Advertisment

বিজেপি সাংসদ এখন তৃণমূলে, তবে ভাটপাড়া রয়েছে ভাটপাড়াতেই

আবারও অশান্তির বাতাবরণ ভাটপাড়ায়। পরপর খুনে এলাকার আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ নিয়েই বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে।

author-image
Joyprakash Das
New Update
The BJP MP is now in the tmc, but crime is remained in Bhatpara

আবারও অশান্তি ভাটপাড়ায়।একের পর এক খুনে এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন।

২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২ জন খুন। শনিবার সকালে গুলি, আবার রাতেও গুলি। ফের অশান্তির বাতাবরণ ভাটপাড়ায়। শনিবার সকাল ১১টাতে ভাটপাড়ার ১২ নং ওয়ার্ডে গুলি করে খুন করা হয় ইমারতী সামগ্রীর ব্যবসায়ী সালামউদ্দিন আনসারিকে। শনিবার রাতেই ভাটপাড়ার ২২ নং ওয়ার্ডে জগদ্দল রেলগেটের কাছে মদের আসরে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন রোহিত। তাঁর মৃত্যু হয় হাসপাতালে।

Advertisment

প্রশ্ন উঠেছে, এর আগে ভাটপাড়ায় একটা বোমা পড়লেও রাজনীতির গন্ধ লেগে যেত। এমনকী সাংসদের বাড়িতে বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় এইআইএ তদন্ত চলছে। কিন্তু পরপর দুটি খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত রাজনৈতিক অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ হয়নি। কিন্তু দুটি প্রাণ অকালে চলে গেল। যদিও তৃণমূল নেতা সোমনাথ শ্যামের দাবি, 'সালউদ্দিন তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী।' অবশ্য বিজেপি থেকে আসা সাংসদের দাবি ভিন্ন।

ভাটপাড়ায় শুটআউট যেন কিছুতে থামছে না। ২২ মে ব্যারাকপুরের সাংসদ তথা ভাটপাড়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান অর্জুন সিং বিজেপি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। এর আগে যেন ভাটপাড়ায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ লেগেই থাকত। সাংসদ বাড়ি থেকে বেড়িয়ে একাধিকবার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন।

সদ্য পুরসভা নির্বাচনের দিনও তাঁর ওপর ডাবের খোলা, ইট ছোড়া হয়। ভাটপাড়ার বাসিন্দাদের কাছে বোমা-গুলি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। রাজনৈতিক মহলের মতে, এখানকার বাসিন্দারা ভেবেছিলেন সাংসদ তৃণমূলে ফিরলে ভাটপাড়ায় অশান্তি কমবে। শনিবারের দুটি ঘটনার পর বলা যায় কার্যক্ষেত্রে ভাটপাড়া যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে।

ইমারতী ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় দুই তৃণমূল নেতা দু'রকম বিবৃতি দেওয়ায় বিভ্রান্তিতে পড়েছে রাজনৈতিক মহল। অর্জুন সিং বলেছেন, 'এই লড়াইটা মনে হচ্ছে এদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারার লড়াই। এরা দুর্নীতি করেছে। নানা দুষ্কৃতীমূলক কাজে যুক্ত। সে আগে গ্রেফতারও হয়েছে।' জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের বক্তব্য, 'ওই ব্যবসায়ী তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। শান্তিতে সাংসারিক জীবন করছিল।' রাজনৈতিক মহলের মতে, দলাদলি যে যথেষ্টই রয়েছে তা দুই তৃণমূল নেতার ভিন্ন বিবৃতিতে স্পষ্ট।

আরও পড়ুন- ফের শুটআউট ভাটপাড়ায়, গুলি করে খুন যুবককে

অর্জুন সিং তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর শ্যামনগরে অন্নপূর্ণা কটন মিলের পাশে সভা করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, 'একজন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর গায়েও যেন হাত না পড়ে। কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন অভিষেক।' জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়কের দাবি, 'ইমারতী ব্যবসায়ী তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী।' যদিও সাংসদ তাঁকে দুষ্কৃতী বলেই অভিহিত করেছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, দলবদলের সঙ্গে সঙ্গে আর বিজেপি-তৃণমূলের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ভাটপাড়ায় গুলি-বোমার সংস্কৃতি বন্ধ হয়নি।

আরও পড়ুন- মাঝ রাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢুকল লোক, মমতার সুরক্ষায় বিরাট ফাঁক!

এর আগে ভাটপাড়ার অশান্তি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশকে কড়া হাতে অশান্তি মোকাবিলা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে অশান্তির বাতাবরণ থেকে মুক্তি মিলছে না ভাটপাড়ার। রাজ্য-রাজনীতিতে ভাটপাড়ার পরিচয় অশান্তির ক্ষেত্র হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে। সেই স্ট্যাম্প থেকে মুক্ত হতে পারল না ভাটপাড়া।

abhishek banerjee Arjun Singh bjp tmc Bhatpara Shootout
Advertisment