দক্ষিণে দলের প্রতাপ সিংহ-সম। কিন্তু, ক্রমেই রাজ্যের উত্তরে এগোলে সংগঠনের নানা ত্রুটি বিচ্যূতি নজরে পড়ে। ১৯য়ের লোকসভায় উত্তরবঙ্গের আটটি আসনের একটিও পায়নি জোড়া-ফুল শিবির। তার বছর দুয়েকের মাথায় হয়েছে একুশের বিধানসভা নির্বাচন। প্রবল বিজেপি প্রচারের মাঝেও হু হু করে জিতেছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। তবে, উত্তরে আসন সংখ্যা তেমন জোটেনি।
উল্টে বঞ্চনার অভিযোগে বাংলা ভাগের পক্ষে দাবি করেছে বিজেপির উত্তরের সাংসদ, বিধায়করা। পৃথক উত্তরবঙ্গের সওয়াল করেছেন তাঁরা। রাজ্য রাজনীতিতে যা নিয়ে প্রবল শোরগোল। যদিও দলীয় সাংসদ, বিধায়কদের দাবিকে সরাসরি মান্যতা দেয়নি গেরুয়া দল।
এসবের মধ্যেই তৃণমূলের সংগঠনে নানা বদল হয়েছে। বারে বারে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের জেলাগুলিতে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কখনও প্রসানিক বৈঠকে বার্তা দিয়েছেন, আবার দলীয় কর্মীসভাতে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সভাগুলিতে ভিড়ও উপচে পড়েছিল।
সেকথা বিবেচনা করেই এবার ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ সমাবেশে উত্তরের জেলাগুলিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে জোড়া-ফুল বাহিনী। শুক্রবার কলকাতার মেট্রোপলিটানে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলের প্রস্তুতি বৈঠকে সেই সিদ্ধান্তই হয়েছে। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, 'সারা দেশ এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গ থেকে উপচে পড়া মানুষের উপস্থিতি বিগত বছরগুলিতে নজরে পড়েছে। এবার উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি থেকে যতবেশি কর্মী সম্ভব কলকাতায় নিয়ে আসায় জোর দেওয়া হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবাংলায় গত কয়েক মাসে যত জনসভা করেছেন তাতে ভিড় ছিল। ফলে উত্তরের জেলাগুলি থেকে এবার বেশি কর্মী আসবেন বলেই আশা।'
জাতীয়স্তরে বিরোধী জোট প্রক্রিয়ার অন্যতম কান্ডারি তৃণমূল সুপ্রিমো। তাই জোড়া-ফুলে মেগা ইভেন্ট ঘিরে নজর থাকবে দেশের। কোন কোন রাজনৈতিক দলকে এবার ধর্মতলার শহিদ মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হবে? যা ২৪য়ের বিরোধী জোট প্রক্রিয়ার সমীকরণের বড় ইঙ্গিত হয়ে উঠতে পারে। এপ্রসঙ্গে পার্থবাবু বলেছেন, 'শনিবার থেকেই বাংলাজুড়ে ২১ জুলায়ের প্রচার শুরু হবে। তবে কাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে তা বিবেচনাধীন।'