তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নবান্নে বৈঠকের কয়েক দিন পরই বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটে অংশ নেবে না বলে ঘোষণা করে আপ নেতৃত্ব। যদিও এর আগে আপের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঘোষণা করেছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়াই করেই এরাজ্যে সংসদীয় রাজনীতিতে অবস্থান মজবুত করবে ঝাড়ু পার্টি। এদিকে গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী নির্দল প্রার্থীকে দলে টেনে এরাজ্যে নয়া যাত্রা শুরু করল আপ।
রাজনৈতিক মহলের মতে, এ যেন বাংলার রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দলবদল করিয়ে প্রথম পঞ্চায়েত সদস্য হল আপের। নির্দলের রাজনৈতিক রং না থাকলেও একটা বিশেষ প্রতীকে এক পক্ষের হয়ে সে লড়াই করে। যদিও আপ নেতৃত্বে এটাকে দলবদল বলতে নারাজ। যেহেতু জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য নির্দল।
পঞ্চায়েত ভোট গণনার দিন জয়ী সার্টিফিকেট হাতে নিয়েই কালনার এক সিপিএম প্রার্থী তৃণমূলে যোগ দেন। তারপরের দিন কাটোয়ার ৩ সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্য ফের তৃণমূলের পতাকা ধরেন। এবার আপ। শুক্রবার কোচবিহারের দিনহাটার বড় আটিয়াবাড়ী -১ এর ৬/ ২৩৯ নং বুথের জয়ী নির্দল পঞ্চায়েত প্রার্থী নার্জিনা বিবি আম আদমী পার্টির ওই জেলার দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত অমিতাভ দেবনাথের হাত থেকে দলীয় পতাকা নিয়ে দলে যোগদান করলেন। একজন পঞ্চায়েত সদস্য যোগ দিলেন আপে, তা নিয়ে রীতিমতো চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
রাজ্যের আপের প্রধান মুখপাত্র অর্ণব মৈত্র বলেন, 'জয়ী প্রার্থী দলবদলু নন। তিনি নির্দল প্রার্থী হিসাবে জয়ী হয়েছেন। জেতার পর তিনি অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনীতি করতে চান। বিশেষ করে তাঁর সততা, আপ সরকারের শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্য পরিষেবা দেখে তিনি আপের প্রতি আকৃষ্ট হন। যার জন্য আম আদমি পার্টির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।' তবে এরাজ্যে সংসদীয় রাজনীতিতে দল কবে অংশ নেবে সেই সিদ্ধান্ত এখনও নেয়নি আপ।
দলবদল এখন রাজনীতিতে দস্তুর। এরাজ্য এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। যদিও আপে যোগ দিলেন এক নির্দল জয়ী পঞ্চায়েত প্রার্থী। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের সদস্য না হলেও সংসদীয় রাজনীতিতে লড়াই করেছেন ওই প্রার্থী। কার্যত তিনিও একপক্ষের প্রার্থী ছিলেন। মোদ্দা কথা নিজেদের ঝাড়ু প্রতীকে নয়, অন্য প্রতীকে জয়ী প্রার্থীকে দলে নিয়ে রাজ্যে সংসদীয় রাজনীতি শুরু করল আপ। এতে অবশ্য কেজরিওয়ালের নীতি-আদর্শের প্রতি টান দেখছে আপ নেতৃত্ব।