স্থানীয় বাসিন্দাদের চরম আতঙ্কের মধ্যে ফেলে দুর্গাপুরের ফুলঝোড় উপসংশোধনাগার থেকে পালাল তিন বন্দি। রবিবার দুপুর প্রায় তিনটে নাগাদ সংশোধনাগারের পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায় ওই তিন বিচারাধীন বন্দি। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর, বিকেল চারটে নাগাদ ঘটনার কথা জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় সংশোধনাগারে।
ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ডিআইজি কারা-সহ কারা দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। ছুটে আসেন পুলিশ আধিকারিকরাও। পলাতক তিন বন্দির খোঁজে তখন থেকেই চলছে তল্লাশি। রেল স্টেশন থেকে আশপাশের জেলাগুলোও পুলিশকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। নজর রাখা হয়েছে জলপথেও। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত পলাতক বন্দিদের কোনও হদিশ মেলেনি।
গত সাত বছর আগে এভাবেই একবার তিন বিচারাধীন বন্দি এই ফুলঝোড় উপসংশোধনাগারের গেটের রক্ষীদের মাদক মেশানো খাবার খাইয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। এবারের ঘটনার সঙ্গে সাত বছর আগের সেই ভয়াবহ ঘটনার কথা টেনে আনছেন স্থানীয় পুলিশকর্তাদের অনেকেই।
আরও পড়ুন- SSKM নয়, পার্থর চিকিৎসা হবে ভুবনেশ্বরের AIIMS-এ, সাফ জানাল হাইকোর্ট
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার যে বন্দিরা পালিয়েছে, তাদের মধ্যে একজনের ভুবন নিয়োগী। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার রামনগরে। অন্ডাল থানায় ডাকাতির মামলা আছে ভুবনের বিরুদ্ধে। পলাতক দ্বিতীয় জনের নাম মহম্মদ শাহাবুদ্দিন। বাড়ি বর্ধমানেরই জামুড়িয়ার শ্রীপুর মোড়ে। শাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে কুলটি থানা-সহ দেওঘরের মধুপুরে রেল পুলিশের খাতায় ডাকাতির মামলা আছে। পলাতক তৃতীয় জনের নাম নেপাল মৃধা। নেপালের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া এলাকায়। পাণ্ডবেশ্বর থানায় নেপালের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রয়েছে।
তিন জনই দাগী দুষ্কৃতী। তাদের সঙ্গে ভিনরাজ্যের যোগাযোগ থাকায়, ঝাড়খণ্ড পুলিশকেও ইতিমধ্যে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় কোনও কারারক্ষীর গাফিলতি রয়েছে কি না, তা নিয়েও তদন্ত চালাচ্ছেন কারা দফতরের কর্তারা। ঘটনার পর থেকেই রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কারণ, এই দুষ্কৃতীরা সাধারণ কোনও অপরাধী নয়। পাশাপাশি, তাদের গ্যাংও রয়েছে। সেকথা মাথায় রেখে ঝাড়খণ্ডের পুলিশকেও পলাতক দুষ্কৃতীদের ছবি পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে জেলার প্রতিটি থানা এবং আশপাশের জেলার পুলিশ আধিকারিকদেরও পলাতক বন্দিদের ছবি পাঠিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরা।