এসএসসি দুর্নীতি নিয়োগ মামলায় দলের মহাসচিব ও রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কার্যত দল ও মন্ত্রিত্ব থেকে ছেঁটে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক মুখুপাত্রের বক্তব্যে তা একেবারে স্পষ্ট বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। গতকাল, পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে আর ২৭.৯০ কোটি টাকি, ৬ কেজি সোনা ও বস্তা বস্তা রুপোর কয়েন উদ্ধার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, তারপরই ইডির জেরায় অর্পিতা জানিয়ে দিয়েছেন ওই টাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি কিছু জানেন না। রাজনৈতিক মহলের মতে, এরপরই টনক নড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের। প্রথমে দূরত্ব এবার আরও বড় পদক্ষেপ, মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেসের চার শীর্ষ নেতা সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দিয়েছিলেন দোষী প্রমানিত হলে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়কে দলের পদ ও রাজ্যের মন্ত্রীত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়সহ তৃণমূল কংগ্রেসের তাবড় নেতৃত্ব মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে সরব হয়। তাঁদের বক্তব্য, 'ইডি ও সিবিআই বিজেপির হয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করে থাকে। মোদ্দা কথা দোষী প্রমান না হওয়া পর্যন্ত দলের মহাসচিবের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বও জানিয়ে দিয়েছে।'
আরও পড়ুন- মন্ত্রিত্ব-দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হোক পার্থকে, বিস্ফোরক কুণাল ঘোষ
শেষমেশ বুধবার থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসে সুর বদলাতে থাকে। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় মিডিয়ার সামনে বলার সুযোগ থাকতেও তিনি বলছেন না আমি নির্দোষ। অথচ আমি সারদা কান্ডে গ্রেফতার হওয়ার সময় পুলিশ বাধা দিলেও আমি বারে বারে বলেছি আমি নির্দোষ। চাপটা এসে পড়ছে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের ওপর। সমস্ত পদ কেড়ে এক্সপেল করা উচিত।' বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের সুর আরও বদলাতে থাকে। একযোগে মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, দেবাংশু ভট্টাটার্যরা দাবি করতে থাকেন দল ও মন্ত্রিত্ব থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে দিতে হবে। এব তাঁরা এই দাবি সাধারণ কর্মী হিসাবে দলের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
রাজনৈতিক মহলের মতে, দলের অভ্যন্তরে এই দাবি না জানিয়ে একেবারে প্রকাশ্যে দলবদ্ধ দাবি করার মধ্যে বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে। দলের পদ ও মন্ত্রিত্ব থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়ার পরিবশে তৈরি চেষ্টা চলছে। আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকও রয়েছে। সেক্ষেত্রে সকাল থেকে দলের মুখপাত্রদের দাবি অত্যন্ত তাতপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অভিজ্ঞ মহলের মতে, দূরত্ব তৈরি থেকে এবার দল পার্থকে থেকে ঝেড়ে ফেলার সময় এসে গিয়েছে।