজেপি নেতা সেটিং তত্ব, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেস, সিপিএম-সহ বিভিন্ন ইস্যুতে নানা প্রশ্নে সোজাসাপটা জবাব দিলেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে।  

Advertisment

প্রশ্ন- সেটিং তত্ত্ব নিয়ে কি মত আপনার?

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি- সেটিং আমি মনে করি না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আর যেই বিশ্বাস করুক ভারতীয় জনতা পার্টি করে না। বিজেপি বা অটলবিহারী বাজপেয়ীজি না-থাকলে তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মই হত না। তৃণমূল কংগ্রেস এনডিএর সঙ্গে ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাত্র একজন সাংসদ, তবু তাঁকে মন্ত্রিত্ব দিয়েছিল। পরবর্তীকালে বিশ্বাসঘাতকতা করলেন বিজেপির সঙ্গেই। কংগ্রেসের সঙ্গে গেলেন। তারপর সেখান থেকেও বেরিয়ে এলেন। পশ্চিমবঙ্গে সরকার গড়ার জন্য কংগ্রেসের সাহায্য় দরকার ছিল। কংগ্রেসকে নিয়ে একসঙ্গে লড়লেন। কংগ্রেসের সঙ্গে বনিবনা হল না। কংগ্রেস বেরিয়ে গেল। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করার জন্য তিনি দিল্লি ছোটেন। সেটিং যদি কারও থেকে থাকে, বিজেপি ভার্সেস অল পার্টির সেটিং আছে।

প্রশ্ন- গ্রাম বাংলায় নীচুস্তরে রাম-বাম জোট হচ্ছে। কীভাবে দেখছেন?

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি- পঞ্চায়েত ভোট বাইরের রাজ্যগুলিতে পলিটিক্যাল ব্যানারে হয় না। এখানেও সেটা হওয়া উচিত। পঞ্চায়েত সাধারণ মানুষের নাগরিক পরিষেবা, নাগরিক সুবিধার জন্য। সেখানে দেখা যাচ্ছে পঞ্চায়েতে দিনের পর দিন লুট হচ্ছে। সেন্ট্রাল থেকে এক একটা পঞ্চায়েতে প্রায় ৫ কোটি টাকা করে আসে। সেই টাকা গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছয় না। ৫ কোটি টাকা গ্রামে কাজ হলে চেহারাই পালটে যাবে। গ্রামের মানুষ যদি এক হয়ে যায়, সে রাম, বাম, এক্স, জেড তাতে আমাদের কিছু করার নেই। সব ক্ষারই ক্ষারক। কিন্তু, সব ক্ষারক ক্ষার নয়। তেমনই সব চোরই তৃণমূলের। কিন্তু, সব তৃণমূল চোর নয়। তো সেখানে দু'একজন ভদ্রলোক তৃণমূলে আছে।

প্রশ্ন- সিপিএম-কংগ্রেস একযোগে সেটিং তত্ত্ব সামনে আনছে।

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি-
কংগ্রেস ডেড চ্যাপ্টার। কংগ্রেস শেষ। রাহুল গান্ধী একটা 'ভারত জোড়ো' যাত্রা করছেন। সেটা কংগ্রেস জোড়ো যাত্রা করা উচিত। যেখান থেকে যাত্রা যাচ্ছে, সেখান থেকে কংগ্রেসের লোকজন ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। কংগ্রেস একটা শতাব্দীপ্রাচীন দল। আজকে এই দলকে মিউজিয়ামে রাখার সময় হয়ে গিয়েছে।

সিপিএম- কয়েকবছর আগেও মিছিলে আমরা সাদা ঢেউ দেখতে পেতাম। সব বয়স্ক মানুষকে দেখতে পেতাম। যুবসমাজ সিপিএম বিমুখ হয়ে গিয়েছে। তাঁরা জানে, পশ্চিমবঙ্গে কারখানা নেই, চাকরি নেই। তাঁর কারণ, এই ১১ বছর নয়, ১১ প্লাস ৩৪, অর্থাৎ ৪৫ বছর। এই ৪৫ বছরে অপশাসনের জন্য দায়ী বাম ও তৃণমূল। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সিপিএম এত অভিযোগ করে আসত। সেই সিপিএমই এখন কংগ্রেসের কোলে বসে আছে। তিনটে দল মিলে বিধায়ক সংখ্যা এক। মানুষ এদের বিশ্বাস করে না। তৃণমূল চাইছে বামফ্রন্ট একটু উঠুক। বাম কংগ্রেসকে রাজ্যের মানুষ আর বিশ্বাস করে না।

নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহর দল নয় বিজেপি-- বিজেপি পরিষ্কার বলে দিয়েছে যে এই দল নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীর দল নয়। বিজেপি হল কোটি কোটি কর্মী, সমর্থকদের দল। ক্যাডার বেসড পার্টি। তাঁরা ভারতীয় জনতা পার্টিকে বিশ্বাস করে। ২০২১-এর সন্ত্রাসের পর অনেক নেতৃত্ব এদিক থেকে ওদিকে লাফিয়েছে। কিন্তু, বুথস্তরের কর্মীরা একজনও যায়নি।

প্রশ্ন- দলবদলের খেলা কীভাবে আটকানো যাবে?

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি- মানুষ সিম্বল দেখে ভোট দেয়। সেই ভোটে জয়ের পর সেই পদ নিয়ে অন্য দলে যাওয়া উচিত নয়। যে দলেরই হোক, আমার ব্যক্তিগত মতামত। আমাদের স্পিকার মহোদয় সজ্জন ব্যক্তি। ওনার কাছে প্রমাণ গিয়েছে, কোর্টের আদেশ গিয়েছে, তা-ও তিনি দেখতে পাচ্ছেন না যে মুকুল রায় কোন দলে আছেন। দলবদলুরা নির্বাচনী রাজনীতিতে অংশ নিতে যাতে না-পারে, তার জন্য আইন আনা উচিত।

প্রশ্ন- বিমান বসুর পথেই এখন নানা ইস্যুতে বিচার ব্যবস্থা ও বিচারককে সরাসরি নিশানা করছে তৃণমূল। কী বলবেন?

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি-
এটাকে বলা হয় বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি। হাইকোর্টে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও দল যায়নি, গিয়েছে ছাত্র-ছাত্রীরা। প্রত্যেকটা নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। আদালতের সামনে তথ্য আসছে, আদালত নির্দেশ দিচ্ছে। দলের আইনজীবী যাঁরা কোর্টে প্রতিনিধিত্ব করেন, তাঁদের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন আমাদের আইনজীবীরা অপদার্থ। তার জন্য বার বার সিবিআই হচ্ছে। এই মন্তব্য একজন আইনজীবী হিসেবে শুনতে খারাপ লাগে।

প্রশ্ন- লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-সহ নানা টাকা দেওয়ার প্রকল্প, এইসব প্রকল্প কি সমর্থনযোগ্য?

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি-
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য ১৩ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে সরকারের। তার ফলে পূর্ত দফতরের কাজের জন্য বাজেট কমাতে হচ্ছে। এছাড়া স্কুল-সহ অন্য সেক্টরে নিয়োগ হচ্ছে না। মা-কাকিমা বছরে ৬ হাজার টাকা পাচ্ছেন কিন্তু তাঁর ছেলেমেয়ের চাকরিটা কেড়ে নিচ্ছে। শিক্ষা দফতরে সাড়ে ৩ লক্ষ লোক নিয়োগ করা দরকার। তাহলে মাসে বা বছরে কত টাকা হতে পারে? ৬ লক্ষ কোটি টাকা যে সরকারের ঋণ, সেই সরকার বিলাসিতা কী করে দেখায়, বুঝতে পারি না। শ্রীলঙ্কার নেতারা কী ভাবে মার খেল দেখেছি। দুয়ারে শ্রীলঙ্কা, পশ্চিমবঙ্গে খুব তাড়াতাড়ি চালু হবে।

প্রশ্ন- পার্থ চট্টোপাধ্যায় বা অনুব্রত মণ্ডলের কি সাজা হবে মনে করছেন?

