Advertisment

তিন মাসেই ভগ্নপ্রায় তিস্তার বাঁধ, আতঙ্কে উত্তরবঙ্গের লক্ষাধিক মানুষ

বন্যা আটকাতে তিন মাস আগে নয়া বাঁধ নির্মাণ করে রাজ্যের সেচ দফতর। কিন্তু তিন মাস না পেরোতেই এবারের বর্ষায় সেই নবনির্মিত বাঁধের জরাজীর্ণরূপ উঠে এসেছে

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
teesta dam

তিস্তা নদী। ফাইল ছবি

যে বাঁধ দিয়ে জীবন বাঁচানোর কথা, সেই বাঁধেই গলদ। এমনই অভিযোগ শিলিগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের বাসিন্দাদের। প্রতি বছরের বর্ষায় বাঁধভাঙা তিস্তার জলে প্লাবিত হয় রাজগঞ্জ ব্লকের মান্তাদারী, টাকিমারি, মিলনপল্লি, বারোপাটিয়া-সহ সাত-আটটি গ্রাম। সেই বন্যা আটকাতেই তিন মাস আগে নয়া বাঁধ নির্মাণ করে রাজ্যের সেচ দফতর। কিন্তু তিন মাস না পেরোতেই এবারের বর্ষায় সেই নবনির্মিত বাঁধের জরাজীর্ণরূপ উঠে এসেছে। এ বছরের প্রবল বর্ষার দাপটে কার্যত ধ্বসে গেছে বাঁধের একাংশ।

Advertisment

ঠিক কী হয়েছে?

প্রতি বছর উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির জেরে বিপদসীমার উপর দিয়েই প্লাবিত হয় তিস্তা। আর তার জেরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় শিলিগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের টাকিমারি, মান্তাদারি এলাকায়। এই বন্যার প্রকোপে ঘরছাড়া হয়ে পরে আটটি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। স্থানীয় মানুষদের অভিযোগ ছিল তিস্তায় বাঁধ না থাকার দরুন বন্যায় প্লাবিত হতে হয় তাঁদের। গ্রামবাসীর দাবি মতো দুই দফায় মোট ৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করে রাজ্যের সেচ দফতর। গত তিন মাস আগে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মানের কাজ শেষ হয়। কিন্তু সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে ভারী বর্ষণে তিস্তার জল বেড়ে যাওয়ায় নব নির্মিত সেই বাঁধের কার্যত ভগ্নদশা।

আরও পড়ুন- ‘কর দেয় না রাজ্য-কেন্দ্র’, ঢোল বাজিয়ে সরকারি ঘুম ভাঙাবেন অশোক ভট্টাচার্য

উল্লেখ্য, তিস্তার জলের প্রাবল্যে বাঁধের বহু জায়গায় বড় বড় বোল্ডারও ধ্বসে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাঁধ নির্মাণের কাজ অত্যন্ত নিম্নমানের হওয়ার কারণেই ক্রমশ ভাঙছে মান্তাদারী এলাকার তিস্তার বাঁধ। আর এতেই আতঙ্কগ্রস্ত এলাকার সাধারণ মানুষ। স্থানীয়দের বক্তব্য, এই বর্ষাতে যদি আবার প্রবল বর্ষণ হয় সেক্ষেত্রে তিস্তার জল বেড়ে পুরো বাঁধটাই হয়তো তিস্তার গর্ভে চলে যেতে পারে। গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতি তৈরি হলে অন্যবারের চাইতেও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হবে তিস্তা নদী লাগোয়া গ্রামগুলিতে।

আরও পড়ুন- যানজটে নিত্য নাকাল শিলিগুড়ি, সমাধানের আশায় দিল্লির দ্বারস্থ বিজেপি সাংসদ

তিস্তা বাঁধের এহেন পরিস্থিতির বিষয়ে মান্তাদারি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান দীপক বিশ্বাস বলেন, "তিস্তার জল বেড়ে জলের স্রোতে বাঁধের নীচের মাটি সরে যাওয়ার কারনেই বাঁধের কিছু কিছু জায়গা ধ্বসে গিয়েছে"। তবে বাঁধ নির্মানের ক্ষেত্রে নিম্নমানের কাজের যে অভিযোগ উঠে এসেছে স্থানীয়দের তরফে, তা অস্বীকার করেন পঞ্চায়েত প্রধান। তবে ইতিমধ্যেই বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। তিন মাস যেতে না যেতেই নতুন বাঁধ যেভাবে তিস্তার জলে ধ্বসে যাচ্ছে, তাতে কতদিন বাঁচিয়ে রাখা যাবে বাঁধটিকে তা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মনে। নদীবাঁধ নির্মাণে দুর্ভোগ তো দূর, মাত্র তিন মাসেই বাঁধের যে হাল, তা ভেবেই আতঙ্কে দিনযাপন করছেন রাজগঞ্জ ব্লকের বাসিন্দারা।

শিলিগুড়ির সব খবর পড়ুন, এখানে

siliguri West Bengal
Advertisment