নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূলের যুবনেতা হুগলির কুন্তল ঘোষের ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে। চাকরির দেওয়ার নামে কুন্তল ১৯ কোটি টাকার বেশি তুলেছিলেন বলে অভিযোগ। শুক্রবার থেকে কুন্তলের বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছিল ইডি গোয়েন্দারা। শেষ পর্যন্ত শনিবার গ্রেফতার করা হয় রাজ্য যুব তৃণমূলের সম্পাদক কুন্তল ঘোষকে।
গ্রেফতার হওয়ার পর বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে আনেন রাজ্য যুব তৃণমূলের সম্পাদক কুন্তল ঘোষ। 'তাপস মণ্ডলকে ঘুষ দিইনি বলেই আমায় ফাঁসানো হযেছে।' ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরেই বিস্ফোরক মন্তব্য যুব তৃণমূলের এই নেতার। এদিন গ্রেফতারের পর মেডিক্যাল টেস্টের জন্য কুন্তলকে নিয়ে যাওয়া হয় বিধাননগর হাসপাতালে। এদিনই তাঁকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ। হেফাজতে চেয়ে আবেদন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের অফিসারদের।
শুক্রবার থেকে টানা প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে কুন্তল ঘোষের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি বাজেয়াপ্ত করেছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের অফিসাররা। তারপরেই যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদককে গ্রেফতার করে ইডি। তদন্তে অসহযোগিতার জেরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রের খবর। স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হুগলির এই যুব তৃণমল নেতার বিরদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ এনেছিলেন মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল। এদিন গ্রেফতার হওয়ার পর সেই তাপসের বিরুদ্ধেই মারাত্মক অভিযোগ এনেছেন তৃণমূল নেতা।
কুন্তল ঘোষ এদিন বলেন, 'আমি টাকা নিইনি। এটা তাপস মণ্ডলের ষড়যন্ত্র। তাপস মণ্ডলকে ঘুষ দিইনি বলে আমার এই হাল। তাপস মণ্ডল আমার কাছে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা চেয়েছিল।' এরই পাশাপাশি এদিন গোপাল দলপতি নামে আরও একজনের নাম প্রকাশ্যে এনেছেন কুন্তল ঘোষ। তবে কে সেই গোপাল দলপতি তা তিনি স্পষ্ট করেননি। কুন্তলের মুখ থেকে গোপাল দলপতির নাম শোনার পর তাঁর খোঁজেও তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি।
চাকরির নামে ১৯ কোটির বেশি টাকা তুলেছিলেন কুন্তল ঘোষ, এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছিলেন তাপস মণ্ডল। তারপর থেকেই কুন্তল ঘোষ ইডি-সিবিআইয়ের নজরে চলে আসেন। কুন্তলকে তিন দফায় কলকাতায় নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠায় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই। চলে টানা জিজ্ঞাসাবাদ। এরপরই শুক্রবারই কুন্তলের চিনার পার্কের বিলাসবহুল দুটি ফ্ল্যাটে হানা দেয় ইডি।
আরও পড়ুন- কেমন হবে পঞ্চায়েত ভোট? সাংসদ-বিধায়কের সামনেই খোলসা করলেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি
সেই দুটি ফ্ল্যাটে একটানা প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে চলে ম্যারাথন তল্লাশি। শুক্রবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি বাজেয়াপ্ত করেছেন ইডির অফিসাররা। শনিবার সকালেই কুন্তল ঘোষকে গ্রেফতার করে ইডি। গ্রেফতারের পর শনিবারই তাকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হবে। কুন্তলকে হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানাবে ইডি।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শুক্রবার হুগলির বলাগড়ের তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতেও তল্লাশি অভিযানে যায় ইডি। হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়ে মিলেছে একাধিক গুরূত্বপূর্ণ নথি।