এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অধীনে ছিল রাজ্যের তিনটে দফতর, ফিরহাদ হাকিম কলকাতার মেয়রের সঙ্গে রয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ দুই দফতরের দায়িত্বে, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য একাধিক দফতরের মন্ত্রী। পার্থ চট্টোপাধ্যায় সংগঠনের মহাসচিব ছাড়াও দলের চারটি পদে ছিলেন। ফিরহাদ, চন্দ্রিমাও সংগঠনের দায়িত্বে রয়েছেন। দলের অন্দরে খবর, তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় 'এক ব্যক্তি এক পদ' নীতিতে চলবেন বলে অনড় রয়েছেন। সংগঠন মজবুত করতে একথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন তিনি। এবার মন্ত্রীসভায় শুধু তাঁর ঘনিষ্ঠরা জায়গা পেয়েছেন তা নয়, একইসঙ্গে 'এক ব্যক্তি এক পদ' নীতি কার্যকর করতে একধাপ এগোলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
সংগঠনের নিয়মানুযায়ী 'এক ব্যক্তি এক পদ' নীতির ব্যাপারে দলের সর্বভারতীয় সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর মতানুযায়ী কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে ছাড় রয়েছে। এই নিয়মেই একাধিক পদে রয়েছেন কেউ কেউ। কলকাতায় মেয়রপদে ফিরহাদ হাকিমের নাম ঘোষণার দিন হাজির ছিলেন না দলের সাধারাণ সম্পাদক অভিষেক। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা চলেছে। তবে এবার যাঁরা মন্ত্রী হয়েছেন কেউই সেভাবে সংগঠনের শীর্ষ পদে নেই। বরং জেলা সভাপতি থেকে সরে এসে দুজন মন্ত্রী হয়েছে।
আরও পড়ুন- মন্ত্রিসভায় গুরুত্ব বাড়ল অরূপ-শশী-শোভনদেবের, ডানা ছাঁটা ফিরহাদ-মলয়, বাদ ৪
উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি পার্থ ভৌমিক, হুগলি জেলা সভাপতি স্নেহাশিষ চক্রবর্তীকে সম্প্রতি তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দেয় দল। এই দুজনকেই পূর্ণমন্ত্রী করেছে তৃণমূল। এঁরা দুজনই আবার অভিষেকের ঘনিষ্ঠ বলেই সূত্রের খবর। রাজনৈতিক মহলের মতে, এক্ষেত্রে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বার্তা দিলেন তৃণমূল 'এক ব্যক্তি এক পদ' নীতিতেই আগামীতে চলবে। দীর্ঘবছর ধরে জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন পার্থ ভৌমিক। তাঁর ঘনিষ্ঠ বৃত্তের হলেও কোনও ছাড় নেই সেই বার্তাও দিলেন তৃণমূলের 'যুবরাজ', মত অভিজ্ঞমহলের।
বুধবার বাকি তিন পূর্ণ মন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন উদয়ন গুহ, প্রদীপ মজুমদার, বাবুল সুপ্রিয়। বাবুল সুপ্রিয় তো আসানসোলের সাংসদ পদ ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তখনই জল্পনা ছিল রাজ্যের মন্ত্রী হতে পারেন বাবুল। এছাড়া প্রদীপ মজুমদার সাংগঠনিক ক্ষেত্রে কখনও দায়িত্বে থাকেননি। উদয়ন গুহ দিনহাটার সর্বেসর্বা হলেও জেলার সাংগঠনিক দায়িত্বে তিনি নেই। আর দুই নতুন মন্ত্রীও সেভাবে দল শীর্ষ কোনও পদে নেই। এদিন যে পাঁচজন পূর্ণমন্ত্রী এদিন শপথ নিয়েছেন তাঁদের কেউই দলে সাংগঠনিক বড় কোনও দায়িত্বে নেই। এদিনের নয়া মন্ত্রীসভায় অভিষেকের 'এক ব্যক্তি এক পদ' নীতির স্পষ্ট নিদর্শন দেখতে পাচ্ছেন রাজনৈতিক মহল।