TMC: সাংগঠনিক রদবদল তৃণমূলে, নতুন জেলা সভাপতি ও কোর কমিটি ঘোষণা, জোর প্রস্তুতি ২০২৬-এর লক্ষ্যে। গত বছর ২১ জুলাই রদবদলের ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অবশেষে শুক্রবার হল এই রদবদল। অনেক ক্ষেত্রে পুরনোরাও থেকে গিয়েছেন।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে শুক্রবার রাজ্যের সাংগঠনিক স্তরে বড়সড় রদবদলের পথে হাঁটল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের পক্ষ থেকে প্রকাশিত নতুন তালিকায় রাজ্যের একাধিক জেলার জন্য ঘোষণা করা হয়েছে নতুন জেলা সভাপতি ও জেলা চেয়ারপার্সনদের নাম। পাশাপাশি, বেশ কিছু জেলায় পুরনো নেতৃত্বের উপরেই আস্থা রেখেছে দল। তবে কিছু জেলার ক্ষেত্রে এখনও চূড়ান্ত নাম ঘোষণা করা হয়নি। ২০২৬-র বিধানসভা ভোটের লক্ষ্যেই দলে ব্যাপক রদবদল এনেছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
এবারের রদবদলে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রদবদল আনা হয়েছে উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলায়। জেলা সভাপতি পদ থেকে সরানো হয়েছে সুদীপ বন্দোপাধ্যায়কে। পরিবর্তে গঠন করা হয়েছে ৯ সদস্যের কোর কমিটি। এই কমিটিতে রয়েছেন:
নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় (বিধায়ক)
অতীন ঘোষ
শশী পাঁজা
পরেশ পাল
সুপ্তি পাণ্ডে
স্বর্ণকমল সাহা
স্বপন সমাদ্দার
জীবন সাহা
বিবেক গুপ্ত
বীরভূম জেলাতেও ডানা ছাঁটা হল অনুব্রত মন্ডলের। এবার আলাদা জেলা সভাপতির নাম ঘোষণা না করে গঠন করা হয়েছে সাত সদস্যের কোর কমিটি। কমিটিতে রয়েছেন:
অনুব্রত মণ্ডল
অভিজিৎ সিনহা
আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
চন্দ্রনাথ সিনহা
বিকাশ রায়চৌধুরী
সুদীপ্ত ঘোষ
কাজল শেখ
এছাড়াও কোর কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে দুই সাংসদ—শতাব্দী রায় এবং অসিত মালকে। শুধু জেলা স্তরে নয়, রাজ্য কমিটিতেও আনা হয়েছে নতুন মুখ।
বাঁকুড়া, তমলুক, দার্জিলিং, মালদা, উত্তর দিনাজপুর:
বাঁকুড়ায় সভাপতি পদ থেকে সরানো হয়েছে সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীকে। নতুন সভাপতি হয়েছেন তারাশঙ্কর রায়।
তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পদেও এসেছে রদবদল, যদিও নতুন নেতৃত্বের নাম এখানেও আলোচনায়।
দার্জিলিং সমতলের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পাপিয়া ঘোষকে।
উত্তর দিনাজপুরে চেয়ারম্যান করা হয়েছে চোপড়ার বিধায়ক হামিদুর রহমানকে।
মালদা জেলা চেয়ারম্যান হয়েছেন নিহত তৃণমূল নেতা দুলাল সরকারের স্ত্রী চৈতালি সরকারকে।
মুর্শিদাবাদ-বহরমপুর জেলার চেয়ারম্যান পদে রফিকুল আলমকে সরিয়ে দিয়ে দায়িত্বে আনা হয়েছে বিধায়ক নিয়ামত শেখকে।
দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করা হয়েছে সাংসদ পার্থ ভৌমিককে।
বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান হয়েছেন সাংসদ মমতা ঠাকুর।
ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হয়েছেন অজিত মাইতি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই রদবদলের মূল উদ্দেশ্য ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে আরও সংগঠিত ও কার্যকর করে তোলা। যেসব জেলা বা পদে এখনও নাম ঘোষণা হয়নি, সেগুলির তালিকাও খুব শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
তৃণমূল কংগ্রেসের মতে, এই সাংগঠনিক রদবদলের মাধ্যমে দলীয় কাঠামো আরও সুসংহত ও শক্তিশালী হবে, যা আগামী নির্বাচনে বড় জয় ছিনিয়ে আনতে সাহায্য করবে।