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি- পার্থ চট্টোপাধ্যায়রা দোষ করেছে, সেটা প্রায় প্রমাণিত। ট্রায়াল করলেই সামনে আসবে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাচ্চা বাচ্চা মেয়েদের সঙ্গে থাকা। আর কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। যেমন লজ্জাজনক ব্যাপার, তেমনই কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি। মন্ত্রীর বাড়িতে ছেলেমেয়েদের মার্কশিট বা অ্যাডমিট কার্ড থাকে না। সেখান থেকেই তো প্রমাণ হয়, উনি চুরিতে যুক্ত ছিলেন।

অনুব্রত মণ্ডল-- অনুব্রত মণ্ডল হলেন একজন মাগুর মাছ বিক্রেতা। আমি তো অনেকরকম চোর দেখেছি। কিন্তু, এরকম দেখিনি যে চুরির টাকায় কেউ ফিক্সড্ ডিপোজিট করেছে। মাগুর মাছ বিক্রেতা, তাঁর নাকি আবার ১৭-১৮ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট আছে চুরির টাকায়। তাঁর সোর্স অব ইনকাম কী? ভোলেবাবা রাইস মিল-সহ একাধিক রাইস মিল কোথা থেকে এল? সব হিসেবটা সামনে আসছে। এঁরা বেরোবে না, চিন্তা নেই।

প্রশ্ন- বিজেপির নতুন রাজ্য কমিটি হওয়ার পর পুরোনোরা অনেকেই বসে গিয়েছেন। কেন এমন হচ্ছে?

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি-
দেখুন, ভারতীয় জনতা পার্টিতে পদ মানে হচ্ছে দায়িত্ব। আজ যে দায়িত্বে আছে, কাল দায়িত্বে থাকবে না। মনে হয় না, পুরনো যাঁরা আছেন, তাঁরা রাগ করবেন। তাঁরা অনেক ঘাত-প্রতিঘাত থেকে উঠে এসেছেন। অনেকে বুথ কমিটি থেকে উঠে এসেছে, অনেকে মণ্ডল কমিটি থেকে উঠে এসেছেন। আস্তে আস্তে দায়িত্ব বেড়েছে। তাঁদের জায়গায় আজ অন্য কেউ এসেছে। তাঁরা আবার অন্য জায়গায় যাবেন। মান-অভিমান হয় তো কিছু জনের হয়েছে, কিন্তু পার্টিটা ছেড়ে যায়নি। আমার মনে হয় না যে মান-অভিমানটা তাড়াতাড়ি ভাঙবে। পঞ্চায়েতে আবার পূর্ণ শক্তিতে আমরা বিজেপিকে দেখতে পাব।

প্রশ্ন- ২০২১ নির্বাচনে গণনায় কি সত্যিই কারচুপি হয়েছিল? মামলা করল না কেন বিজেপি?

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি-
গণনায় কারচুপি হয়নি, সেটাও বলতে পারব না। পুরোপুরি হয়েছে, সেটাও বলতে পারব না। মামলা কেন হল না? দুঃখের বিষয় যে পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনের মামলা দিনের আলো দেখেনি। অন্য একটা ভোট চলে আসে। এগুলো সুপারটেকনিক্যাল বিষয়। এগুলোর পৃথক বেঞ্চ নেই।

তৃণমূলের ভরসা সংখ্যালঘু ভোট-- তৃণমূল আছে সংখ্যালঘু ভোটের ভরসায়। সংখ্যালঘুদের জীবনে কি উন্নতি হয়েছে? ১০০ কোটি টাকার হজ টাওয়ার করে প্রান্তিক মুসলিমদের কি উপকার হয়েছে? ইমাম ভাতা দিয়েও বা প্রান্তিক মুসলিমদের কি লাভ হয়েছে? ৩৫ শতাংশ মুসলিমের কত জন চাকরি পায়? গুজরাট বা উত্তরপ্রদেশের মুসলিমদের পার ক্যাপিটা ইনকাম আর এখানকার মুসলিমদের সঙ্গে তুলনা করে দেখুক। বিজেপি জুজু জেখিয়ে কি হবে?

প্রশ্ন- বঙ্গ বিজেপি কি মুসলিম ভোট নিয়ে ভাবিত নয়?

