সন্তান জন্মালে তাঁকে অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা আগেই সেরে রেখেছিলেন প্রসূতি। সেই মতো নিজের নাম ও পরিচয় গোপন রেখে অন্য মহিলার নামে প্রসূতি ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। তবে এত পরিকল্পনা এঁটেও প্রসূতি কার্যসিদ্ধিতে ব্যর্থ হলেন। অন্যের হাতে সদ্যোজাতকে হস্তান্তরের আগেই প্রসূতি মায়ের এই ছক বানচাল করে দেন হাসপাতালেরই নার্সরাই।
পূর্ব বর্ধমানের কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এই ঘটনা এখন রীতিমতো চর্চায় উটে এসেছে। কালনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন হাসপাতালের সহকারি সুপার। পুলিশ অভিযোগের তদন্তও শুরু করেছে। পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কথায় জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত প্রসূতির বাড়ি মেমারি থানা এলাকায়। তিনি নিজের নাম ও পরিচয় গোপন রেখে সুমিতা যাদব নাম নিয়ে শনিবার কালনা হাসপাতালে ভর্তি হন।
শনিবার দুপুরে প্রসূতি একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। তার পরেই হাসপাতালের নার্সরা প্রসূতির কাছে তাঁর স্বামীর নাম জানতে চান। তখন প্রসূতি হাসপাতালে রেজিষ্টারে উল্লেখ থাকা স্বামীর নাম না বলে ভুল নাম বলেন। বিষয়টিতে সন্দেহ হয় নার্সদের। তারপরেই নার্সরা গোটা বিষয়টি হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান ।
নার্সদের কাছ থেকে এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পেয়েই তড়িঘড়ি নড়েচড়ে বসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উপর্যুপরি জিজ্ঞাসাবাদে শেষমেশ নিজের আসল নাম ও পরিচয় জানান ওই প্রসূতি। কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন, ওই প্রসূতির আসল নাম মৌমিতা পূজার।
আরও পড়ুন- দিনে ক’বার ভোগ হয় জগন্নাথদেবের? কী কী পদ থাকে ভোগে?
তিনি মেমারি থানা এলাকার বাসিন্দা। শিশু সন্তানটি হস্তান্তরের ছক ফাঁস হয়ে গিয়েছে বুঝতে পেরে প্রসূতি কর্তৃপক্ষকে জানান, তাঁর তিন সন্তান রয়েছে। সেই কারণে এবার জন্ম দেওয়া সন্তানকে তিনি তাঁর পরিচিত সাবিত্রী যাদবের বউমাকে দিয়ে দেবেন বলে ঠিক করেছিলেন।
তাই তিনি হাসপাতালের খাতায় নিজের আসল নাম গোপন করে সাবিত্রী যাদবের পুত্রবধূর নাম লিখিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। আইনমাফিক ওই মহিলাই যাতে তাঁর সন্তানের মা হিসেবে বৈধ পরিচয় পান তাই এই পরিকল্পনা নিয়েছিলেন বলে প্রসূতি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান। এর পরেই কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সহকারি সুপার গৌতম বিশ্বার ঘটনা সবিস্তার উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ জানান।
আরও পড়ুন- সামান্য কমলেও রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনকই, মৃত ৩
এদিকে সাবিত্রী যাদব যদিও এদিন বলেন, ''শিশু সন্তান কেনা বা বিক্রির কোনও ব্যাপার নেই। আমার বউমার কোনও সন্তান নেই। তাই মৌমিতা তাঁর সদ্যোজাত সন্তানকে আমাদের দেবে বলে জানিয়েছিলেন। তাই আমার বউমার নাম নিয়ে মৌমিতা হাসপাতালে ভর্ত হয়েছিলেন।''
আরও পড়ুন- কঠিন রোগেও দৃপ্ত ঐন্দ্রিলার কণ্ঠের যাদু, প্রশংসায় পঞ্চমুখ শ্রোতারা
পুলিশ অবশ্য বিষয়টিকে একেবারেই হালকাভাবে নিতে নারাজ। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এক্ষেত্রে টাকার বিনিময়ে সদ্যোজাতকে বিক্রির ছক কষা হয়েছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।