জামিন মেলেনি। তাই সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন গোরুপাচার মামলায় ধৃত বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। আর ঠিক এমনই সময়ে অনুব্রতর জামিন ইস্যুতে হুমকি চিঠি পেয়েছেন আসানসোলের সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। বিচারকের দাবি, চিঠিতে প্রেরকের নাম লেখা রয়েছে বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশি চিঠিতে নাকি এ-ও জানানো হয়েছে যে, কর্মসূত্রে তিনি বর্ধমানের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের হেড ক্লার্ক ও তৃণমূলের জেলা কর্মচারী সংগঠনের সদস্য। চিঠিতে বাপ্পার নামে সিলমোহরও ব্যবহার করা হয়েছে।
ওই চিঠিতে বিচারককে হুমকি দিয়ে লেখা হয়েছে, 'গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে জামিন দিন। তা না-হলে আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে মাদক মামলায় ফাঁসানো হবে।' অনুব্রতর জামিন চেয়ে খোদ বিচারকের কাছে এমন হুমকি চিঠি পাঠানোর বিষয়টি কার্যত নজিরবিহীন বলে মনে করছে আইনজীবী ও রাজনৈতিক মহল।
আর, তাতেই জেগেছে প্রশ্ন, কে এই বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়? কেনই বা তিনি সিবিআই আদালতের বিচারককে এমন হুমকি চিঠি পাঠালেন? তা জানার জন্য মঙ্গলবার দুপুর থেকে বর্ধমান আদালতে খোঁজ চালিয়ে অবশেষে দেখা মিলল বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের। অনুব্রতর জামিনের দাবি করে আপনি সিবিআই আদালতের বিচারককে হুমকি চিঠি কেন পাঠিয়েছেন? সাংবাদিকদের এই প্রশ্ন শুনে কার্যত বিস্মিত হয়ে যান বর্ধমান আদালতের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের হেড ক্লার্ক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট বলেন, 'এমন কোনও চিঠি আমি লিখিনি। চিঠির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আপনাদের কাছ থেকেই আমি প্রথম এই সব শুনছি।'
আরও পড়ুন- কেষ্টর জামিন না হলেই বিচারককে সপরিবার ‘মাদক মামলা’, হুমকি চিঠিতে হুলস্থূল
চিঠিতে আপনার নামাঙ্কিত সিলমোহর ব্যবহার হয়েছে, সেটা কীভাবে হল? এর উত্তবে বাপ্পা দাবি করেন, তাঁকে ফাঁসানোর জন্য কেউ তাঁর নাম করে চিঠি লিখেছে বিচারককে। তাঁর সিলমোহর নকল করে ও সই জাল করে কেউ এইসব ঘটনা ঘটিয়েছে বলেও বাপ্পা অভিযোগ জানান। পাশাপাশি তিনি এ-ও দাবি করেন, তৃণমূল বা কোনও রাজনৈতিক দল অথবা সংগঠনের সঙ্গেও তিনি যুক্ত নন। নিজেকে সামান্য একজন সরকারি কর্মচারী বলেই দাবি করেন বাপ্পা।
এদিকে বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় এমনটা জাননোর পর স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে সিবিআই আদালতের বিচারককে এমন হুমকি চিঠি পাঠালোটা কে? এই প্রসঙ্গে বর্ধমান আদালতের আইনজীবীদের বক্তব্য, একজন বিচারককে এমন হুমকি চিঠি পাঠানো কার্যত
নজিরহীন ঘটনা। প্রকৃত কে এই চিঠি লিখেছেন, তা সিবিআই তদন্তে নিশ্চয়ই প্রকাশ্যে আসবে।