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি-
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুসলিমদের উন্নতি হোক, এটা চায় না। কারণ, উন্নয়ন হলে, লেখাপড়া শিখলে, এঁদের ছেলেমেয়েরা সরকারি চাকরি পেলে, এরা তো পলিটিক্যাল ক্যাডার হবে না। এদেরকে ক্রিমিনাল ফোর্স হিসেবে ব্যবহার করে তৃণমূল কংগ্রেস। যতদিন দরকার ব্যবহার করে, যখন দরকার পড়ে না ভাদু শেখ বানিয়ে দেয়। তৃণমূল দরকার পড়লে এদের প্রাণটা নিয়ে নেয়। মুসলিম সম্প্রদায়কে নিজের কথা নিজেকেই ভাবতে হবে।

প্রশ্ন- বছরের পর বছর পেরিয়ে যাচ্ছে, চিটফাণ্ডের মামলাগুলো একটা জায়গায় আসছে না কেন?

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি-
আদালতের নির্দেশ ছিল বৃহত্তর ষড়যন্ত্র খোঁজা। সারদার কথা বলি, লাল ডায়েরি, হার্ড ডিস্কের কথা শুনি। মুখ্যমন্ত্রী যাঁর দাড়োয়ান সেজেছেন, সেই রাজীব কুমারের কাছ থেকে কিছুই মেলেনি। পুরো প্রক্রিয়াটার যদি দেরি হয়ে থাকে, তার জন্য দায়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসল বেনিফিশিয়ারি কে? কুণাল ঘোষ বলেই দিয়েছেন, সব টাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আছে। দেরি হওয়ার বড় কারণ, কেন্দ্রীয় সরকার ডেপুটেশনে রাজ্যের কাছে লোক চেয়েছে, জায়গা চেয়েছে। রাজ্য সরকার দিচ্ছি, দেব করেই চার বছর নষ্ট করেছে। সাধারণ মানুষ জানে না। সাধারণ মানুষের জানা উচিত, কাদের জন্য দেরি হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, সিগারেট বেশি খান, টাকা দিয়ে দেব। জমিগুলো বিক্রি শুরু হয়েছে। যতটা সম্ভব টাকা ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু হয়ে গিয়েছে।

প্রশ্ন- আমানতকারীরা টাকা ফেরত কী করে পাবে?

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি-
একমাত্র ইডির অথরিটি আছে বিক্রি করার। ইডি নিলাম করছে। যাঁরা মামলা করেছিল, তা আদালতে জমা হচ্ছে। চিটফান্ডের জন্য একটা ডেডিকেটেড বেঞ্চ আছে আদালতে। জমা হওয়ার পর টাকাগুলো আস্তে আস্তে ডেসপ্যাচড হচ্ছে। টাওয়ার গ্রুপ, এমপিএস গ্রুপের কিছু হয়েছে? যতটা পাওয়ার, ততটা হয়তো পাবে না। সম্পত্তির মূল্যও কমে গিয়েছে।

প্রশ্ন- বিচারপতি শ্যামল সেন কমিশনের ফান্ডের কী হল?

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি-
সেই ফান্ডটা কোথায় গেল? শ্যামল সেন বাবু অত্যন্ত সজ্জন। শ্যামল সেন বাবু প্রতি মিটিংয়ে কত টাকা খরচ করেছেন? কী কী খরচ হল? আমার তো মনে হয়, এসব জানার জন্যই একটা সিবিআই তদন্ত হওয়া উচিত।  

প্রশ্ন- ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি কি ১৮-এর বেশি আসন পাবে এখানে?

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি-
পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বিধানসভা পরবর্তী পরিস্থিতি দেখেছে। গুজরাটে সপ্তমবারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। ইউপিতে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এল। হিমাচলে কংগ্রেস ক্ষমতায় এল, বিজেপিশাসিত রাজ্যে একটা লোকও খুন হয়নি। বিহারে নির্বাচনেও লোক খুন হয়নি। খুনের রাজনীতি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ টায়ার্ড। মুখ্যমন্ত্রীকে বাংলার মানুষ জবাব দেবেন। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের আসন আরও কমবে।

প্রশ্ন- পঞ্চায়েত ভোট আসতেই বোমা, গুলি, খুন চলছে। কীভাবে আটকাবেন?

