PM Modi Bengal Visit: আরামবাগ থেকেই বাংলায় আসন্ন লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুঝিয়ে দিলেন এ রাজ্যে লড়াইয়ে বিজেপি এবার হাতিয়ার করছে, তৃণমূল তথা মমতা সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির ভয়ঙ্কর সব অভিযোগকে। শুক্রবার তারকেশ্বরের মহাদেবের নামে জয়ধ্বনি দিয়ে ভাষণ শুরু করেন মোদী। বাংলায় সম্বোধন করেন রাজ্যবাসীকে। শুরুতেই বলেন, 'মাতৃশক্তিকে শক্তি জোগায় যে বঙ্গ, তাকে প্রণাম।' এরপরই হুগলীর সন্তান রাজা রামমোহন রায়ের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ' যা হচ্ছে, তা দেখে রামমোহন রায়ের আত্মা কাঁদছে। যাঁর জন্ম হয়েছিল এই খানাকুলে।' এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মোদী। তৃণমূলকে নিশানা করে তুলে ধরেন শিক্ষক নিয়োগ, পুর নিয়োগ দুর্নীতি, রেশন কেলেঙ্কারি, গরু-কয়লা পাচারের মত সব দুর্নীতি প্রসঙ্গ। সভার মাঝে ফের সন্দেশখালির 'বর্বরোচিত' ঘটনার কথা বলে সভায় হাজির জনতার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন, ' সন্দেশখালিতে যা হয়েছে, তার বদলা নেবেন তো?'
একনজরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য-
- 'বাংলার অবস্থা আজ গোটা দেশ দেখছে। মা, মাটি মানুষ— এই ঢোল যে পেটায়, সেই তৃণমূল সন্দেশখালির বোনদের সঙ্গে যা করেছে, তা দেখে দেশ দুঃখিত। যা হচ্ছে সন্দেশখালিত, তা দেখে রামমোহন রায়ের আত্মা কাঁদছে। যাঁর জন্ম হয়েছিল এই খানাকুলে। তৃণমূল নেতা সন্দেশখালিতে দুঃসাহসের সব সীমা পার করেছে। ওখানকার মহিলারা মমতা দিদির কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। বদলে অভিযুক্তদেরই আড়াল করলেন তিনি। বিজেপির নেতারা রাতদিন মা-বোনদের সম্মানের জন্য লড়াই করেছেন। লাঠির আঘাত সয়েছেন।'
- 'শেখ শাহজাহানকে পুলিশ গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়েছে। এটাই সময়। মহিলারা মুখ খুলুন, ঝাঁটা ধরুন, তৃণমূলকে উৎখাত করে ফেলে দিন। লজ্জা লাগে দেখে, শেখ শাহজাহান বুক ফুলিয়ে হাঁটতে হাঁটতে যাচ্ছে। যেন পুলিশ শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করেনি, পুলিশকে শেখ শাহজাহান অদৃশ্য দড়ি দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে যাচ্ছে।'
- 'এই তৃণমূলকে কি ক্ষমা করবেন? সব চোটের জবাব ভোটে দিতে হবে। বাংলার লোক দিদিকে বলছে, কিছু লোকের ভোট সন্দেশখালির থেকেও আপনার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।'
- 'পটনা, বেঙ্গালুরু, আর কোথায় কোথায় এঁরা এক সঙ্গে বসে বৈঠক করেন। অথচ কংগ্রেস এখানকার মুখ্যমন্ত্রীর থেকে জবাব চাওয়ার সাহস করেননি। সন্দেশখালির এই বোনদের মতামত এক বারও দেখা হয়নি। কংগ্রেস যা বলেছে, শুনলে চমকে যাবেন। কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি বলেছেন, বাংলায় এ সব চলতেই থাকে।'
- 'শিক্ষক নিয়োগ থেকে পুরসভা নিয়োগ, গরু-কয়লা পাচার- সব জায়গাতেই দুর্নীতি করেছে তৃণমূল। এমনকী গরিবদের রেশনে দুর্নীতি, সীমা দিয়ে পশুপাচারেও তৃণমূল জড়িত।'
- 'তৃণমূল বাংলায় দুর্নীতি আর অপরাধের নতুন মডেল তৈরি করেছে। অপরাধীদের থেকে তৃণমূল নেতারা প্রচুর টাকা পান। সে কারণে তৃণমূলের মন্ত্রীদের ঘর থেকে নোটের পাহাড় বার হচ্ছে। এর আগে এত বড় নোটের পাহাড় দেখেছেন? সিনেমাতেও দেখা যায় না।'
- 'আমরা (বিজেপি) এসব দুর্নীতি বন্ধ করবে। এ জন্য মোদীকে তৃণমূল শত্রু মনে করে। মুখ্যমন্ত্রী দুর্নীতিবাজদের বাঁচাতে ধরনায় বসে যান। কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্ত আটকাতে চায়। মোদী এগুলো সমর্থন করে না বলেই মোদীকে তৃণমূল এক নম্বর শত্রু বলে মনে করে তৃণমূল। এটা কি আমি হতে দিতে পারি?'
- 'ঝরিয়া আর রানিগঞ্জে ৬ বছর আগে কয়লা প্রকল্প শুরু করেছিলাম। বন্ধ আছে। ১৮০০০ কোটির প্রকল্পও ৪ বছর ধরে আটকে আছে। রাজ্য সরকারের সহযোগিতা না পাওয়ায় রেল প্রকল্পের কাজ আটকে আছে। মানুষের ঘরও তৈরি হতে দিচ্ছে না।'
- 'তিন কোটি লাখপতি দিদি তৈরির সঙ্কল্প নিয়েছি। পশ্চিমবঙ্গ বিকশিত হলে ভারতও হবে। সে কারণে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে সকল আসনে কমল ফোটার প্রয়োজন। এই বার ৪০০ পার।'
- '৫০০ বছর পর শ্রীরাম নিজের মন্দিরে স্থান পেয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে রামলালাকে স্বাগত জানানো হয়েছে, বাংলার মানুষের শ্রীরামের প্রতি যে আস্থা রয়েছে, তা গোটা দেশকে অনুপ্রেরণা দেয়।'