Assembly By Election 2024: সদ্য লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়েই বিধানসভার উপনির্বাচনে লড়াইতে নেমে পড়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের দুই প্রার্থী। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যানী মূলত রায়গঞ্জ বিধানসভা এলাকাতেই ব্যাপক ভোটে পিছিয়ে ছিলেন। এই কেন্দ্র থেকেই ২০২১ সালে বিজেপির বিধায়ক হয়েছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। রানাঘাটের তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারীর পরিস্থিতিও একই। ২০২১ থেকে গল্পও এক। শুধু বনগাঁ লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী নিজেকে উপনির্বাচন থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। লোকসভার লিডের নিরিখে জোরদার লড়াইয়ের সম্ভাবনা মানিকতলা কেন্দ্রেও।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী রায়গঞ্জে পেয়েছেন ৪৬,৬৬৩টি ভোট। বিজেপি প্রার্থী কার্তিক চন্দ্র পাল এই বিধানসভা এলাকা থেকে ভোট পেয়েছেন ৯৩,৪০২টি। অর্থাৎ দ্বিগুণ ভোট পেয়েছে বিজেপি। ৪৬,৭৩৯টি ভোটের লিড পেয়েছে শুধু রায়গঞ্জ বিধানসভা এলাকা থেকে। এই প্রাপ্ত ভোটেই কৃষ্ণকে ধরাশায়ী করেছে কার্তিক। এবার সেই বিধানসভা থেকে উপনির্বাচনে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে নেমেছেন 'দলবদলু' তৃণমূলের ব্যবসায়ী প্রার্থী। বিগত ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল থেকে এসে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। পরে ফের তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। বিধানসভায় পদপ্রাপ্তিও ঘটে।
২০২১-এ বিজেপি পেয়েছিল ৪৯.৪৪ শতাংশ ভোট। তৃণমূল পেয়েছিল ৩৬.৫৮ শতাংশ ভোট। ব্যবধান ছিল ২০,৭৪৮টি ভোটের । কংগ্রেসের জুটেছিল ১৭,১৯৮টি ভোট। রায়গঞ্জে এবার কংগ্রেস প্রার্থী হচ্ছেন প্রাক্তন বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত। রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে কৃষ্ণ কল্যাণী আদৌ কোনও জাদু দেখাতে পারেন কিনা সেটাই এখন দেখার।
আরও পড়ুন- Indian Railway: ঘাবড়ে যাচ্ছেন? বাংলার অত্যন্ত জনপ্রিয় এই রেলস্টেশন আর ক’দিনেই এমন হতে চলেছে!
অন্যদিকে, রানাঘাট লোকসভার মধ্যে রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা এলাকা থেকে ব্যাপক লিড নিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার। এই বিধানসভায় সদ্য লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি পেয়েছিল ১২৩৫৬৮টি ভোট, তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমনি অধিকারী ভোট পেয়েছেন ৮৬৬৩২টি। এই বিধানসভা থেকে বিজেপি লিড পায় ৩৬,৯৩৬ ভোটে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে ব্যবধান ছিল ১৬,৫১৫। বিজেপি পেয়েছিল ৪৯.৩৪ শতাংশ ভোট। তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ৪২.৫১ শতাংশ ভোট। তখন এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী ছিলেন মুকুটমণি অধিকারী। পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। এবার উপনির্বাচনে ফের তৃণমূল তাঁকেই প্রার্থী করেছে।
মজার বিষয় রায়গঞ্জ ও রানাঘাটে ২০২১, ২০২৪ লোকসভা ও ২০২৪ বিধানসভা নির্বাচনের ঘটনাক্রম দলদবল থেকে প্রার্থী, আবার দলবদল, পরাজয়, ফের প্রার্থী একই ধারায় লেখা। এবার রানাঘাট দক্ষিণে বিজেপি প্রার্থী করেছে মনোজ কুমার বিশ্বাসকে। তবে দলবদল করা বনগাঁ লোকসভায় তৃণমূলের পরাজিত প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস এবার আর উপনির্বাচনে প্রার্থী হননি। রায়গঞ্জের কৃষ্ণ কল্যানী ও রাণাঘাটের মুকুটমনি অধিকারীর সঙ্গে এবার আর এক পথে হাঁটেননি বিশ্বজিৎ। তিনি এবার উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে রাজি হননি। বাগদায় বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস ২০২১-এ পেয়েছিলেন ৪৯.৪১ শতাংশ ভোট। ৪৪.৯৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এবার তৃণমূল প্রার্থী করেছে ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়ি থেকে।
আরও পড়ুন- Kanchanjunga Express accident: ‘এবার থেকে ট্রেনে চাপার আগে দু’বার ভাবব!’ এখনও আতঙ্কে আহত যাত্রীরা
বাগদায় মতুয়া ফ্যাক্টর মাথায় রেখে সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের ছোট মেয়ে মধূপর্ণা ঠাকুরকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। বারাসাত স্টেট ইউনিভার্সিটিতে এমএসসি পড়ছে মধূপর্ণা। উপনির্বাচনে এখানে বিজেপি প্রার্থী বিনয় কুমার বিশ্বাস। সদ্য লোকসভা নির্বাচনের এই বিধানসভায় এগিয়ে ছিল বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর। বিজেপি পেয়েছিল ১১২৭০৪টি ভোট, তৃণমূল ৯২০৯০।
মানিকতলার তৃণমূল বিধায়ক সাধন পান্ডের মৃত্যুর পরও মামলা চলার ফলে উপনির্বাচন সম্ভব হচ্ছিল না। মামলাকারী বিজেপি প্রার্থী কল্যান চৌবে তা তুলে নেওয়ায় ভোট ঘোষণা হয়। এবার এখানে তৃণমূল প্রার্থী করেছে প্রয়াত সাধন পান্ডের স্ত্রী সুপ্তি পান্ডেকে। বিজেপির গতবারের প্রার্থী কল্যান চৌবে এবারও লড়াইতে নেমেছেন। সাধন পান্ডে পেয়েছিলেন ৫০.৮২ শতাংশ ভোট। বিজেপি পেয়েছিল ৩৫.৬০ শতাংশ ভোট। তবে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী তৃণমূল থেকে আসা তাপস রায় বেশ লড়াই দিয়েছেন এই বিধানসভা এলাকায়। মানিকতলায় তৃণমূল পেয়েছে ৬৬৯৬৪টি ভোট। বিজেপি প্রার্থীর ঝুলিতে গিয়েছে ৬৩৩৮৯টি ভোট।