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি- আটকানোর সোজা উপায় হল, পঞ্চায়েতের ভোট গ্রামের ভোট, মানুষের ভোট। গ্রামে মা-কাকিমারা দেখেছেন তাঁদের ছেলেমেয়েদের চাকরি লুট হচ্ছে। তাঁদের বাড়িতে আঁশবটি আছে। ছেলেদের হাতে কাঁচা বাঁশ আছে। নিজের অধিকারটা নিজের বোঝার সময় এসেছে। আমি বলব না বিজেপিকে ভোট দিন। যাকে খুশি ভোট দিন। কিন্তু, উন্নয়নের ঠেলায় রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে থাকবে, ভোট দিতে যাব না, এটা যেন না-হয়। গ্রামের মানুষ, কাকিমারা, ভাইরা একত্রিত হোক। আঁশবটি দিয়ে শুধু মাছ কাটা হয় না। বটি, কঞ্চি, বাঁশ দিয়ে যা যা করার তাই করুন। আগাছার উন্নয়নগুলো রাস্তা দিয়ে কেটে সরিয়ে দিক।

প্রশ্ন- পঞ্চায়েতে বিজেপি কি প্রার্থী দিতে পারবে?

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি-
এবার প্রার্থী বিজেপি দেবে। যে যে ভাষা বোঝে, সেই ভাষায় কথা বলেই দেবে।

প্রশ্ন- বিজেপির দুই শীর্ষ নেতৃত্ব দিলীপ ঘোষ ও শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে নানা বিষয়ে মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে। কী বলবেন?

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি-
গণতান্ত্রিক দলে একটা বিরোধিতা থাকতে পারে। একজন সর্বভারতীয় নেতা, অন্যজন রাজ্যের জনপ্রিয় নেতা। দু'জনের রাজনৈতিক জ্ঞান নিয়ে মন্তব্য করা সাজে না। তবু বলছি, দলে গণতন্ত্র আছে। তৃণমূল হলে বোমা-গুলি নিয়ে দুই নেতার সমর্থকরা মারপিট করত। পরের দিন শুভেন্দুদার জন্মদিন ছিল, দিলীপদাও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ভারতীয় জনতা পার্টি একটা পরিবার। পরিবারের মধ্যে মন কষাকষি হতেই পারে। তার জন্য একজন আরেকজনকে মারতে ছোটে না।

আরও পড়ুন- মাছির জ্বালায় নাজেহাল গোঘাটের ভাদুর গ্রাম, অবিলম্বে পরিত্রাণ চাইছেন অসহায় বাসিন্দারা

প্রশ্ন- শুভেন্দু অধিকারী ডিসেম্বরে তিনটে তারিখ দিয়েছিলেন।…..

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি- বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ সরকার ভাঙানোর কোনও ইচ্ছাই নেই। এই সরকার ভাঙাতে গেলে তৃণমূলের চোরগুলোকেই নিতে হবে। দল একদমই রাজি নয়। মানুষের কাছে বিজেপি আসলে তৃণমূলের নগ্ন চেহারাটা সামনে এনে দেবে। শুভেন্দুদা কোর্টের তারিখের হিসব দিয়েছিলেন। সেগুলি শিফট ব্যাক হয়েছে। আমি এটুকু বলতে পারি যে কোনও তারিখ নয়, জানুয়ারি মাসটা পশ্চিমবঙ্গে খুব হ্যাপেনিং হতে চলেছে। কোনও রাজনীতিবিদ নয়, আইনজীবী হিসেবে বলছি। কিছু মামলা আমার করা, কিছু বন্ধুদের করা। সেগুলো জানুয়ারিতে লিস্টেড আছে। সেগুলো যখন সামনে আসবে, তখন এই সরকারের চেহারা আরও নগ্ন হয়ে যাবে। এমন কোনও সেক্টর নেই, যেখানে দুর্নীতি নেই। ২৪-এর আগে তৃণমূল ২৩-কে মনে রাখবে।

Tarunjyoti Tiwari bjp tmc
Advertisment