Advertisment

অনুব্রতকে ঝেড়ে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু! ক্ষমতা খর্ব হতেই নয়া জেলা সভাপতির জল্পনা

বর্ধমানের তিন বিধানসভা কেন্দ্রে আর কোনও প্রভাব থাকছে না বীরভূমের প্রতাপশালী জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের।

author-image
Joyprakash Das
New Update
Tmc has started the process of removing Anubrata Mandal from the party

কেষ্টকে ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু জোড়াফুলে?

এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখন দল বা সরকারের ক্ষেত্রে ইতিহাস। ইডির হাতে গ্রেফতারের এক সপ্তাহের মধ্যে দু'জায়গা থেকেই তাঁকে ছেঁটে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিকে গরু পাচার কাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডলকেও ঝেড়ে ফেলার পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ধমানের তিন বিধানসভা কেন্দ্রে আর কোনও প্রভাব থাকছে না বীরভূমের প্রতাপশালী জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের। এবার থেকে সংশ্লিষ্ট বিধায়করা সেখানে দায়িত্ব সামলাবেন। জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মতো সেখানে কাজ করবেন।

Advertisment

তৃণমূল কংগ্রেসে যখন পর্যবেক্ষক প্রথা তুলে দেওয়া হয় তখনও পূর্ব বর্ধমানের তিন বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত। তাঁর ঈশারাই সেখানে শেষ কথা। এমনকী পুর ও পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তিনিই সমস্ত সিদ্ধান্ত নিতেন। অবশেষে বর্ধমানের আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রামে কোনও ক্ষমতাই থাকছে না অনুব্রতর হাতে। জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ও তিন বিধায়ককে তা জানিয়ে দিয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

বৃহস্পতিবার, ক্যামাক স্ট্রিটে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির সঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ও জেলার বিধায়কদের বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়ে দেয়, আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রামের স্থানীয় বিধায়করা সংগঠনের দায়িত্বে থাকবেন। জেলা সভাপতির সহযোগিতায় ও রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে তাঁরা কাজ করবেন। অর্থাৎ ওই তিন বিধানসভা কেন্দ্রে আর অনুব্রতর কোনও ক্ষমতা থাকছে না। সাংগঠনিক ক্ষেত্রে তাঁর ক্ষমতা খর্ব করা হল।

তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথম দিকে বর্ধমান জেলা নেতৃত্বই ওই সব এলাকার সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকত। কোনও একটা সময় থেকে ওই তিন বিধানসভা এলাকা অনুব্রতর হাতে চলে যায়। তা নিয়ে দলের অন্দরমহলে জেলা নেতৃত্বের চাপা ক্ষোভও ছিল। বোলপুর লোকসভার অন্তর্গত বর্ধমানের ওই তিন বিধানসভা কেন্দ্র। অন্য জেলাতেও এমন অবস্থা রয়েছে। তবে বর্ধমানেই ছিল অনুব্রতর বাড়তি ক্ষমতা। দলের একাংশের বক্তব্য, বীরভূমের জেলা সভাপতি হলেও বর্ধমানের ওই তিন কেন্দ্র ছাড়া অন্য ক্ষেত্রেও অনুব্রতর ঈশারায় দলীয় সিদ্ধান্ত নিতে হত।

আরও পড়ুন- ‘স্যর, দয়া করে মিডিয়া ট্রায়াল করবেন না’, বিচারপতি গাঙ্গুলিকেই কি বার্তা মমতার?

বুধবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত অনুব্রত মণ্ডলের ১৪ দিনের জামিন খারিজ করে দিয়েছে। এখন তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের স্পষ্ট বার্তা, দল কোনও ব্যক্তির ঈশারায় চলবে না। দল চলবে দলীয় অনুশাসনের ওপর। এদিকে গরুপাচারকান্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর প্রকাশ্যে কেষ্টর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্থর মতো অনুব্রতর পর্বও কী শেষ হতে চলেছে তৃণমূলে? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে দলের অন্দরমহলে।

আরও পড়ুন- খোঁজ নেই মানিকের, বন্ধ ফোন, লুক আউট নোটিস জারি সিবিআইয়ের

তবে পূর্ব বর্ধমানের দায়িত্ব থেকে অনুব্রতকে সরিয়ে দেওয়ার পর এবার প্রশ্ন উঠেছে তাহলে বীরভূম জেলা সভাপতির ক্ষেত্রেও কী নতুন সিদ্ধান্ত নিতে পারে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব? দলের একাংশ মনে করছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দল মহাসচিব-সহ পাঁচ পদ থেকে সরিয়ে শুধু দেয়নি, সাসপেন্ড করেছে। অনুব্রতর ক্ষেত্রে তিনি যদি জেলায় থাকতে না পারেন সেক্ষেত্রে সংগঠন তো আর বসে থাকতে পারে না।

তার ওপর সামনের বছরই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তারপরের বছরই লোকসভা। তাই নতুন জেলা সভাপতি নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। জানা গিয়েছে, এদিনও তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব ওই বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছে, বিরোধীরা যেন পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী দিতে পারেন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে কোনও বাধা দেওয়া যাবে না।

abhishek banerjee cbi Cow Smuggling anubrata mondal tmc Mamata Banerjee
Advertisment